ঢাকা,সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪

শিক্ষা বাণিজ্য কী কেন কোথায়

zzzz

শিক্ষা নিয়ে বাণিজ্য, শিক্ষার জন্য বাণিজ্য, শিক্ষা উপকরণের বাণিজ্য, শিক্ষার কল্যাণে বাণিজ্য, শিক্ষা বিস্তারে বাণিজ্য ইত্যাদি সবকিছুই শিক্ষা বাণিজ্য হিসেবে গণ্য হতে পারে। যে শিক্ষা শুধুমাত্র অর্থ উপার্জনের জন্য অর্জন ও বিতরণ করা হয়, তা সর্বাংশেই শিক্ষা বাণিজ্য। তা ফ্রি দিলে মূল্য নেই। তাই ফ্রি দেয়ার দরকার নেই। কিন্তু যে শিক্ষা নীতিনৈতিকতার জন্য, তা প্রয়োজনে ফ্রী হতে পারে। কিন্তু কোন অবস্থায় আত্মসম্মান ও ধর্মসম্মান বিসর্জন দিয়ে নয়। ধর্ম শিক্ষার বিনিময় নেই। কিন্তু কর্ম শিক্ষার বিনিময় আছে। উভয় শিক্ষার সমন্বয় হলে অল্প খরচে ধর্ম ও কর্ম উভয় শিক্ষাই অর্জন করা যায়। এ রকম ব্যবস্থার জন্য বিনিয়োগ হচ্ছে অতিউত্তম সামাজিক বিনিয়োগ। এ রকম শিক্ষা বাণিজ্যে বিনিয়োগ করার জন্য সর্বত্র সবাইকে আহবান জানাচ্ছি। এ জন্য আপনি দু’ধরণের ফান্ড গঠন করতে পারেন। একটি হল ক্যাশ ওয়াক্ফ ফান্ড, যা বিনিয়োগ করে অর্জিত লভ্যাংশ শিক্ষাখাতে ব্যয় করবেন। অন্যটি হল বিনিয়োগ ফান্ড, যা বিনিয়োগ করে অর্জিত লাভ-ক্ষতিসহ বিনিয়োগকারীকে ফেরৎ দেবেন। যে অর্থ গুপ্তখাতে বিনিয়োগ করলে সমাজের কারো কোন উপকার হয় না এবং মুহুর্থেই মূলধন হাওয়া হয়ে যেতে পারে, সে অর্থ শিক্ষাখাতে বিনিয়োগ করলে অন্তত কিছু মানুষ লেখাপড়া শিখতে পারবে এবং কিছু কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। প্রয়োজনে শেয়ারও নিতে পারেন। উদাহরণ হিসেবে এখানে তিন ধরনের শেয়ার প্রস্তাব করছি। ক. ২০১৬ সালে দারুল কোরআন টেকনিক্যাল মাদরাসার প্রতি শেয়ার ৫,০০০ টাকা। খ. ২০১৭ সালে সৃষ্টিসেবা ইনস্টিটিউট এন্ড নার্সিংহোমের প্রতি শেয়ার ৫০,০০০ টাকা। গ. ২০১৮ সালে ইন্টারন্যাশনাল রেলিজিয়ন্স এন্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটির প্রতি শেয়ার ৫,০০,০০০ টাকা। প্রত্যেকটির কেন্দ্র ও শাখা উপযুক্ত স্থানেই স্থাপনযোগ্য।

মহানবী (সা.) বলেন, তোমরা হয় কোরআনের আলেম হও, নতুবা ছাত্র হও, নতুবা সহযোগী হও, চতুর্থ কিছু হয়ো না। তাই কোরআনের সহযোগী হওয়ার নিয়তে কোরআন শিক্ষালয় স্থাপন ও পরিচালনার জন্য আপনি শেয়ার নিতে পারেন। এর ফলে ইহকালীন লাভের চেয়ে পরকালীন লাভই বেশি। ইহকালীন ক্ষতি হলে পরকালীন ডবল লাভ। তবে টেকনিক্যাল মাদরাসায় ক্ষতির সম্ভাবনা খুবই কম। একই শাখার কিছু অংশ ওয়াক্ফ, আর কিছু অংশ বাণিজ্যিকও হতে পারে। উক্ত দারুল কোরআন টেকনিক্যাল মাদরাসার ১ম ওয়াক্ফ শাখা ঈদগাঁওতে ১৬/১২/২০১৫ তারিখ হতে শুরু হলেও, ১ম বাণিজ্যিক শাখা শুরু হচ্ছে চকরিয়ায় ১৬/১২/২০১৬ তারিখ হতে ইন শা আল¬াহ। এর শেয়ার যে কেউ যত ইচ্ছা নিতে পারেন, যাতে সবাই কোরআন শিক্ষার অংশিদার হতে পারে। যত পুঁজি লাগবে তত শেয়ার নেয়া হবে। প্রত্যেক শেয়ার ক্যাশ থাকা সাপেক্ষে ফেরতযোগ্য, কিন্তু হস্তান্তরযোগ্য নয়। এ প্রতিষ্ঠানে নার্সারী হতে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত আবাসিক/অনাবাসিক ছাত্র/ছাত্রীরা ৫ম শ্রেণীর উপর পৃথক থিউরিক্যাল ও প্রেক্টিক্যাল ক্লাস এবং কোচিং করবে।

সৃষ্টির সেবার লক্ষ্যে, সৃষ্টি ও সেবার নিয়ম-পদ্ধতি শিখানোর উদ্দেশ্যে, সৃষ্টিসেবা ইনস্টিটিউট এন্ড নার্সিংহোম হবে নার্সারী হতে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত একটি আধুনিক স্কুল-কলেজ এন্ড হসপিটাল। এখানে শারিরিক শিক্ষা, মানষিক শিক্ষা ও চারিত্রীক শিক্ষা একই সঙ্গে দেয়া হবে ইন শা আল্লাহ। এখানকার প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রী ডাক্টার হওয়ার টার্গেট নিয়েই লেখাপড়া করবে। ডাক্টার হতে না পারলেও নার্স/ব্রাদার বা ইঞ্জিনিয়ার হতেই হবে। যাদের এ রকম উচ্চ আশা থাকবে না, তাদের এখানে পড়ার দরকার নেই। প্রেক্টিক্যাল ক্লাসের জন্য নার্সিংহোম সাথে থাকতে হবে। শিখানোর জন্য লাগবে ভাল ডাক্টার, যারা বিনা প্রয়োজনে অপারেশন ও পরীক্ষা দেবে না। ২৫/১২/২০১৭ তারিখ হতে চকরিয়ায় চালুর লক্ষ্যে এখন থেকেই শেয়ার সংগ্রহের ঘোষণা দেয়া হচ্ছে।

বিশ্বের সকল ধর্ম ও সকল বিজ্ঞান সম্পর্কে এ দেশের মানুষ উচ্চশিক্ষা অর্জন করে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ার লক্ষ্যে ইন্টারন্যাশনাল রেলিজিয়ন্স এন্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটি দরকার। সব ধর্মের, সব দেশের, সব ভাষার, সব বর্ণের, সব জাতির, সব জ্ঞান-বিজ্ঞান অর্জন ও বিতরণের উদ্দেশ্যেই তা হতে হবে। শুধুমাত্র নামে নয়, বরং তা হবে প্রকৃতপক্ষেই আন্তর্জাতিক। এর টার্গেট থাকবে প্রত্যেক দেশে অন্তত একটি করে শাখা বিস্তার, যাতে বিশ্বের সবাই এ দেশকে আরো বেশি জানতে ও বুঝতে পারে। বিশ্বব্যাপী কর্মসংস্থান সন্ধান ও সৃষ্টিতে এ বিশ্ববিদ্যালয় হবে বাংলাদেশের অঘোষিত দূতাবাস। বাংলাদেশের বিশ্ব পর্যটন কেন্দ্র ককসবাজারের বাণিজ্যিক কেন্দ্র চকরিয়াতে তা হওয়া যুক্তিযুক্ত। সম্ভব না হলে বান্দরবানও উপযুক্ত, তবে এলাকা ঝুকিপূর্ণ। যে সরকার এর অনুমোদন দেবে সে সরকার প্রধান সম্পর্কে এখানে একটি কোর্স থাকবে, যা বিশ্বের যেখানেই এর শাখা হোক সবাই পড়তে বাধ্য থাকবে। ৩১/১২/২০১৮ তারিখ এর আনুষ্ঠানিক উদ্ভোধন করার টার্গেট নিয়ে শেয়ার আহবান করছি। তবে শেয়ার হোল্ডার হতে পারবে নয় হতে একূশ জন মাত্র।

উক্ত প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানেই ছাত্র রাজনীতি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। তবে সমাজসেবার প্রত্যেকটি উপায় অবলম্বন করতে পারবে। বরং সমাজসেবা কত প্রকার ও কী কী, তা হাতে কলমে শিক্ষা দেয়া হবে ইন শা আল্লাহ। প্রত্যেক মানুষের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা, কর্মসংস্থান, পরিবার, নিরাপত্তা, ন্যায়বিচার, ধর্ম, প্রযুক্তি, অর্থ, যোগাযোগ, নেতৃত্ব, জ্ঞান, যোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা কিভাবে নিশ্চিত করা যায় সে শিক্ষাই এসব প্রতিষ্ঠানে দেয়া হবে। কিভাবে কৃষি বিপ্লব, শিল্পবিপ্লব, সবুজ বিপ্লব ঘটানো যায়, তার উপায় খোঁজতে থাকবে প্রতিনিয়ত এর প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকা।

মানুষকে কাজ না দিলে অকাজ করবে। সুশিক্ষা না দিলে কুশিক্ষা পাবে। বিনিয়োগের জন্য সুপথ না দেখালে বিপথে বিনিয়োগ করে বিপদে পড়বে। তাই সুশিক্ষা, সুকর্ম ও সুবিনিয়োগের লক্ষ্যে উক্ত প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তা কেউ অস্বিকার বা অবহেলা করতে পারবে না। কিন্তু কেউ যদি ব্যক্তি স্বার্থে বা দলীয় স্বার্থে তাতে অসহযোগিতা করে, তবে বুঝতে হবে সে ছোটমনের লোক। সে শুধু নিজের নয়, বরং নিজ পরিবার-বংশ-এলাকা-দল ও দেশেরই ক্ষতি করবে। মাশাআল্লাহ আশা করি আমাদের দেশের কোন দলে বা এলাকায় এমন কোন ছোটলোক নেই। প্রত্যেকেই নিষ্টাবান সমাজসেবক।

ছাত্র-ছাত্রীর উছিলায় মা-বাবা যদি কিছু সুবিধা পায় তবে ছাত্র-ছাত্রীরা লেখাপড়া হতে ঝরে যাওয়ার প্রবনতা কমবে। যেমন প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রী যদি নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সুপারিশে প্রয়োজনীয় পণ্য কিস্তিতে ক্রয় করতে পারে এবং উৎপাদিত পণ্য বিক্রয় করতে পারে, তবে মা-বাবার জন্য অনেক সহায়ক হবে। এ জন্য প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও চালু করা যায় পল্লীকেন্দ্র এবং কেএইচ বস্ত্র ও কুঠিরশিল্প হাউজ। জমি ও ঘর সমস্যা সমাধানে ল্যান্ড সলিউশন এন্ড হাউজিং। দেশ-বিদেশের কর্মসংস্থানে এক্সিমকক্স ইন্টারন্যাশনাল। পরিবার ও পর্যটন খাতে কক্সভিউ ট্যুরিজম এন্ড হজ্জ্ব কাফেলা। প্রযুক্তি ও প্রতিভা বিকাশে প্রতিভা শিল্পীগোষ্ঠি ও প্রতিভা টেকনোলোজী। অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানে পারিবারিক কোম্পানী। জ্ঞান অর্জন ও সাময়িকী প্রকাশনায় আল-কলম পাবলিক লাইব্রেরী এন্ড পাবলিকেশন্স। যাতায়াত সমস্যা সমাধানে সাইফ্ পরিবহন। সমন্বয় সাধন ও নেতৃত্ব সৃষ্টিতে মানবাধিকার যুবসমিতি, পিতৃ সংসদ, প্রবীণ সংঘ। নিরাপত্তা ও আত্মরক্ষায় বৃহত্তর নাগরিক পরিষদ। বেকারত্ব নির্মূলে কর্মশিক্ষা। কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে নতুন নতুন আইডিয়া। ট্যাক্স প্রদানে কৃষি ও শিল্পবিপ্লব। আন্তধর্মীয় সম্প্রীতি ও সংলাপে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান মুসলিম ঐক্য পরিষদ। অনৈতিকতা ও জঙ্গীবাদ প্রতিরোধে এবং গণমূখী শিক্ষা-দিক্ষা ও সেবা বিস্তারে বৃহত্তর ওলামা পরিষদ। ধর্মশিক্ষা উন্নয়নে ক্যাশ ওয়াক্ফ। দারিদ্র বিমোচনে জাকাত ব্যাংক। সর্বক্ষেত্রে পরামর্শ, ইত্যাদি। উক্ত কাজগুলো করা গেলে সহজেই ঘোষণা দেয়া যায় যে, এ অঞ্চলের সকল এতীম ও অসহায়ের সম্মানজনক পুনর্বাসন হবে গ্রীণহাউজ-এর মাধ্যমেই।

প্রত্যেক কাজের ক্ষেত্রে যোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা মুখ্যবিষয়। এ জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতাও লক্ষ্যনীয়। কওমী ও আলিয়া মাদরাসা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার পর পড়ানোর পাশাপাশি পরিচালনা ও প্রতিষ্ঠার নিজস্ব এবং কিছু পৈত্রীকসুত্রে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা নিয়েই যাবতীয় পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা। সফলতার জন্য দোয়াই একমাত্র হাতিয়ার। যে কোন কাজের ক্ষেত্রে পজেটিভ অভিজ্ঞতার তুলনায় নেগেটিভ অভিজ্ঞতা অনেক বেশি সহায়ক হয়। নিজের বাড়ী ঈদগাঁও হলেও নানার বাড়ী ও স্বশুর বাড়ী ককসবাজার-চট্টগ্রাম, মহেশখালী-কুতুবদিয়া ও লামা-আলীকদমের মাঝখানে অবস্থিত চকরিয়ায়। তাই চকরিয়ার উন্নয়ন নিজ জীবনের অন্যতম লক্ষ্য। আলহাজ্জ্ব রফিক আহমদ চৌধুরী এডুকেশন কমপ্লেক্স ও খতীবে আযম কমপ্লেক্সও বাস্তবায়নযোগ্য।

যে কোন কাজে যারা জড়িত থাকে তাদের সবার চিন্তা-চেতনা, লক্ষ্য-উদ্দেশ্য, স্বাার্থ-নিয়ত এক না হলে পরবর্তীতে সমস্যা দেখা দেয়। তাই আগ্রহী সবাই যথাসম্ভব একমত হওয়ার সুবিধার্থে বিস্তারিত আলোচনা করা হল। সওয়াব, সুনাম ও লাভ, এ তিনটির মধ্যে কমপক্ষে একটি পেলেও যারা নিজেকে ধন্য মনে করবে এবং কোনটাই না পেলেও সবর করতে পারবে, শুধুমাত্র তাদেরকেই আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। মনের মিলটাই আসল মিল। কষ্টের পরই মিষ্টি হয়। সফলতার জন্য আনুগত্য প্রথম শর্ত। যাদের আনুগত্যের যোগ্যতা কম, তাদের নিরাপদ দূরত্বে থাকাই ভাল। কারন এ সব নেতৃত্বের ক্ষেত্র নয়, কর্মক্ষেত্র।

মক্তব/ নার্সারী/ নূরানী/ হিফজ/ ৫ম/ ৮ম/ ১০ম/ দ্বাদশ ইত্যাদি যেখানে যতটুকু পড়ানো হয় তা পড়ার পর আমাদের প্রতিষ্ঠানে আসার জন্য বা পাঠানোর জন্য দাওয়াত থাকল। সকাল/ বিকাল/ সন্ধ্যা, যার যে সময় সুবিধা সে সময় কিছু কিছু ধর্ম-কর্ম শিখে নিয়ে নিজ যোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়ে নিন। ১ম বছর থেকেই নার্সারী হতে একাদশ শ্রেণী পর্যন্ত ভর্তি ফরম দিলেও আগ্রহ ভিত্তিক শ্রেণী/ কোর্স চালু হবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ কবুল ও সফল করুন, আমীন।

লেখক- সাইফুল ইসলাম।

প্রতিষ্ঠাতা-পরিচালক 

দারুল কোরআন টেকনিক্যাল মাদরাসা।

আহবায়ক ঃ সৃষ্টিসেবা ইনস্টিটিউট এন্ড নার্সিংহোম।

[email protected]

পাঠকের মতামত: