ঢাকা,সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

রোহিঙ্গাদের ঠেকাতে অবাধ চলাচল বন্ধসহ ১৪ সুপারিশ

নিউজ ডেস্ক ::  ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গাদের অন্তর্ভুক্তি ঠেকাতে তাদের অবাধ চলাচল বন্ধসহ ১৪টি সুপারিশ উঠে এসেছে। এসব সুপারিশের মধ্যে অন্যতম হল- রোহিঙ্গাদের কেউ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হলে তাদেরকে আগামী নির্বাচনগুলোতে অযোগ্য ঘোষণা করা, পার্বত্য এলাকায় ভোটার হতে গ্রাম কারবারি বা হেডম্যানের প্রত্যয়ন বাধ্যতামূলক করা ও রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর করা।

বুধবার বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে ভার্চুয়াল সভায় এসব সুপারিশ উঠে আসে। ওই সভায় জন্ম নিবন্ধন, নাগরিক সনদ, ওয়ারিশ সনদসহ বিভিন্ন সনদ দেয়ার ক্ষেত্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির ঘটনায় জড়িত জনপ্রতিনিধি, কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ভোটার তালিকা আইন, ২০০৯ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার কথাও স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়। বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এ বিষয়ে সভার সভাপতি ও নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বলেন, একজনকে ভোটার করার ক্ষেত্রে যেসব কাগজপত্র বা ডকুমেন্ট নেয়া হয় তার প্রায় সবই স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন সংস্থা দিয়ে থাকে। আমরা জনপ্রতিনিধিদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি, তারা যেন সঠিক ব্যক্তিকে নিরপেক্ষভাবে সনদ দেন। কোনোভাবেই যেন রোহিঙ্গাদের নাগরিক বা অন্য সনদ না দেন সেসব বিষয়েও বলেছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় প্রবেশ ঠেকাতে আমাদের পদ্ধতিগত কোনো ভুল আছে কি না, সামনের দিনগুলোতে করণীয় কী সেসব বিষয়েও পরামর্শ নিয়েছি।

জানা গেছে, রোহিঙ্গাদের অবৈধভাবে বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা প্রাপ্তি ও জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার লক্ষ্যে এ বৈঠক করা হয়। এতে চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি, স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারাও অংশ নেন। এতে বিভিন্ন মহলের ১৪টি প্রস্তাব ও সুপারিশ উঠে আসে। বৈঠকে জানানো হয়, ২০১৭ সালে একযোগে আসা ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গার আঙ্গুলের (বায়োমেট্রিক) ছাপ নেয়া হয়।

আঙ্গুলের ছাপের ডাটাবেজ ইসিতে রয়েছে। এসব রোহিঙ্গা ভোটার হওয়ার চেষ্টা করলে তাদেরকে আঙ্গুলের ছাপ ডাটাবেজের সঙ্গে যাচাই করে শনাক্ত করা হচ্ছে। কিন্তু ২০১৭ সালের আগে বা পরে আসা আরও বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গার আঙ্গুলের ছাপ নির্বাচন কমিশনের কাছে নেই। এসব রোহিঙ্গা ভোটার হওয়ার চেষ্টা করলে তাদের আঙ্গুলের ছাপ মেলানো যায় না। এসব রোহিঙ্গার আঙ্গুলের ছাপ সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে সংগ্রহের সুপারিশ করা হয়।

সভায় অংশ নেয়া একাধিক কর্মকর্তা নাম গোপন রাখার শর্তে বলেন, একজন ব্যক্তির ভোটার হওয়ার ক্ষেত্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কী কী দায় ও ভূমিকা রয়েছে সেটি তাদের স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে। তাদেরকে বলা হয়েছে, তাদের দেয়া সনদ অনুযায়ী ভোটার করা হয়। রোহিঙ্গারা ভোটার হলে এর দায় সংশ্লিষ্ট স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে নিতে হবে। আগামীতে জন্ম-নিবন্ধন সনদ দেয়ার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার জন্য বৈঠকে সুপারিশ করা হয়।

বৈঠকে অন্য সুপারিশের মধ্যে আছে- নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ৩২টি বিশেষ এলাকার কাগজপত্র আরও কঠোরভাবে যাচাই-বাছাই করতে হবে। প্রয়োজনে এসব কাগজপত্র প্রত্যয়ন করে নিতে হবে। দুর্গম এলাকায় ভোটার করার ক্ষেত্রে স্থানীয় গ্রাম কারবারি বা হেডম্যানের প্রত্যয়ন নিতে হবে। -যুগান্তর

পাঠকের মতামত: