ইমাম খাইর, কক্সবাজার ::
কক্সবাজারের কলাতলী সুগন্ধা পয়েন্টে বাতিলকৃত পাঁচটি প্লটের ৫ একর জমি থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে জেলা প্রশাসন।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকাল ১১ টা থেকে রাত সাড়ে ৮ টা পর্যন্ত অভিযান চলে। অভিযানে নেতৃত্ব দেন কক্সবাজার সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ শাহরিয়ার মুক্তার।
এসিল্যান্ড জানান, বুধবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সুগন্ধা পয়েন্টে পাঁচটি বাতিলকৃত প্লটে এই অভিযান চলে। এতে বড় ধরণের ১০টি স্থাপনা, আর ২০টি মতো ঝুপড়ি উচ্ছেদ করা হয়। এ সময় ৩ জনকে ছয় হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সতর্ক করা হয়েছে অবৈধ স্থাপনাকারীদের।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আশরাফুল আফসার জানান, হোটেল-মোটেল জোনসহ পুরো কলাতলীতে কোন ধরনের অবৈধ স্থাপনা থাকবে না। কৌশলে যারা মামলা দিয়ে সরকারি জমি দখল করতে চাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এডিসি বলেন, একটি চক্র সরকারি জমিতে অবৈধভাবে ঝুপড়ির স্থাপনা ও বাণিজ্য করছে বলে দীর্ঘদিনের অভিযোগ। প্রশাসন এসব দখলবাজদের চিহ্নিত করেছে। এর মধ্যে অভিযান শুরু হয়েছে। ক্রমান্বয়ে সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে বলে জানান ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক।
এদিকে, কক্সবাজার সমুদ্র পাড়ে মিলেমিশে অবৈধ দখল ও স্থাপনা নির্মাণ কাজ থেমে নেই। একদিকে অভিযান, অন্যদিকে স্থাপনা নির্মান, চলছে এভাবেই। রাজনীতির মাঠে বিরোধ থাকলেও দখলবাজিতে চলছে বন্ধুত্বের খেলা।
আর সরকারের শত কোটি টাকা মূল্যমানের জমি দখল নিরাপদে রাখতে খোঁড়া অজুহাতে মামলা ঠুকিয়ে দিয়েছে দখলবাজ চক্র। যে কারণে দখলবাজদের হাতেই হোঁচট খাচ্ছে প্রশাসনের উচ্ছেদ অভিযান।
তবে জেলা প্রশাসন বলছে, যে কোনভাবেই এসব অবৈধ দখল উচ্ছেদ করা হবে। সাগর পাড় করা হবে জঞ্জালমুক্ত একটি নিরাপদ পর্যটনস্থল।
কলাতলীর সুগন্ধা পয়েন্টে সরকারি শত কোটি টাকার জমি দখল করে গড়ে তোলেছে অবৈধ স্থাপনা।
এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে প্রশাসন কর্তৃক কয়েক দফা মাইকিং করা হলেও অদৃশ্য কারণে এখনো আচড় লাগেনি। কৌশলে বহাল তবিয়তে দখলবাজরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, কলাতলীর সুগন্ধা পয়েন্টের রাস্তার উত্তর পাশে রয়েছে রাজনৈতিক পরিচয়ে নির্মিত টিনশেড মার্কেট। যেখানে রয়েছে শুঁটকি, রেস্টুরেন্ট, ফিশ ফ্রাই, ওষুধের ফার্মেসি, ট্যুরিজম অফিস ইত্যাদি দোকান। এসব অবৈধ স্থাপনার নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন দুই প্রভাবশালী নেতা।
সরকারি বাতিলকৃত প্লটে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ দখলকারীরা বিভিন্ন ধরণের ঝুপড়ির স্থাপনা তৈরি করে ব্যবসা করে আসছে। একটি চক্র এসব স্থাপনা তৈরি করে দফায় দফায় হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এতে সরকারের বিপুল পরিমান রাজস্বও হাত ছাড়া হয়ে যাচ্ছে। এসব অবৈধ দখলকারীদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযানের উদ্যোগ দেন প্রশাসন। বুধবার দিনব্যাপী উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। স্থানীয়রা বলছে ছোট দখলদার উচ্ছেদ করেছে, ভালো কথা। কিন্তু রাঘববোয়ালদের স্থাপনাগুলো যাতে দৃষ্টির আড়ালে রয়ে না যায়। সাগর পাড়ের সমস্ত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবী এলাকাবাসীর।
পাঠকের মতামত: