ওমর ফারুক ইমরান, উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি ::
কক্সবাজারের উখিয়ায় ৪ জুন অনুষ্ঠিত হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মন্ত্রী পরিষদ সচিব শফিউল আলমের নির্দেশে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) এর সহযোগীতায় ব্যাপক অনিয়ম, কারচুপি, জালভোট, কেন্দ্র দখল, গভীর রাতে ফলাফল উল্টো দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে মরিচ্যা বাজার ষ্টেশনে বিএনপির মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী এসএম শামশুল হক বাবুলের বিক্ষোভ ও বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রবিবার বিকাল ৩ টায় মরিচ্যা বাজার দক্ষিণ ষ্টেশনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে হলদিয়াপালং দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি দলিলুর রহমান এতে সভাপতিত্ব করেন। এ সময় বক্তারা বলেন, কেন্দ্র থেকে এজেন্টকে মারধর করে বের করে দেওয়া, জাল ভোট প্রদান, স্ব-স্ব কেন্দ্রে ফলাফল ঘোষনা না করে রাতে আধারে র্যাব পুলিশের সহযোগীতায় জোর পূর্বক ব্যালট বক্স উপজেলা কার্যালয়ে নিয়ে আসেন। পরে তাদের পছন্দনীয় ও সরকারের আশীর্বাদ পুষ্ট প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত করতে সরকার এ কারচুপির আশ্রয় নিয়েছে বলে বক্তাদের অভিযোগ। তারা অবিলম্বে হলদিয়াপালং ইউনিয়নের ভোট পুণঃ গ্রহণ অথবা বিজয়ী ধানের শীষ প্রার্থী শামশুল হক বাবুলকে জয়ী ঘোষনা দেওয়ার দাবী জানান। অন্যথায় ভোট জালিয়াতি ও ভোট ডাকাতির হোতা মন্ত্রী পরিষদ সচিবের ভাই নৌকা প্রতীক প্রার্থী মাষ্টার শাহ আলমকে ইউনিয়ন পরিষদে প্রবেশ করতে দেওয়া হবেনা বলে বৃহত্তর হলদিয়ার জনসাধারণ হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন। এমনকি জনগণকে সাথে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচী দিয়ে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষনা দেন। ধানের শীষ প্রতীকের এজেন্ট বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সচিব নিজের সহোদর জনবিচ্ছিন্ন একজন লোককে নীল নকশার নির্বাচনে কারচুপির মাধ্যমে বিজয় নিশ্চিত করেন। তা অত্যন্ত নিন্দনীয় দন্ডনীয় অপরাধ। এ সময় চেয়ারম্যান প্রার্থী শামশুল হক বাবুল উচ্চ স্বরে বিলাপ করে আল্লাহর দরবারে নির্বাচনে দায়িত্বরত সংম্লিষ্টদের উপর গজব নাজিল করার ফরিয়াদ জানান। উখিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সরওয়ার জাহান চৌধুরী কঠোর হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, অচিরেই শেখ হাসিনার পতন ঘন্টা বাজতে শুরু করেছে। আগামীতে তিনি আর রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসতে পারবেননা। নিজের লোকজনকে নির্লজ্জ ভাবে জয়ী করতে যে অনিয়ত কারচুপি ও ভোট ডাকাতির আশ্রয় নিয়ে ফলাফল উল্টে দিয়ে সরকার দলীয় প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করেছেন তাদেরকে আপনারা ছিরা চেয়ারম্যান হিসেবে আখ্যায়িত করবেন। তাছাড়া ৪ জুন ২০১৬ সালে ইউপি নির্বাচনে উখিয়ায় যেসব কর্মকর্তা প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং সহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কাজে যারা জড়িত ছিলেন বিএনপি ক্ষমতায় আসলে তাদেরকে এসবের মাশুল দিতে আগামীতে প্রস্তুত থাকতে বলেন। পরে এলাকার সকল ভোটার হাত উছিয়ে কুলাঙ্গার সচিবকে অবাঞ্চিত ঘোষনা করেন। এ সময় মঞ্চে উপবিষ্ট বক্তারা মন্ত্রী পরিষদের সচিবের নাম ধরে অনেকেই সচিবের গালে গালে জুতা মার তালে তালে শ্লোগান দিয়ে সমাবেশস্থল মুখরিত করে তুলে। হলদিয়াপালং ইউনিয়নে পুণরায় ভোট গ্রহণের আহবান জানানো হয়। না হলে বৃহত্তর আন্দোলন করা হবে বলে ঘোষনা দেন। উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন, হলদিয়া পালং ইউনিয়ন বিএনপির দক্ষিণ শাখার সভাপতি দলিলুর রহমান। প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব রাখেন, কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহাজাহান চৌধুরী। বক্তব রাখেন উখিয়া উপজেলার বিএনপির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান সরওয়ার জাহান চৌধুরী, ধানের শিষের এজেন্ট মোহাম্মদ ইউনুস, আমির মোহাম্মদ, হেলাল উদ্দিন, মনজুর আলম, এনামুল হক, চেয়ারম্যান প্রার্থী এস এম শামশুল আলম। বক্তারা আরো বলেন ৪ জুন রাত ১০টা পর্যন্ত ধানের শীষের প্রার্থী এস এম শামশুল হক বাবুল ৬৬০ ভোটের জয়লাভ করেন। গভির রাতে পাতা পাড়ি কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার ও রুমখাঁপালং আলিম মাদ্রাসার সাধারণ প্রভাষক জাফরুল ইসলাম ও উখিয়া পল্লী বিদ্যুৎ এর এজিএম এমদাদুল হককে জোর করে উখিয়ার নির্বাহি কর্মকর্তা মাইন উদ্দিন বেড রুমে নিয়ে গিয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তারা রেজালসীট পরিবর্তন করে নৌকার প্রার্থী শাহ আলমকে বিজয়ী ঘোষনা করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন মাহবুবুল আলম।
পাঠকের মতামত: