নিজস্ব প্রতিবেদক :: কুমিল্লার ঘটনার জের ধরে কক্সবাজারের চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে এখানে-ওখানে ছুটে চলেছেন কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ জাফর আলম। তিনি গত বুধবার বিকেল থেকে দিবাগত রাত দুইটা পর্যন্ত চকরিয়ার চিরিঙ্গা ইউনিয়ন থেকে সাহারবিল, পেকুয়ার সদর ইউনিয়ন থেকে মগনামা, বারবাকিয়া, শীলখালী ইউনিয়নের দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে সংখ্যালঘু তথা হিন্দু সম্প্রদায়ের জানমাল রক্ষায় অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করেছেন।
এমপি জাফর আলম বৃহস্পতিবার সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করেছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কাজে। এ সময় তিনি পেকুয়া উপজেলায় সংঘটিত বিভিন্ন ইউনিয়নে গিয়ে পরিদর্শন করেছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর চালানো বর্বরতার চিত্র। বিকেলে পেকুয়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে প্রশাসনের কর্মকর্তা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা, পেকুয়ার সাতটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দদের নিয়ে জরুরী সভা করেন।
পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূর্বিতা চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক জরুরী সভায় প্রধান অতিথির দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন এমপি জাফর আলম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পেকুয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), পেকুয়া থানার এক কর্মকর্তা, পেকুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম, পেকুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাংবাদিক জহিরুল ইসলাম, টৈটং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী, মগনামা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ ওয়াসিম, রাজাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছৈয়দ নূর, উজানটিয়ার সহ জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ। উপস্থিত ছিলেন চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম লিটুও।
আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক জরুরী মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমপি জাফর আলম বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অনেকদিন ধৈর্য্য ধরেছে। ইতোমধ্যে সেই ধৈর্য্যরে বাঁধ ভেঙে গেছে। আর সময় নেওয়া হবে না। এবার থেকে পেকুয়ায় যারা যারা সাম্প্রদায়িক উস্কানি ও হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছে তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবেনা। একটি লাশ পড়লে সেই লাশের বদলে অসংখ্য লাশ পড়বে। সরকার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে অস্ত্র-গুলি দিয়েছে বসে থাকার জন্য নয়। এসব অস্ত্র-গুলি এখন থেকে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হবে। কেউ আইন হাতে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করলে চিরতরে মুলোৎপাটন করে ফেলা হবে।
এই সভা থেকে আমি নির্দেশ দিচ্ছি, পেকুয়ায় বুধবারের রাতের ঘটনায় যারা জড়িত রয়েছে তাদের বাড়িঘরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান শুরু করার জন্য।
এদিকে পেকুয়ায় জরুরী সভায় যোগদান শেষে এমপি জাফর আলম চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে শারদীয় দুর্গোৎসবের নবমীতে মণ্ডপে মণ্ডপে পূজার্থীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এ সময় এমপি জাফর হিন্দুসম্প্রদায়কে বিজয়া দশমীর শুভেচ্ছা জানিয়ে নির্ভয়ে পূজার্চনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য বলেন।
এমপি জাফর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে পর্যায়ক্রমে পূজামণ্ডপ পরিদর্শন ও পূজার্থীদের সাথে মতবিনিময় করেন ডুলাহাজারা রংমহল পূজামণ্ডপে, বৈরাগীরখিল সারদা সার্বজনীন মন্দির, ডুলাহাজারা কেন্দ্রীয় হরিমন্দির, কাকারা ইউনিয়নের পূজামণ্ডপ, বরইতলী, হারবাং, কৈয়ারবিলসহ উপজেলার পূজামণ্ডপগুলোতে।
এ সময় জাফর আলম তাঁর ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে মণ্ডপে মণ্ডপে আর্থিক অনুদানও প্রদান করেন। এ সময় পূজা উদযাপন পরিষদ নেতৃবৃন্দ, এমপির ব্যক্তিগত সহকারী আমিন চৌধুরী, ডুলাহাজারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী হাসানুল ইসলাম আদরসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
পাঠকের মতামত: