টেকনাফ প্রতিনিধি ::
গত ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইনে সহিংস ঘটনায় যখন প্রাণ বাঁচাতে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয়ের জন্য আসে, তখন অন্যান্য মানবতাকামি মানুষের মত মোহাম্মদ ওমর ফারুক (৩০) নামের এক যুবক রোহিঙ্গাদের মুখে খাবার তুলে দিতে ব্যস্থ ছিলেন। কিন্তু, আজ দুই বছর পর এসে সেই রোহিঙ্গারাই তাকে গুলি করে হত্যা করেছে।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) রাত সাড়ে ১০টার দিকে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুরা এলাকায় তাকে গুলি করে হত্যা করে একদল রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী। নিহত যুবক ওই এলাকার মোহাম্মদ মোনাফ কোম্পানির ছেলে এবং হ্নীলা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড যুবলীগ ও জাদিমুরা এম আর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি। এসময় খবর পেয়ে নিহত যুবকের পরিবার লাশ আনতে গেলেও বাঁধা দেন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ‘ওইদিন রাতে নিহত যুবকের বাড়ির সামনে থেকে ফিল্ম স্টাইলে তুলে নিয়ে যান রোহিঙ্গা ডাকাত সর্দার সেলিমের নেতৃত্বে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী। এক পর্যায়ে তাকে পাহাড়ে নিয়ে গিয়ে গুলি করে হত্যা করে। খবর পেয়ে ফারুকের ভাই আমির হামজা ও উসমানসহ স্বজনেরা সেখানে গেলে সন্ত্রাসীরা তার মরদেহ আনতেও বাধা দেয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।
নিহতের ভাই আমির হামজা জানান, ‘রাখাইনে রোহিঙ্গাদের দমন নিপীড়ন শুরু হলে সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা অসহায় রোহিঙ্গাদের পাশে অন্যানদের মত আমার পরিবারও সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে আসছিল। এসব রোহিঙ্গাদের বিভিন্নভাবে সাহায্যের পাশাপাশি অসংখ্য মানুষের মুখে খাবার তুলে দেয়া হয়। বিশেষ করে আমার ভাই নিহক ওমর ফারুক রাতদিন পরিশ্রম করে অনেক রোহিঙ্গাদের সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। অথচ, আজ সেই রোহিঙ্গারা আমার ভাইকে গুলি করে হত্যা করেছে। খবর পেয়ে আমরা জাদিমুরা পাহাড়ের পাশে পড়ে থাকা লাশের জন্য গেলেও উগ্রবাদি একদল রোহিঙ্গা আমাদের লাশ আনতে বাঁধা দেয়। পরে পুলিশের সহায়তা লাশ নিয়ে আসা হয়’।
টেকনাফ থানার ওসি তদন্ত এবিএম এস দোহা জানিয়েছেন, খবর পেয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। রাতেই ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা করা হয়েছে। তবে কী কারণে এই হত্যাকানন্ড ঘটলো তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। এঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে’।
পাঠকের মতামত: