ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে মুখ খুললেন সু চি

অনলাইন ডেsuci স্ক :::: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারের দমন-পীড়ন এবং চলমান রোহিঙ্গা সংকটের কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দুষলেন দেশটির প্রধান অং সান সু চি। সেই সঙ্গে তিনি এও দাবি করেন, পরিস্থিতি বর্তমানে সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সিঙ্গাপুর সফরকাল চ্যানেল নিউজএশিয়ার সঙ্গে সাক্ষতকারে এসব কথা বলেন শান্তিতে নোবেল জয়ী সু চি। সর্বশেষ রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে এই প্রথম মুখ খুললেন মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টাপ্রধান সু চি। সমস্যাটা নিয়ন্ত্রণের অনুপযোগী কি না জানতে চাইলে সু চি বলেন, না। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছি।

161203-Rohinga 1আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যদি সারাক্ষণ নেতিবাচক কথা না বলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এবং দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়তে সহযোগিতা করে, তাহলে সেটিকে অভিনন্দন জানাবো। রাখাইনে দুই সম্প্রদায়ের (রোহিঙ্গা মুসলিম ও বৌদ্ধ) মধ্যে সম্পর্ক আরও ভালো করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাহায্য প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। মিয়ানমারের জাতিগত জটিলতার বিষয়টি বিবেচনায় নেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, বিশ্ববাসীর এটা ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে সেখানে সামরিক অভিযান শুরু হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলার পর, যার জন‌্য মুসলিম বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দায়ী করেছে সরকার।

161203-Rohinga 2সু চি বলেন, ‘এটা খুব সংবেদনশীল ও সূক্ষ্ম বিষয়। শুধু যে মুসলিমরাই উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত, তা নয়। রাখাইন সম্প্রদায়ও একই রকম চিন্তিত, রাজ্যের জনসংখ্যায় তাদের উপস্থিতি শতাংশের হিসাবে ক্রমশ কমে আসছে। আর দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্পর্ক ভালো নেই—এই সত্য আমরা এড়িয়ে যেতে পারি না। পাশাপাশি পুলিশচৌকিতে গত ৯ অক্টোবর হামলা হয়েছিল—এটাও তো সত্যি।’

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অভিযোগ ভিত্তিহীন নয়, সেটা মনে করিয়ে দেওয়ার পর সু চি বলেন, ‘আমি সেটা জানি। আমি বলছি না যে ওখানে কোনো সমস্যা নেই। তবে জনগণ যদি সমস্যাগুলো বুঝতে পারে এবং সমাধানের দিকে বেশি গুরুত্ব দেয়, ভালো হবে। অতিরঞ্জিত করলে বরং সমস্যাটা বাস্তবতার চেয়ে আরও খারাপ দেখাবে।’

সু চি দাবি করেন, রাখাইনের পরিস্থিতি ইতিমধ্যেই তাঁর সরকার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত হওয়ার পথে। শুধু মুসলমানরাই উদ্বেগ আর আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে তা নয়, সেখানকার রাখাইন জাতিগোষ্ঠীও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছে।  

রোহিঙ্গাদের বিষয়ে নীরব থাকায় মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রী সু চির সমালোচনা হচ্ছে নানা মহল থেকে। তার নোবেল শান্তি পুরস্কার ফিরিয়ে নেওয়ার দাবিও তোলা হয়েছে।

এর আগে ২০১২ সালে রাখাইনে বৌদ্ধ ও রোহিঙ্গা মুসলিমদের মধ‌্যে সংঘর্ষে শতাধিক মানুষ নিহত হওয়ার পর সেখানে আলাদাভাবে বসবাস করে দুই সম্প্রদায়।

কয়েক প্রজন্ম ধরে মিয়ানমারে বসবাস করে এলেও দেশটির ১১ লাখের মতো রোহিঙ্গার অধিকাংশকেই নাগরিকত্ব দেয়া হয়নি। মিয়ানমারের আইনে যে ১৩৫টি নৃ গোষ্ঠীর স্বীকৃতি আছে তার মধ‌্যে রোহিঙ্গারা নেই। বৌদ্ধদের অধিকাংশই তাদের ‘বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অবৈধ অভিবাসী’ বিবেচনা করে । খুলনানিউজ.কম

পাঠকের মতামত: