ঢাকা,মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪

সরকারি গেজেটে কক্সবাজার ‘ব্যয়বহুল’ শহর

কক্সবাজার প্রতিনিধি :: এবার সরকারিভাবে দেশের ব্যয়বহুল শহরের তালিকায় যুক্ত হলো কক্সবাজার। সোমবার মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে কক্সবাজার শহর/পৌর এলাকাকে ব্যয়বহুল এলাকা ঘোষনা করা হয়।

মন্ত্রীপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম কর্তৃক জারি করা এ প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার দেশের অন্যতম পর্যটন শহর কক্সবাজারের শহর/পৌর এলার নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদিসহ বাড়ি ভাড়া, যানবাহন ভাড়া, খাদ্য ও পোশাক সামগ্রীসহ অন্যান্য ভোগ্যপন্যের মূল্য বিবেচনায় কক্সবাজার শহর/পৌর এলাকাকে ব্যয়বহুল হিসেবে ঘোষণা করেছে। এটি অবিলম্বে কার্যকর হবে।’

সূত্রমতে, কক্সবাজার শহর/পৌর এলাকাকে ব্যয়বহুল এলাকা ঘোষনার প্রেক্ষিতে ভবিষ্যতে কক্সবাজারে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তারা বাড়তি ভাতা পাবেন।
সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার জেলা প্রশাসন থেকে ২০১৭ সালের শেষ দিকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে একটি চিঠি দেয়া হয়। এতে বলা হয়, কক্সবাজার একটি পর্যটন শহর। এখানে প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক পর্যটক আসে। ছুটির দিনগুলোতে ১০-১২ লাখ পর্যটক অবস্থান করেন এখানে। ছুটির দিন ছাড়া বিশেষ করে পর্যটন মৌসুমে বা শীতের সময় ৬-৮ লাখ পর্যটক থাকেন। অন্য সময়ে দুই থেকে আড়াই লাখ পর্যটক থাকেন। এসব কারণে এখানে বিভিন্ন পণ্য ও সেবার মূল্য একটু বেশি। ফলে খাবার বা পরিবহন বাবদ বাড়তি অর্থ ব্যয় করতে হয়। যেটা অন্যান্য জেলায় করতে হয় না। এ কারণে তারা কক্সবাজারে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তাদের বাড়তি ভাতা দেয়ার প্রস্তাব করেছেন। এ চিঠি দেয়ার পর বিষয়টি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছিল।

স্থানীয় সচেতন লোকজন বলছেন, কক্সবাজারে পর্যটক ও রোহিঙ্গাদের বাড়তি চাপের কারণে বিভিন্ন পণ্য ও সেবার চাহিদা বেড়ে গেছে। এ ছাড়া বেড়েছে টাকার প্রবাহ। ফলে বেড়ে গেছে মূল্যস্ফীতির হার। ক্ষয় বেড়েছে টাকার। এসব কারণে স্থানীয় চাকরিজীবী ও স্বল্পআয়ের লোকজন বিপাকে পড়েছেন। তাদের জীবনযাত্রার খরচ বেড়ে গেছে। কিন্তু সেভাবে আয় বাড়েনি। এতে জীবনযাত্রার মানের সঙ্গে তাদের আপস করে চলতে হচ্ছে।

২০১৭ সালের আগস্টে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশের সীমান্ত জেলা কক্সবাজারের বিভিন্ন উপজেলায় আশ্রয় নেয়। বর্তমানে সরকারি হিসাবে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা রয়েছে। বাস্তবে আরও বেশি হতে পারে। এর প্রভাবেও মূল্যস্ফীতির হার বাড়ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,  কক্সবাজারে বিভিন্ন জিনিসপত্রের চাহিদা আছে, তা অনেকগুণ বেড়ে গেছে। এছাড়া রোহিঙ্গাকে নিয়ে বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে। তাদের প্রতিনিধি দল কক্সবাজারে অবস্থান করছে। এর মধ্যে পর্যটকরাও কক্সবাজারে আসা-যাওয়ার মধ্যে আছেন। সব মিলিয়ে সেখানে মানুষের সংখ্যা বেড়ে গেছে। ফলে দ্রব্যসামগ্রীসহ সবকিছুর একটা অতিরিক্ত চাহিদা ও চাপ সৃষ্টির কারণে কক্সবাজারে মূল্যস্ফীতির হারও অনেক বেশি।

পাঠকের মতামত: