ঢাকা,বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪

রামু উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলমের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ

বার্তা পরিবেশক ::
ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বেচ্ছাচারিতা, স্বজনপ্রীতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে রামু উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলমের বিরুদ্ধে। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, রিয়াজ উল আলম বিগত রামু উপজেলা নির্বাচনে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আলী হোসেনের কাছ থেকে বিপুল সংখ্যক ভোটে পরাজিত হন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস উপজেলা চেয়ারম্যান আহমেদূল হক চৌধুরী মৃত্যু বরন করলে অপশক্তি ও অনিয়মের  মাধ্যমে রিয়াজ উল আলম উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে রামুর ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায়ের সূচনা হয় ।
চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম ব্যক্তিগত জিবনে একজন ব্যবসায়ী। উপজেলার দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে তার ব্যবসা ও জীবন যাত্রা যেন আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ। ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজস্ব একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সরকারীভাবে আসা রামুর উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কাজ একচেটিয়া নিয়ন্ত্রন করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। উপজেলা পরিষদকে পরিনত করেছেন যেন একটি ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান। বিশেষ করে গ্রামীন উন্নয়নে আসা সরকারী বরাদ্ধ টিআর কাবিখার প্রায় নাম সর্বস্ব ভূয়া প্রকল্প কমিটি তৈরী করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করছে। যার ফলে চরমভাবে ব্যাহত হয়ে রামুর উন্নয়ন কর্মকান্ড।
রামুর সবচেয়ে আলোচিত হাইটুপি ভূতপাড়া ক্রস ওয়ে ব্রিজটি প্রায় এক কোটি টাকার একটি প্রকল্প। চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে  উক্ত ক্রস ওয়ে ব্রিজের কাজ নিজের অধিনে নিয়ে অত্যন্ত নিম্মমানের  র্নিমান সামগ্রী ব্যবহার করে লোক দেখানো ও দায়সারাভাবে ব্রিজের কাজ সম্পন্ন করেন। যার প্রেক্ষিতে নির্মানের দুই মাস যেতে না যেতেই বৃষ্টির জোয়ারে  ক্রস ওয়ে ব্রিজটি সম্পূর্ন বিলীন হয়ে যায়। বিলীন হওয়া ক্রস ওয়ে ব্রিজের ভংনাংশ থেকে লোহার পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহারের চিত্র ফুটে উঠে বলেও এলাকাবাসীর অভিযোগ। পরবর্তীতে স্থানীয় এলাকাবাসী ঐ জায়গার নাম রিয়াজু ভাঙ্গা বলে নামকরণ করেন। উক্ত ব্রিজটির কারনে রামুর কাউয়ারখোপ, কচ্ছপিয়া ও গর্জনিয়া ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক জনগন অত্যন্ত র্দূভোগের শিকার হচ্ছে।
রামুর জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের নন্দাখালী এলাকায় বিএডিসির অর্থায়নে প্রায় দেড় কোটি টাকার খাল খনন, বেড়িবাধঁ ও ব্রিজের কাজটিও চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলমের নিয়ন্ত্রনে হয়, যার অবস্থাও প্রায় একি রকম।  নির্মানের এক মাসের মাথায় উক্ত বেড়িবাধঁ ও ব্রিজ ভেঙ্গে পড়ে। এলাকাবাসীর অভিযোগ চেয়ারম্যান নিজের ইচ্ছে অনুযায়ী রাতের আধারে নিম্মমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করে ব্রিজের কাজ শেষ করে। যার ফলে অল্পদিনের মধ্যে ব্রিজটি ভেঙ্গে পড়ে। প্রায় একই চিত্র রামুর ১১ ইউনিয়নের।
রামুর উত্তর ফতেখাঁরকুল ও ওমখালী প্রাইমারী স্কুলের অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ অসম্পূর্ন রেখে নিজের প্রভাব খাটিয়ে ফাইনাল বিল উত্তোলন করে ফেলে। অধ্যবদি ঐ সব স্কুলের অসম্পূর্ন কাজগুলি সমাপ্ত করেননি। এনিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী ও অবিভাবক মহলের মাঝে চাঁপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। উপজেলা কম্পাউন্ডে একটি বাড়ি একটি খামারে জন্য আসা দশ লক্ষ টাকার ভবন নির্মানের একটি প্রকল্প নিজের প্রভাবে টেন্ডার বিহীন নিজস্ব লোক দিয়ে নিম্মমানের ও দায়সারা কাজ করে সরকারী টাকা আত্মসাত করেছে। এছাড়া জোয়ারিয়ানালায় ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান(বিকেএসপি)র মাটি ভরাট থেকে শুরু করে অবকাঠামোর নির্মানের কাজ সাব কন্ট্রাকের মাধ্যমে নিজের ইচ্ছে মত ভাগবাটোয়ারা ও হরিলুটের বিষয়টিও মানুষের মুখে মুখে। দায়িত্ব গ্রহনের বিগত দিনগুলোতে চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম এলাকার মানুষের আশার প্রতিফলন ঘটাতে ব্যর্থ হয়েছে। ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে উন্নয়নের নামে ব্যবসা করে সরকারী কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে নিজের আখের গুছিয়েছে। রামু এগার ইউনিয়নের  মানুষের কাছে তার আসল চরিত্র উন্মোচন হয়েছে। রামুর মানুষ এবার পরিবর্তন চায়, কোন দূর্নীতি পরায়ন, ও উন্নয়নের নামে সরকারী টাকা আত্মসাতকারীকে ভোট না দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে রামুর এগার ইউনিয়নের মানুষ।
এ ব্যাপারে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলমের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক) ও প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের যথাযত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন রামুর এগার ইউনিয়নরে উন্নয়ন বঞ্চিত জনসাধারন।
এ ব্যাপারে রামু উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজুল আলমের যোগাযোগের চেষ্টা করেও তিনি মুঠোফোনের কল না ধরায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

পাঠকের মতামত: