ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

সদরে এক কাপড়ে আসা ডিও সিন্ডিকেট মুজিব এখন কোটিপতি

কক্সবাজার প্রতিনিধি :: কক্সবাজার সদর উপজেলার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প এবং জনপ্রতিনিধিদের দেওয়া ডিও সিন্ডিকেট করে অল্প দিনে কোটিপতি মুজিব এবং তার প্রধান সহযোগি উপজেলা পিআইও অফিসের সহকারী আবছার।

একজন অফিসের ভেতরে অন্যজন অফিসের বাইরে সমস্ত সরকারি ডিও কমমূল্যে ক্রয় করে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস এবং সদর খাদ্য অফিসকে ম্যানেজ করে রমরমা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়দের দাবি এক কাপড়ে আসা মুজিব এখন শহরে ডিককুলে ৫ তলা আলিশান বাড়ি সহ গ্রামের প্রচুর সম্পদের মালিক। এছাড়া আবছার প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা অফিস থেকে বাড়ি নিয়ে যায় বলেও দাবি করেন তারা।
জানা গেছে মুজিবের আপন ভাই এক সময় ইয়াবা নিয়ে আটক হয়েছিল এবং মুজিবও বেশ কয়েকবার সরকারি চাল আত্মসাৎ সহ নানান অনিয়মের কারণে জেলে গিয়েছিল। বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশন সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন সচেতন মহল।
কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদে গত ২ দিন ধরে সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে বর্তমান সময়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান সহ বিভিন্ন ভাবে উপজেলার বিভিন্ন লোকজন কাবিখা এবং টিআর প্রকল্পের ডিও নিয়ে আসলে উপজেলা পিআইও অফিসে কর্মরত আবছার অনেককে নগদ টাকা দিয়ে দিচ্ছে আবার অনেককে মুজিবের কাছে পাঠাচ্ছে।

পরে সন্ধ্যার সময় দেখা গেছে উপজেলা বাজারের চাল ব্যবসায়ি মুজিব সওদাগর এক ব্যাগ টাকা নিয়ে আবছারের কাছে গিয়ে সমস্ত ডিও লেটার বুঝে নিয়ে আসছে। পরে বেশ কয়েকজনের সাথে আলাপ করে জানা গেছে এখানে সমস্ত ডিও আবছার এবং মুজিবের কাছে বাধ্যতামূলক বিক্রি করতে হয়। না হলে পিআইও অফিস নানান ঝামেলা করে। আর তাদের সাথে খাদ্য অফিস থেকে, উপজেলা পিআইও অফিস সব ম্যানেজ করা আছে, তাই আমরাও বাড়তি ঝামেলায় যেতে চাই না।

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে মুজিব কয়েক বছর আগে এক কাপড়ে ডিককুল এসে সামান্য বেতনে চাকরী করতেন। কিন্তু ইয়াবা এবং চাল সিন্ডিকেট করে তিনি এখন কোটিপতি। বর্তমানে ডিককুল এলাকায় নিজস্ব জমি কিনে আলিশান ৫ তলা বাড়ি করেছেন। যার আনুমানিক মুল?্য ৩ কোটি টাকা। এদিকে জানা গেছে মুজিবের আপন ভাই নুর নবী কয়েক বছর আগে মুজিবের চালের দোকান থেকে ইয়াবা সহ গ্রেফতার হয়েছিল। মুলত মুজিব নিজে চাল ব্যবসার আড়ালে ইয়াবা ব্যবসা করে।

এছাড়া মুজিবকে বেশ কয়েকবার আইনশৃংখলা বাহিনি সরকারি চাল আত্মসাত এবং চুরির অভিযোগে আটক করে জেলে পাঠিয়েছিল। কিন্তু বার বার জামিনে বের হয়ে সে একই কাজ করে।

তবে বর্তমানে বেশি বেপরোয়া হয়েছে আবছারের কারণে, তার আশ্রয় প্রশ্রয় পেয়ে মুজিব এখন বেশি অনিয়ম দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে। এদিকে রবিবার বিকালে প্রথমে সাংবাদিক পরিচয় গোপন রেখে মুজিবের কাছে ডিও নেবে কিনা জানতে চাইলে তিনি অপকটে বলেন, টিআর হলে আবছারের সাথে যোগাযোগ করেন তাকে নগদ টাকা দিয়েছি। সে সরাসরি কিনে নেবে। আর কাবিখা হলে আমাকে দিতে পারেন। পরে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি অস্বীকার করে বলেন, আমি কোন ডিও কিনিনা। আর আমার কোন ভাই ইয়াবা নিয়ে আটক হয়নি তবে তিনি নিজে একবার আটক হয়েছিলেন বলে জানান।

এ ব্যাপারে পিআইও অফিসের আবছারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সব বিষয় অস্বীকার করেন। এ ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন রায় বলেন, বিষয়টি আমাকে সরকারি কেউ অভিযোগ করেনি। কেউ অভিযোগ দিলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পাঠকের মতামত: