কক্সবাজার প্রতিনিধি :: টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে চলাচলকারী পর্যটকবাহী জাহাজ এমভি পারিজাত ও এমভি দোয়েল পাখি-১ নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
মহামান্য হাইকোর্ট এ পূর্বের একটি রিট পিটিশন (চলাচল এর অনুমতি) স্থগিত এর জন্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে আবেদন করা হয়েছে।
১৯ জানুয়ারী রিট পিটিশন নং-১১৮১৭ শুনানী শেষে বিচারপতি হাসান ফয়েজ ছিদ্দিকির বেঞ্চ এই আদেশ প্রদান করেছে।
মহামান্য হাইকোর্ট এই পিটিশন নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত এমভি পারিজাত (গ-০১-১১২১) ও এমভি দোয়েল পাখি ১ (গ-০১-১৬৬৯) এর টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-পথে চলাচল স্থগিত রাখতে আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সাথে পিটিশনটির পুনরায় শুনানির জন্য আগামী মার্চের ২ তারিখ নির্ধারণ করেছেন। এদিকে আদালতের নির্দেশা থাকলেও ২৪ জানুয়ারী এই জাহাজ দুটি অতিরিক্ত পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিন গেছে বলে জানা গেছে। জাহাজ কর্তৃপক্ষ টাকা দিয়ে সবকিছু ম্যানেজ করতে করতে আদালতের নির্দেশ পর্যন্ত পরোয়া করছে না।
জানা গেছে, টেকনাফে আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ও নৌ বন্দরের ট্রাফিক কর্মকর্তা মো: জহির উদ্দিন ভুইয়াকে লাঞ্ছিত করে সেন্টমার্টিন গেছে এম ভি পারিজাত জাহাজ ও এমভি দোয়েল পাখি জাহাজ।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদেরকে নিষেধ করা স্বত্বেও তারা অবৈধভাবে ছেড়ে গেছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানায়।
২৪ জানুয়ারী (শুক্রবার) টেকনাফ নৌ-বন্দরের ট্রাফিক কর্মকর্তা মো: জহির উদ্দিন ভুইয়া বলেন, জাহাজ দুটিকে আদালতের নির্দেশমতে না যাওয়ার কথা থাকায় নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়ের লোকজনের মাধ্যমে জাহাজের কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে জাহাজগুলিকে আটকানোর চেষ্টা করা হয়। অনেকক্ষণ আটকে রাখার পরে জাহাজে থাকা যাত্রীরা একসাথে আমাদেরকে ক্ষিপ্ত হয়ে মারতে তেড়ে আসলে আমরা কোনমতে পালিয়ে গিয়ে প্রাণে রক্ষা পায়।
যে ঘটনার স্বাক্ষী স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ও পর্যটকরা। পরে জাহাজ কর্তৃপক্ষ জোরপূর্বক জাহাজ ছেড়ে দেয়। তিনি আরো জানান-আমরা পালিয়ে না আসলে বড় একটি দূর্ঘটনা ঘটে যেত।
এমভি পারিজাত ও দোয়েল পাখি জাহাজের টেকনাফের দায়িত্বে থাকা মোহাম্মদ সোহেল বলেন, নদীবন্দর ট্রাফিক কর্মকর্তার উপরে হামলার কথা অস্বীকার করেন। আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা স্বত্বেও জাহাজ ছাড়লেন কেন জানতে চাইলে, তিনি জাহাজ চলাচলে নিষেধাজ্ঞার উপর কোন কাগজপত্র তাদের হাতে এসে পৌঁছায়নি বলে এড়িয়ে যান।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, জাহাজগুলো চলাচলের উপরে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকলে চলাচলের প্রশ্নই উঠে না। এতদসংক্রান্ত কাগজপত্র জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পৌছেছে।
এছাড়াও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের বন্দর ও পরিবহন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক নয়ন শীলের স্বাক্ষরিত চিঠির মাধ্যমে জাহাজ দুটির উপর আদালতের জারীকৃত রুট পারমিট স্থগিতকরণের জন্য টেকনাফ নৌ-পুলিশ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ অনেকের কাছে চিঠি পাঠিয়ে অনুরুধ করা হয়েছে।
এদিকে আদালতের রায়ের ৪ দিন পর মামলার বিবাদী বে অব বেঙ্গল গ্রুপের এমডি তোফায়েল আহমদ জানিয়েছেন, বে অব বেঙ্গল গ্রুপের পরিচালিত এমভি দোয়েল পাখি ও এমভি পারিজাত এই দুটি জাহাজ শনিবার (২৫ জানুয়ারী) হতে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে চলাচল করবে না। তিনি আরো বলেন, এই জাহাজ দুটি বন্ধ করে দিয়ে কে বা কারা ব্যবসায়ীকভাবে লাভবান হবেন? তাঁর জানা নেই।
পাঠকের মতামত: