এম.এ আজিজ রাসেল ::
প্রথম রাউন্ডের কলেরা টিকাদান কর্মসূচী শুরু হচ্ছে আজ রবিবার। এবার ৬ মে থেকে ১৩ মে পর্যন্ত ১ লক্ষ ৩৫ হাজার স্থানীয় জনগোষ্ঠীসহ মোট ৯ লক্ষ ৮৪ হাজার ৯০৫জন মানুষকে দেয়া হবে কলের টিকা। ক্যাম্পেইনে ২০১৭ সালের অক্টোবরের পরে বাংলাদেশে আগত ১ বছরের বেশি বয়সের রোহিঙ্গাদের ১ম ডোজ টিকা দেয়া হবে। ২০১৭ সালের অক্টোবরের পূর্বে আগত ৫ বছরের বেশি বয়সের রোহিঙ্গাদের দেয়া হবে ২য় ডোজ। ১ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশু ইতোমধ্যে ২য় ডোজ প্রাপ্তদের কলেরা টিকা দেয়া হবে না। এছাড়া রোহিঙ্গাদের সাথে মিশে যাওয়া স্থানীয় ১ বছরের বেশি বয়সীদের ১ম ডোজ টিকা দেয়া হবে। একইভাবে স্থানীয় ১ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশু ইতোমধ্যে ২য় ডোজ প্রাপ্তদের কলেরা টিকা দেয়া হবে না। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত টিকাদান কেন্দ্র খোলা থাকবে। আজ জামতলী সিভিল সার্জনের নিজস্ব ক্যাম্পে টিকাদানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে।
এ উপলক্ষে ৫ এপ্রিল শনিবার ইপি আই স্টোর রুমের হলরুমে প্রেস ব্রিফিং করা হয়। কক্সবাজার সিভিল সার্জন ডাঃ আবদুস সালামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, কলেরা খাদ্য ও পানিবাহিত একটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ। সাধারণত একজন আক্রান্ত রোগীর মলের মাধ্যমে এই জীবাণূ পরিবেশে ছড়ায় এবং খাবার ও পানিতে ছড়িয়ে পরে। রোগাক্রান্তরা অল্প সময়ে ডায়রিয়ার কারণে তীব্র পানি শুণ্যতায় আক্রান্ত হয়। সময়মত চিকিৎসা না পেলে এই রোগে আক্রান্ত মানুষ মৃত্যুবরণ করে। রোহিঙ্গারা এই দেশে আসার পর উখিয়া ও টেকনাফে জরুরী অবস্থায় বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচী (ইপিআই) ইতোমধ্যে হাম-রুবেলা, ডিপথেরিয়া, ধনুস্টংকার, কলেরাসহ বিভিন্ন রোগের টিকা দেয়া হয়েছে। এবার সরকার পুনরায় রোহিঙ্গা ও স্থানীয় ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য কলেরা টিকা প্রদানের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। যার অংশ হিসেবে রবিবার থেকে কলেরা টিকা ক্যাম্পেইন শুরু হতে যাচ্ছে। প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও জানানো হয়, প্রতি ৫০০-৬০০ জনগোষ্ঠীর জন্য একটি অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রে একটি টিম কাজ করবে। উখিয়ায় একজন মাঝিসহ ৬ সদস্য বিশিষ্ট ১৭০টি টিকাদান টিম ও টেকনাফে একই সদস্য বিশিষ্ট ৭৫টি টিম কাজ করবে। এতে মোট ১২শ’ স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালনের কথা রয়েছে। রেজিষ্ট্রেশন স্থান ও রেশন স্থানেও প্রতিদিন টিকা প্রদান করা হবে। আগামী জুন ও জুলাই মাসে দ্বিতীয় রাউন্ডে ২য় ডোজ দেয়া হবে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (ইপিআই) এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডাঃ মোঃ আলতাফ হোসেন, ইউনিসেফ এর চীফ ফিল্ড অপারেশন নাকিব উল্লাহ সাকি, ইউনিসেফ কনসালটেন্ট ডাঃ হাবিব আবদুল্লাহ সোহেল, এম (আইভিড) ডব্লিউএইচও’র ডাঃ রাজেন্দ্র বহোরা, ডিজি হেলথ কো-অপারেশন সেল এর ডেপুটি চিফ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডাঃ মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ, উখিয়া ইউএইচ ও এফপিও’র ডাঃ আবদুল মান্নান, টেকনাফ ইউএইচ ও এফপিও’র ডাঃ সুমন বড়–য়া, ইউনিসেফ এর কনসালটেন্ট ডাঃ মাঈনুল হাসান, ডিজিএইচএস’র কো-অর্ডিনেশন সেল ডাঃ মোঃ আব্দুর রহিম, ইউনিসেফ ডাঃ তাজুল ইসলাম বারী, আইসিডিডিআরবি’র সিনিয়র সায়েন্সটিস্ট ডাঃ ফেরদৌসী কাদ্রী, কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিসের কর্মকর্তা ডাঃ রঞ্জন বড়–য়া রাজন ও ডাঃ জামশেদুল হকসহ ডব্লিউএইচও, ইউনিসেফ, আইসিডিডিআরবি, এফডিএমএন-এইচআই, সিভিল সার্জন অফিসের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ।
পাঠকের মতামত: