নিজস্ব প্রতিনিধি, কুতুবদিয়া :: উপমহাদেশের আধ্যাত্মিক প্রাণপুরুষ গাউসে মোখতার হযরতুল আল্লামা শাহ আব্দুল মালেক আল-কুতুবী (রহ:)’র ১৯তম বার্ষিক ওরশ ও ফাতেহা শরীফ ১৯ ফেব্রুয়ারী (মঙ্গলবার) কুতুবদিয়ার কুতুব শরীফ দরবারে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহাসমারোহে অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও দেশ-বিদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে লক্ষ লক্ষ আশেক, ভক্ত ও অনুরক্তদের মহামিলন ঘটবে। নিরাপত্তার কথা ভেবে ১৮ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দরবারের জেয়ারতে মহিলাদের না আসার আহ্বান জানিয়েছেন আয়োজক কমিটি।
কুতুব শরীফ দরবার প্রেস এন্ড মিডিয়া উইং এর সচিব এহসান আল-কুতুবী জানান, আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি ওরশ ও ফাতেহা শরীফের প্রধান দিবস হলেও ১৮ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে শুরু হবে আয়োজিত কার্যক্রম। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দরবারে আগত সকল ভক্তদের থাকা-খাওয়া, জেয়ারত-জিকিরের জন্য আলাদা আলাদা থানা, উপজেলা, জেলা ও মহানগরভিত্তিক প্যান্ডেল নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে। এছাড়াও উট, গরু, ছাগল, মহিষ জবাইয়ের প্যান্ডেল, রান্না-বান্না ও বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের জন্য আলাদা প্যান্ডেল নির্মাণের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে বলে নিশ্চিত করেছেন আয়োজক কমিটির সদস্য কলিম উদ্দিন। তিনি জানান, পুরো আয়োজনকে ঘিরে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে শতাধিক শ্রমিক প্যান্ডেল নির্মাণের কাজ করছেন। অন্যান্য কর্মকা- চলমান আছে।
কমিটির সদস্য মোরশেদুল মন্নান জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও ১৯ ফেব্রুয়ারি বার্ষিক ওরশ ও ফাতেহা শরীফের মূল কার্যক্রম ১৮ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুরু হবে। ওইদিন ইসলামিক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় উপজেলার বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, মাদরাসা ও হেফজখানার শিক্ষার্থীবৃন্দ অংশগ্রহণ করবেন। পরে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আগত ওলামায়ে কেরামগনের নির্দিষ্ট বিষয়ভিত্তিক আলোচনা, বাবাজান কেবলাকে নিয়ে ভক্তদের স্মৃতিচারণ, হাম্দ-নাত ও শানে গাউসে মুখতারসহ বিভিন্ন গজল পরিবেশন করবেন। ১৯ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে দরবারের পরিচালক শাহজাদা শেখ ফরিদ আল-কুতুবী (মজিআ) সমাপনী ভাষণ ও আখেরী মুনাজাত এর মাধ্যমে ওরশ ও ফাতেহা শরীফের কার্যক্রম শেষ হবে। এতে দেশ-বিদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে লক্ষাধিক ভক্তের মহামিলন ঘটবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন দরবার প্রেস অ্যান্ড মিডিয়া উইং এর সচিব এহসান আল-কুতুবী।
তিনি বলেন, সময় যত বাড়ছে ভক্ত-আশেকদের সমাগম ততই বাড়ছে। ইসলামী শরিয়াহ্ পরিপন্থী অপসাংস্কৃতির বিরুদ্ধে হযরত আল-কুতুবী (রহ)’র কঠোর অবস্থান ও তাঁর আদর্শ, আনুগত্য, কর্মনিষ্ঠা ও আকর্ষনীয় ব্যক্তিত্বের প্রতি মানুষের আগ্রহ প্রবল। ফলে তাঁর ওরশ ও ফাতেহা শরীফে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষের সমাগমও বেড়েই চলেছে।
এছাড়া আগত ভক্তদের সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশ, আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত থাকবেন। পাশাপাশি দরবারের বিভিন্ন স্বেচ্ছা-সংগঠনের কর্মীবৃন্দ নির্দিষ্ট স্থানে দায়িত্ব পালন করবেন।
দরবারের পরিচালক শাহজাদা শেখ ফরিদ আল-কুতুবী (মজিআ) বলেন, বাবাজান ক্বেবলার আদর্শের প্রতি অবিচল থেকে দরবারের কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্বে আছি। দরবারে আগত মেহমানদের সার্বিক নিরাপত্তা দেওয়া ও সঠিক নির্দেশনার মাধ্যমে তাদের সহযোগিতা করা আমাদের দায়িত্ব। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে লক্ষ লক্ষ ভক্ত-অনুরক্ত ও আশেকানদের মহামিলনে নিরাপত্তার প্রয়োজনে ১৮,১৯ ও ২০ ফেব্রুয়ারি মহিলাদের দরবারে না আসার অনুরোধ জানাচ্ছি।
পাঠকের মতামত: