ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

সেন্টমার্টিনের ছেঁড়া দ্বীপের জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণে সরকারী উদ্যোগ প্রয়োজন

|| মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী ||

কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন ও দেশের সর্বদক্ষিণের অংশ তথা ছেঁড়া দ্বীপের সমুদ্রে বিভিন্ন জায়গায় মৃত ও পুরনো পাথরের সাথে নতুন করে প্রাকৃতিকভাবে প্রবাল কীটের ঘর তৈরি করা হচ্ছে। প্রবাল কীটগুলো ধীরে ধীরে নতুনকরে ঘর তৈরী করে তাদের আবাসস্থল নির্মাণ করায় এখানকার পাথরগুলো ক্রমান্বয়ে বড় হচ্ছে। ফলে ছেঁড়া দ্বীপের আকার-আয়তনও বড় হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে-এই প্রবাল কীটের বংশবিস্তারের মাধ্যমে ছেঁড়া দ্বীপের স্থলভাগের আয়তন বৃদ্ধি ও দুষ্প্রাপ্য জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা করা এখন অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। এই প্রবাল কীঠগুলো নির্বিঘ্নে বিচরণ, দ্বীপে কীট বান্ধব পরিবেশ সুরক্ষা, সেখানে অতিরিক্ত লোকসামাগমে বাধ্যবাধকতা ও জীব বৈচিত্র্যে’র ক্ষতি হয় এমন কার্যক্রম বন্ধ রাখতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া দরকার বলে মন্তব্য করেছেন-টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রবিউল হাসান। প্রকৃতির নান্দনিক এই বিরল জীব বৈচিত্র্য তথা প্রবাল কীটের অভয়ারণ্যকে বাঁচাতে সরকারের পাশাপাশি সামুদ্রিক জীব বৈচিত্র্য নিয়ে কর্মরত পরিবেশবাদী বেসরকারি সংস্থা গুলোকেও এগিয়ে আসার জন্য টেকনাফের ইউএনও মোঃ রবিউল হাসান আহবান জানান। ছেঁড়া দ্বীপে বেড়াতে যাওয়া কক্সবাজার জেলা জজশীপের সিনিয়র সহকারী জজ আলাওল আকবর বলেছেন-ছেঁড়া দ্বীপের নৈসর্গিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মহান আল্লহ্তায়লার এক বিশাল নিয়ামত। এ নেয়ামতের অপব্যবহার করলে এটা সহসায় ধ্বংস হয়ে যাবে। সিনিয়র সহকারী জজ আলাউল আকবর বলেন-এ অপরিসীম নেয়ামত সুরক্ষায় জরুরী উদ্যোগ নেয়া দরকার। তিনি বলেন-এ নিয়ামতকে পরিকল্পিতভাবে ব্যবহার করে পর্যটনের মাধ্যমে সরকার প্রচুর পরিমানে রাজস্ব আদায় করতে পারে। বঙ্গোপসাগরের জীব বৈচিত্র্য নিয়ে গবেষণা করেন, এমন একজন বিশেষজ্ঞের মতে-ছেঁড়াদ্বীপের জীব বৈচিত্র্য সুরক্ষায় অবিলম্বে সরকারিভাবে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। নাহয়, প্রকৃতির এই মহামূল্যবান জীব বৈচিত্র্য নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। এ গবেষকের মতে-ছেঁড়া দ্বীপের জীব বৈচিত্র্যকে বাঁচাতে হলে আর দেরী নাকরে কিছু উদ্যোগ নেয়া দরকার। তারমধ্যে-(১)ছেঁড়া দ্বীপে পর্যটক, জেলে ব্যবসায়ীদের ভ্রমন সীমিত করেতে হবে (২) ছেঁড়া দ্বীপে সাইকেল ও অন্যান্য বাহন চালানো সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে (৩) একটি বা দু’টি নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া যত্রতত্র নৌকা, সীট্রাক, জাহাজ নোঙ্গর করা বন্ধ করতে হবে (৪) পাথরের ফাঁকে কারেন্ট জাল পেতে জেলেদের মাছ ধরা রোধ করতে হবে (৫) প্রবালের ফুল তুলে বিক্রি নিষিদ্ধ করতে হবে (৬) সাগর থেকে ভেসে আসা ও পর্যটকদের ফেলে যাওয়া অপচনশীল বর্জ্য প্রতিদিন পরিস্কারের ব্যাবস্থা থাকতে হবে (৭)সম্ভব হলে পর্যটক ও ব্যাবসায়ীরা যাতে প্লাস্টিকের বোতল, প্যাকেট, কাপ ইত্যাদি অপঁচনশীল পণ্য ছেড়া দ্বীপে না নিতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এসব উদ্যোগ ছাড়াও স্থানীয়, জনগোষ্ঠী স্বার্থ, পর্যটক, ব্যবসায়ী ও সরকারের রাজস্ব আদায়ের কথা চিন্তায় রেখে প্রকৃতির অপরূপ দান প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে দেশের সর্বদক্ষিণে অবস্থিত ছেঁড়া দ্বীপকে বাঁচানোর জন্য পরিকল্পিত ও সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে তিন মন্তব্য করেছেন।

পাঠকের মতামত: