ছোটন কান্তি নাথ, নিজস্ব প্রতিবেদক ::
কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলমের ব্যক্তিগত উদ্যোগে ৮ হাজার বর্গফুটে স্থাপিত ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ কর্ণার’ উদ্বোধন শেষে আজ রোববার বিকেলে চকরিয়া সরকারী কলেজ মাঠে বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি। তিনি বলেছেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাহেবরা কিছু ইতিহাস নিয়ে কথা বলেছেন। ওনারা বলছেন যে, ৭ই মার্চের ভাষণ অস্বীকার করার উপায় নেই। অনেকে বলেছেন যে এতদিন পরে তাদের বোধদয় হয়েছে। কিন্তু এই মির্জা ফখরুল সাহেবকে জিজ্ঞেস করি, আপনাদের এটা বোধদয় না-কী আবারো কূটচালের কথা বলছেন।
হানিফ বলেন, পঁচাত্তর সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর আপনার দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রক্ষমতায় এসেছিলেন। ওনি রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেই এই বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ করেছিলেন। যে ভাষণ ছিল স্বাধীনতার ডাক, স্বাধীনতার ঘোষণা সেটাকে নিষিদ্ধ করেছিলেন। এমনকি ঢাকা, কুষ্টিয়া, রংপুর, দিনাজপুরসহ সারাদেশে ৭ই মার্চের ভাষণ বাজাতে দেওয়া হয় নাই। মাইক ভেঙে দিয়েছে, হামলা করেছে। মানুষের জন্য রান্না করা খাবার ফেলে দিয়েছে টেনে। এতটাই প্রতিহিংসা পরায়ণ ছিল বিএনপি এবং খুনি জিয়া ও তার দোসররা। আজকে সেই খুনি জিয়ার দোসর, তার অনুসারী মির্জা ফখরুল সাহেব আজকে বলছেন ৭ই মার্চের ভাষণ অস্বীকার করার উপায় নেই।
মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, আপনারা অস্বীকার করা না করা এতে জাতির কিছুই যায় আসে না। কারণ এই ভাষণ ইতিমধ্যেই জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ লাইব্রেরীতে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাষণগুলোর মধ্যে একটি ভাষণ হিসেবে রূপান্তর হয়েছে, দলিল হয়ে রয়েছে জাতিসংঘে। সেই জায়গায় আপনি ৭ই মার্চের ভাষণ স্বীকার করেন কী না করেন এতে কিছুই যায় আসে না।
মাহবুবুল আলম হানিফ আজ রোববার বিকেলে চকরিয়া সরকারী কলেজ মাঠে চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন বিএনপির উদ্দেশ্যে। জনসভায় সভাপতিত্ব করেন কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলম।
চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী ও প্রচার সম্পাদক আবু মুছার যৌথ সঞ্চালনায় জনসভায় আরো বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, কুষ্টিয়ার সাংসদ সেলিম আলতাজ জর্জ, কক্সবাজারের সাংসদ যথাক্রমে সাইমুম সরওয়ার কমল, আশেক উল্লাহ রফিক, কানিজ ফাতেমা মোস্তাক, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে. কর্ণেল (অব.) ফোরকান আহমদ, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, সালাহউদ্দিন আহমদ সিআইপি, সহ-সভাপতি রেজাউল করিম, লায়ন কমরুদ্দীন আহমদ, চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী, পেকুয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, চকরিয়া পৌরমেয়র আলমগীর চৌধুরী, এটিএম জিয়াউদ্দিন চৌধুরী, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাবলা, সাংবাদিক জহিরুল ইসলাম, আবুল কাশেম প্রমূখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাহবুবুল আলম হানিফ আরো বলেন, বাংলাদেশের মানুষ জানে, এই বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে। ১৯৭৪ সালের নির্বাচনে জয়লাভ করার পরেই আমাদের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই ৭ই মার্চের ভাষণ দিয়ে। আপনারা ইতিহাস বিকৃতি করতে চান। আপনারা জিয়াকে স্বাধীনতা ঘোষক বানাতে চান। তাই আমি আজকে এই জনসভায় বলে যাই, ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ রাতে যখন পাকিস্তানী সৈন্যবাহিনী নির্বিচারে গণহত্যা শুরু করেছিলেন ঘুমন্ত বাঙালির ওপরে, সেইসময় বঙ্গবন্ধু ২৬ মার্চ রাত সাড়ে বারোটার সময় ইপিআই ওয়ারল্যাসের মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণা আনুষ্ঠানিকভাবে দিয়েছিলেন। যার কারণে ২৬ মার্চ দুপুর দেড়টার সময় সেইসময়ের পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহহিয়া খান ওনি বেতার ভাষণে বঙ্গবন্ধুকে রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে ঘোষণা করে বলেছিলেন, তাকে চরম শাস্তি এবার পেতে হবে। কারণ সে স্বাধীন রাষ্ট্রদ্রোহ করেছে। সেই ২৬ মার্চের দুপুরেই নিউইয়র্ক টাইমস-এ বঙ্গবন্ধু পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করেছেন, সেটাও পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছিল। সেই ইতিহাসের অংশটিও এমপি জাফর আলমের স্থাপিত ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ কর্ণারে’ স্থান পেয়েছে। অতএব ইতিহাস বিকৃতি করার কোন সুযোগ নেই।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর পক্ষে ২৬ তারিখে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে চট্টগ্রামের সে সময়ের জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হান্নান ওনিই স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছেন প্রথম বঙ্গবন্ধুর পক্ষে। এর পরে কায়কোবাদ এবং কালুরঘাট বেতারকেন্দ্রের কর্মচারী বিল্লাল হোসেন ঘোষণা পাঠ করেছেন একাধিকবার। ২৭ তারিখ বিকেলে জিয়াউর রহমান এসে কালুরঘাটে ঘোষণা পাঠ করেছেন, তখন আওয়ামী লীগের একজন তাকে দিয়ে পাঠ করিয়েছেন এই কারণে যে সামরিক বাহিনীতে যেসব বাঙালি অফিসার, সৈন্যরা আছেন তারা যেন মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন সেই কারণে। যদি কালুরঘাটের বেতারকেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করার পরেই জিয়া স্বাধীনতার মহানায়ক হতে চান, তাহলে জিয়াউর রহমান নয় তার আগেই হবে চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সেইসময়ের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হান্নান। যিনি বঙ্গবন্ধুর পক্ষে প্রথম ২৬ মার্চ বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেছিলেন। ইতিহাস বিকৃতি করেছেন অনেক, ইতিহাস বিকৃতি করার আর সুযোগ নেই।
বাংলাদেশে রাষ্ট্রক্ষমতায় থেকে বিএনপি-জামায়াত যে দুর্নীতি লুটপাট করেছেন, সেই কারণে আল্লাহর তরফ থেকে বিচারের কারণে বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে, আর তার আরেকজন ছেলে বিদেশে পলাতক। এই হলো বিএনপি নেতারা। তারা এখন সরকারের বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র করছে, উন্নয়মূলক কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত করতে চায়। তারা জানে শেখ হাসিনা যতদিন ক্ষমতায় আছেন এই দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতিতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে এবং নৌকার প্রতি মানুষের আস্থা বাড়বে। তাই বৈধভাবে এই সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা যাবে না বলেই তারা এখন ষড়যন্ত্রের পথ খুঁজছে। দেশের মধ্যে ষড়যন্ত্র করে খুব সুবিধা না হওয়ায় এখন বাহিরে বসে বিভিন্ন এজেন্সি এবং মিডিয়ার মাধ্যমে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করলেও কোন লাভ হবে না বলেও মন্তব্য করেন মাহবুবুল আলম হানিফ।
বর্তমান বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী দেশের গরীব মানুষের জন্য যেসব সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করেছেন অন্য কোন সরকার করেনি। শেখ হাসিনা আজকে দেশের উন্নয়ন করেছেন, অগ্রগতি করেছেন যার ফলে বাংলাদেশ আজ চরম দরিদ্র এবং স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেয়েছে আন্তর্জাতিকভাবে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে। এসব কিছু শেখ হাসিনার অবদান। পক্ষান্তরে বেগম খালেদা জিয়ার কী অবদান ছিল। ওনি এখন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামী। কারাগারে ছিল, শেখ হাসিনার দয়ায়, মানবিকতায় ওনি এখন প্যারোলে মুক্তি নিয়ে, জামিনে মুক্তি নিয়ে বাসায় আছে। দুইজন প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে এই হলো তফাৎ। একজন শেখ হাসিনা দেশের মানুষের জন্য উন্নয়ন করছেন, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। চরম দারিদ্র রাষ্ট্র থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন। বিশ্বের কাছে উন্নয়ন রোল মডেল হিসেবে দৃশ্যায়িত হচ্ছে বাংলাদেশ। গ্রামের অসহায়-দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাদেরকে বাঁচার অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন। আবেকজন খালেদা জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাত করে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হয়ে আদালত কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে। পার্থক্যটা এটাই। দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে হানিফ আহবান জানান, এই পার্থক্য তুলে ধরতে হবে জনগণের কাছে।
প্রকাশ:
২০২১-০২-২৮ ২১:৩০:০৮
আপডেট:২০২১-০২-২৮ ২১:৩৮:০৮
- চকরিয়ায় যাত্রীবাহি বাস চাপায় মোটরসাইকেল চালক নিহত
- আগস্টে ৪৬৭ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৭৬
- সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপর হামলার প্রতিবাদে চকরিয়ায় মানববন্ধন
- চাঁদাদাবী, ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে চেয়ারম্যান ইউনুছসহ ১২জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা
- কক্সবাজার আদালতে স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামীর যৌতুকের মামলা!
- তামাকের ব্যবহার কমাতে শক্তিশালী কর পদক্ষেপ ও আইনের বিকল্প নেই
- চকরিয়ায় পুকুরে গোসল করতে নেমে পানিতে ডুবে দুই বোনের মর্মান্তিক মৃত্যু
- মাতামুহুরী নদীতে ১২ বসতঘর, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণে জেলা প্রশাসক
- নাইক্ষংছড়িতে টানা ৩দিন বৃষ্টির পানিতে ১৪ গ্রাম প্লাবিত
- চকরিয়ায় দুই দিনের ভারী বৃষ্টিতে নিন্মাঞ্চল প্লাবিত, ভয়াবহ বন্যার আশঙ্খা
- চকরিয়ায় উপজেলা পরিষদের পুকুরে ডুবে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীর মৃত্যু
- সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপর হামলার প্রতিবাদে চকরিয়ায় মানববন্ধন
- চকরিয়ায় দুই দিনের ভারী বৃষ্টিতে নিন্মাঞ্চল প্লাবিত, ভয়াবহ বন্যার আশঙ্খা
- মাতামুহুরী নদীতে ১২ বসতঘর, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণে জেলা প্রশাসক
- চকরিয়ায় পুকুরে গোসল করতে নেমে পানিতে ডুবে দুই বোনের মর্মান্তিক মৃত্যু
- তামাকের ব্যবহার কমাতে শক্তিশালী কর পদক্ষেপ ও আইনের বিকল্প নেই
- চাঁদাদাবী, ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে চেয়ারম্যান ইউনুছসহ ১২জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা
- আগস্টে ৪৬৭ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৭৬
- নাইক্ষংছড়িতে টানা ৩দিন বৃষ্টির পানিতে ১৪ গ্রাম প্লাবিত
- কক্সবাজার আদালতে স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামীর যৌতুকের মামলা!
- চকরিয়ায় সমিতির নামে অসহায় পরিবারের দশ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
- চকরিয়ায় যাত্রীবাহি বাস চাপায় মোটরসাইকেল চালক নিহত
পাঠকের মতামত: