ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪

রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়া হোক : যুক্তরাষ্ট্র

rohikআন্তর্জাতিক ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্র চায়, রোহিঙ্গা মুসলিমদের ফেরাতে মিয়ানমার শর্ত নির্ধারণ করুক। রাখাইনে ধর্মীয় বিদ্বেষ ও সহিংসতা ছড়াতে ‘মানবিক বিপর্যয়’কে যাতে কেউ ব্যবহার করতে না পারে সেদিক বিবেচনা করেই এই শর্ত নির্ধারণের কথা বলছে দেশটি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্যাম্প প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা এই তথ্য জানিয়েছেন। ভারতীয় সরকারি সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়াকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে শর্ত আরোপ করে হলেও রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তনে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান জানিয়ে দেন তিনি।

গত আগস্টের শেষের দিকে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে দেশটির সেনাবাহিনীর কঠোর অভিযানে অন্তত ছয় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়েছে। মিয়ানমার এই রোহিঙ্গাদের দেশটির জাতিগত সংখ্যালঘু হিসাবে স্বীকার করে না। এর পরিবর্তে নেইপিদো বলছে, তারা বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অভিবাসী; যারা রাখাইনে বসবাস করছে।

‘এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মানবিক ও নিরাপত্তা উদ্বেগের বিষয়। কারণ সেখানে এমন মানুষ আছে যারা এই মানবিক বিপর্যয়কে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর উপায় হিসাবে ব্যবহার করতে পারে; তারপর সহিংসতা উসকে দিতে পারে।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মার্কিন ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘সুতরাং শরণার্থীদের ফেরাতে শর্ত নির্ধারণ করাটা মিয়ানমারের জন্য আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’ ভযাবহ মানবিক ভোগান্তি লাঘবে এবং শিশুদের শিক্ষা ও তাদের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করার জন্য সব ব্যবস্থা করা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।

এদিকে, রোববার যুক্তরাষ্ট্র সরকার ২৫ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া রাখাইন সঙ্কটে জীবন-রক্ষাকারী জরুরি সহায়তার জন্য প্রায় ৪ কোটি মার্কিন ডলার সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর বলছে, সর্বশেষ এই অর্থসহ চলতি বছরে মিয়ানমারের উদ্বাস্তুদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের মানবিক সহায়তা ১০৪ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের এই সহায়তা রাখাইন সঙ্কটে মানবিক ত্রাণ কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনার (ইউএনএইচসিআর), জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ), আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) ও বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) কাছে হস্তান্তর করা হয়।

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর বলছে, আমরা মারাত্মক এই মানবিক সঙ্কটে বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করছি। মানুষের কাছে সহায়তা পৌঁছাতে যথাযথ ব্যবস্থা নিশ্চিত করায় বাংলাদেশ সরকারের ধারাবাহিক পদক্ষেপের প্রতি সম্মান জানাচ্ছি।

রাখাইন প্রদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে মিয়ানমার সরকারের অঙ্গীকার শিগগিরই বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। রোহিঙ্গাদের নিরাপদে মর্যাদার সঙ্গে রাখাইনে ফেরার অনুমতি দিতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর।

পাঠকের মতামত: