ঢাকা,সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

স্বাগত ২০২১; করোনামুক্ত পৃথিবীর প্রত্যাশা

 

সুজাউদ্দিন রুবেল. কক্সবাজার ::  কোন নিষেধাজ্ঞা না থাকায় বছরের শেষ সূর্যাস্ত উপভোগ করতে পর্যটকের ঢল নেমেছে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের বালিয়াড়িতে। নতুন বছর ২০২১ সালকে স্বাগত জানিয়ে করোনা মহামারী কাটিয়ে স্বাভাবিক জীবনের প্রত্যাশা সবার। নিরাপত্তার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মানাতে তৎপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা ১০ মিনিট; ধীরে ধীরে অস্তমিত হয়ে সমুদ্র গর্ভে বিলীন হচ্ছে বছরের শেষ সূর্যটি। সেই সঙ্গে বিদায় নিচ্ছে পৃথিবীর ইতিহাসের একটি অন্যতম খৃষ্টীয় বর্ষ ২০২০। করোনা মহামারি পৃথিবীর সব হিসেব নিকেশই শুধু পালটে দেয়নি সৃষ্ট নানা সঙ্কটে বিষাদময় হয়েছে স্বাভাবিক জীবনযাপন। গোটা বিশ্বই বছরজুড়ে লড়েছে অদৃশ্য এই শক্তির বিরুদ্ধে।
অবশেষে বিদায় ২০২০; স্বাগত নতুন বছর ২০২১। অন্যান্য বছরের মতো কোন আয়োজন না থাকলেও বছরের শেষ সূর্যাস্ত দেখতে পর্যটকদের পদচারণায় মুখর সৈকত শহর কক্সবাজার। নতুন বছরে অন্তত একটি সুস্থ ও স্বাভাবিক পৃথিবীর প্রত্যাশা সবার।

আশেক উল্লাহ নামের পর্যটক বলেন, “গত বছর দু:খ-কষ্ট ও করোনাময় একটি পৃথিবী পেয়েছি। আমরা চাই; করোনা আর বেশি দিন পৃথিবীতে থাকুক। আমরা চাই; সুস্থ, সুন্দর ও মাস্কমুক্ত জীবন।”
রিয়া নামের আরেক পর্যটক বলেন, মহান আল্লাহ’তালার কাছে প্রার্থনা করি নতুন বছরটা অনেক সুন্দর হউক। একটা করোনামুক্ত বিশ্ব চায়। সব মানুষ সুস্থভাবে আবার আগের মতো স্বাধীনভাবে জীবনযাপন করতে পারবে।
শাহেদ ও সিরাজ বলেন, বছরের শেষ সূর্যাস্ত দেখলাম। ২০২০ সালের যে ভয়ভীতিটা ছিল। এটা যেন সূর্য ডুবে যাওয়ার মতো করোনাও যাতে পৃথিবীতে থেকে ডুবে যায় এটা আশা করি।
বেড়াতে আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অনিক বলেন, ২০২০ সালটা পুরোই করোনার মধ্যে গেছে। যার কারণে পড়াশোনার ক্ষতি হয়েছে। সবমিলিয়ে নতুন বছরে আশা করি; পুনরায় যাতে ক্লাসে ফিরতে পারি।
হতাশা কাটিয়ে নতুন বছরে আবার ব্যবসায় চাঙ্গা ভাব ফিরবে এমনটাই আশা সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের। হোটেল কক্স-টুডে’র ম্যানেজার আবু তালেব শাহ বলেন; ২০২০ সালটা ব্যবসা ভাল যাবে বলে মনে করেছিলাম। কিন্তু করোনায় সবকিছু শেষ করে দিয়েছে। হোটেল-মোটেলও বন্ধ রাখতে হয়েছিল। এখন নতুন বছরে আশা করি, আবারও কক্সবাজারের পর্যটকে ভরে যাবে। ব্যবসা-বাণিজ্যে চাঙ্গাভাব ফিরবে।
উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পর্যটকদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি মানাতে চেষ্ঠা অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।
ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন আহমেদ মুকুল বলেন, থার্টি ফার্স্টকে কেন্দ্র করে কক্সবাজারে লাখো পর্যটকের সমাগম হয়েছে। তাই সৈকতের প্রতিটি পয়েন্টে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। রাত্রিকালিনও ট্যুরিস্ট পুলিশের টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। পাশাপাশি সবার সাথে সমন্বয় করে হোটেল মোটেল জোনেরও নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। আশা করি; আগত পর্যটকরা নিরাপদে সব স্থানে ঘুরতে পারবেন।
ট্যুরিস্ট পুলিশ জানিয়েছে; কোন নিষেধাজ্ঞা না থাকায় বছরের শেষ সূর্যাস্ত উপভোগ করতে কক্সবাজারে অবস্থান করছেন প্রায় দু’লাখেরও বেশি পর্যটক।
করোনা মহামারীতে সৃষ্ট নানা সঙ্কটে ২০২০ এ প্রাপ্তির চেয়ে অপ্রাপ্তিই যেন বেশি। বছরের শেষ সূর্যাস্তের সাক্ষী হতে আসা কক্সবাজারের হাজারো পর্যটকদের প্রত্যাশা, বছরের নতুন সূর্য নিয়ে আসবে সঙ্কটমুক্ত ও সমৃদ্ধির নতুন আগামী আর খুলবে সম্ভাবনার দুয়ার।

পাঠকের মতামত: