ঢাকা,মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪

শহরে জলকেলি উৎসবে মুখরিত রাখাইন পল্লীগুলো

এম.এ আজিজ রাসেল ::

জমে উঠেছে রাখাইন সম্প্রদায়ের মাহা সাংগ্রাইং পোয়ে (মৈত্রিময় জল বিচ্ছুরণ উৎসব)। বৃহস্পতিবার উৎসবের দ্বিতীয় দিনে আনন্দ উচ্ছ্বাসে মাতোয়ারা ছিল রাখাইন পল্লীর তরুণ-তরুণীরা। তাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে উৎসবের বর্ণিল আবহে শরীক হয়েছে স্থানীয়সহ পর্যটকরাও।

জল ছিটানোর প্যান্ডেল গুলো ঘুুরে দেখা যায়, শহরের টেকপাড়া, হাঙর পাড়া, বার্মিজ স্কুল এলাকা, পূর্ব-পশ্চিম মাছ বাজার, , ক্যাং পাড়া ও বৈদ্যঘোনাস্থ থংরো পাড়ায় দুপুর ১ টা থেকে বাদ্য বাজনার তালে তালে দলবেঁধে ছুটে যায় রাখাইন তরুণরা। আর প্যান্ডেল গুলোতে আগে থেকে অপেক্ষামান তরুণীরা এক অপরকে পানি ছিটিয়ে পুরোনো বছরের হতাশা দূর করে নব আলোকে পথ চলার প্রত্যয় ব্যক্ত করে। যা অবলোকনে হিন্দু, মুসলিম, খ্রিষ্টান ধর্মালম্বীদের পাশাপাশি জড়ো হয় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত পর্যটকরাও। সব ধর্মের মানুষের পদচারণায় প্যান্ডেলগুলোতে সম্প্রীতির মেল বন্ধন দেখা যায়। এ যেন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নে লালিত ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সোনার বাংলার এক খন্ড বাংলাদেশ। জলকেলির প্যান্ডেলগুলো রঙিন ফুল আর নানা কারুকার্যে বর্ণিলভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। রাখাইন এলাকার প্রতিটি বাড়ি সেজেছে নবরূপে।

মূলতঃ ১৩৮০ কে বিদায় জানিয়ে ১৩৮১ কে বরণ করা জন্য রাখাইন সম্প্রদায় নতুন বর্ষ পালন করার উদ্দেশ্যে এই উৎসব পালন করছে।

আজ জলকেলি উৎসবের সমাপনী দিন। শহরছাড়াও মহেশখালী, টেকনাফ, হ্নীলা চৌধুরী পাড়া, রামু, পানিরছড়া, চকরিয়া, হারবাং, মানিক পুরসহ রাখাইন অধ্যুষিত এলাকা গুলোতে সপ্তাহ জুড়ে রাখাইন নববর্ষ পালনে নানা অনুষ্ঠান পালিত হচ্ছে। রাখাইন নেতৃবৃন্দ জানান, আধিকাল থেকে রাখাইন নববর্ষ উপলক্ষে সামাজিক ভাবে সাংগ্রাইং পোয়ে উৎসব পালন করে আসছি। এবারও আনন্দ-উল্লাসে নতুন বছরকে বরণ করছে সবাই। আমরা একে অপরের গায়ে পবিত্র পানি ছিটানোর মধ্য দিয়ে পুরনো দিনের সব ব্যথা, বেদনা, হিংসা বিদ্বেষ ভুলে নতুনভাবে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখি। এটি আমাদের কাছে খুবই পবিত্র ও উৎসবের দিন।’

সাবেক সাংসদ জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি এথিন রাখাইন জানান, মাহা সাংগ্রাইং পোয়ে বা জলকেলি রাখাইনদের সামাজিক উৎসব। সময়ের আবর্তে এই উৎসব সার্বজনীূন রূপ নিয়েছে। শুক্রবার উৎসবের সমাপনী দিন। এ পর্যন্ত জলকেলি অনুষ্ঠান উদযাপনে কোন বিশৃঙ্খল ঘটনা ঘটেনি। এ জন্য জেলা পুলিশসহ প্রশাসনের কাছে বিশেষ কৃতজ্ঞ জানাচ্ছি।

কক্সবাজার পুলিশ সুপার এবিএম হোসেন ও সদর থানার ওসি ফরহাদ উদ্দিন খন্দকার বলেন, রাখাইনদের জলকেলি উৎসবে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

পাঠকের মতামত: