ঢাকা,রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

লামায় ভিটেমাটি ছাড়া শতবর্ষী রহিমা বেগম পাচ্ছে না; বয়স্ক ও বিধবা ভাতা

mail.google.comউথোয়াই মারমা,বান্দরবান প্রতিনিধিঃ
বান্দরবান লামা পৌরসভার ০৬ নং ওয়ার্ডে সাবেক বিলছড়ি গ্রামে। বাসিন্দা শতবর্ষী রহিমা বেগম আজো চোখে দেখেনি বয়স্ক ভাতা ও বিধবা ভাতা।

খবর পেয়ে লামা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা ছুটে যায় শতবর্ষী রহিমার সাক্ষাতকার নিতে। তিনি সাংবাধিকদের জানায় তার কষ্টে সংগ্রামের বেঁচে থাকার জীবন কাহিনী। অন্যের আশ্রয়ে বসবাস করে আসছি। স্বাধীনতাযুদ্ধের ২ বছর আগে আমার স্বামী কমরুদ্দিনের মৃত্যু হয়। এর পর ৪ ছেলে তিন মেয়ে নিয়ে কষ্টে সংসার চালিয়ে যায়। বয়স জানতে চাইলে বলে, আমার বয়স একশত বিশ বছর। কিন্তু ভোটার কার্ড অনুযায়ী তার বয়স বর্তমানে একশো বছর।

প্রবীন,আশ্রয়হীন আর শতবর্ষী রহিমা বেগম কে যখন জিজ্ঞানা করি বয়স্ক আর বিধবা ভাতা পাই কি না। তখন তিনি এক কথায় জবাব দেই না।

বয়স্ক ভাতা ও বিধবা ভাতা না পাওয়া প্রবীন রহিমা বেগম তখন সাংবাধিকদের শুনায় নিজের জীবন যুদ্ধের কাহিনী- ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উদয়পুরে রহিমা খাতুন ১৮ শ শতাব্দির শেষ দিকে জম্ম গ্রহন করেন। ৬০’র দশকে জাতিগত দাঙ্গা শুরু হলে হিন্দু-মুসলিম বদল হয়ে বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার কমলাপুর আসে। এর কিছুদিন পর স্বামী মারা যায়। আর কিছুদিন পরে ছেলে-মেয়েদের সাথে চট্টগ্রামের দোহাজারীতে এসে মানুষের বাসাবাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। সেখান থেকে লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালীতে, পরবর্তীতে সাবেক বিলছড়ি গ্রামে বসতি স্থাপন করেন। শতবর্ষী এই মহিলার নিজস্ব ভিটেমাটি নেই বললে চলে। সে তার মেয়ে কুলসুমার আশ্রয়ে একটি ভাঙ্গা ঘরে এতদিন কাটিয়েছেন। গেল বর্ষায় কুলসুমার জরাজীর্ণ ঘরটি বাতাসে পড়ে যায়। বর্তমানে ষাটোর্ধ্ব কুলসুমা ও তার মা-শতবর্ষী রহিমা বেগম, দু’জনেরই ঠাঁই মিলে নাতনীর ঝুপড়ি ঘরের বারান্দায়। আর কত বয়স হলে রহিমা বেগম বয়স্ক ভাতা পাবেন, এমন প্রশ্ন সকলের।

স্থানীয়দের জিজ্ঞাসা, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো গৃহহীনদের জন্য অনেক কাজ করার বুলি ছাড়ছেন। এসব শুধই কি বুলি? বিষয়টি সরকারের সংশ্লিষ্ট সকলে নজরে আনা দরকার। সে সাথে রাজনৈতিক নেতা ও আমলাদের বিষয়টি নিয়ে ভাবা উচিৎ।

শতবর্ষী রহিমা বেগমের গায়ে শীত বস্ত্র জড়িয়ে দিয়ে ৩১ জানুয়ারি বিকেলে লামা প্রেসক্লাবের সাধারাণ সম্পাদক মো.কামরুজ্জামান, প্রেসক্লাব কোষাধক্ষ নুরুল করিম আরমান, সদস্য এম বশিরুল আলম ও কাউন্সিলর মো: জাকির হোসেন অসহায় মহিলাটির সাথে দেখা করেন। এসময় লামা উপজেলা চেয়ারম্যান ও প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে তাকে ২টি শীত বস্ত্র (কম্বল) ও কাউন্সিলরের পক্ষ থেকে নগদ টাকা অনুদান প্রদান করা হয়।

পাঠকের মতামত: