বিনোদন ডেস্ক ::
এটিএন বাংলা ও এটিএন নিউজের চেয়ারম্যান ড. মাহফুজুর রহমান। তার বক্তব্য মানেই নতুন আলোচনা, নতুন কোনো বিতর্ক। সম্প্রতি নিজের চ্যানেলেরই একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি নায়িকা পপিকে ‘বেয়াদব মেয়ে’ ও ‘হারামজাদি’ বলে মন্তব্য করেন। এরপর থেকেই বিষয়টি টক অব মিডিয়ায় পরিণত হয়েছে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে এটিএন বাংলার কার্যালয়ে গত সোমবার সন্ধ্যায় ‘সময় ও অসময়ের গল্প’ সিরিজ নাটকের সংবাদ সম্মেলনে পপি সম্পর্কে নিজের বক্তব্যে মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘আমি কোনো খুঁত দেখতে পারি না। এটিএন বাংলায় কোনো গান তৈরি হলে আমি নিজে থাকি এর সঙ্গে। প্রয়োজনে নিজে সুর করে দেই যদি সুরটা ভালো না লাগে।
কখনো কখনো মিউজিকও করি আমি। এটা আমার একটি অভ্যাস। টুকটাক অনেক কিছুই করতে পারি। আমি মেকাপও করতে পারি। এইতো কয়েকদিন আগে এফিডিসিতে একটি শুটিং ফ্লোরে পপির মেকআপ ঠিক করে দিলাম।
কিন্তু বেয়াদব মেয়েটা সেই মেকাপ ঠিক করার ছবি সাংবাদিকদের দিয়েছে, নিউজ করিয়েছে আমি নাকি তার মেকআপম্যান। এটা খুবই অন্যায় করেছে সে। যদিও পরে ভুল বুঝতে পেরেছে। কিন্তু আমি মাফ করিনি। বলেছি তুমি আমাকে অপমান করেছ সবাই দেখেছে। তুমি মাফ চাইলেও সবাইকে জানিয়ে চাইতে হবে। তুমি মাফ চাইবে আমি চ্যানেলে সেটা দেখাবো সবাইকে।’
ক্ষোভ নিয়ে মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘এই মেয়ের জন্য কী না করেছি আমি। সবসময় নতুনদের সুযোগ দেয়ার চেষ্টা করি। পপি যখন নতুন ছিলো তাকেও অনেক সুযোগ দিয়েছি। সেই পপি যদি আমাকে তার মেকআপম্যান বলে সেটা অপমানের। ওই ‘হারামজাদি’ যেন এটিএন বাংলার ত্রিসীমানায় না আসতে পারে।’
এই বক্তব্য সম্বলিত কয়েকটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে অনলাইনে। তার প্রেক্ষিতে পপির বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। মাহফুজুর রহমানের কাছে মাফ চাওয়ারও কোনো কারণ নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।
‘কুলি’ চলচ্চিত্র দিয়ে সিনেমায় নাম লেখানো এই চিত্রনায়িকা বলেন, ‘মাহফুজুর রহমান স্যার যে অভিযোগ এনেছেন তা সম্পূর্ণই ভিত্তিহীন। উনাকে কেউ হয়তো ভুল বুঝিয়েছে আমার উপর ক্ষিপ্ত করে তোলার জন্য। আমি তাকে সবসময়ই শ্রদ্ধা করি। উনার সঙ্গে আমার অনেক কাজ করা হয়েছে।
আমি কেন স্যারকে অপমান করে আমার মেকআপম্যান বলবো! তিনি স্নেহ করে আমাকে সেদিন মেকআপ ঠিক করে দিয়েছিলেন।
সেসময় সেখানে অনেক সাংবাদিক ও আরও লোকজন উপস্থিত ছিলেন। তারা সেই মেকাপের ছবি তুলেছেন। সেটা দিয়ে নিউজ করেছেন। আমি তো কাউকে বলিনি নিউজ করতে। কেউ আমাকে কিছু বলেওনি।
ব্যাপারটা আলোচনায় আসার দু-তিনদিন পরে আমি যখন নিউজগুলো দেখলাম বুঝতে পারলাম মজা করেই পুরো ঘটনাটা সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন সাংবাদিকেরা। কিন্তু কিন্তু কিছু অতি উৎসাহীরা বাজে শিরোনাম দিয়ে বাজেভাবে বিষয়টাকে হাজির করেছেন। খবর পেয়েছি অনেকে নাকি ফেসবুকে ছবি দিয়েও আজেবাজে কথা লিখেছেন। স্যারের তো এগুলো বুঝতে হবে।
তবে বিষয়টাকে নোংরাভাবে ছড়িয়েছে কিছু বাইরের লোক যারা সেখানে ছিলো ওইদিন। স্যারের মেকআপ করার দৃশ্য ভিডিও করে সেগুলো ইউটিউবে ছেড়ে দিয়েছে স্যারকে আমার মেকাপম্যান বলে। এই দোষ তো আমার নয়।
আমি স্যারকে বলবো উনি যেন পুরো ব্যাপারটার খোঁজ নেন। আমি একজন অভিনেত্রী হয়ে তার মতো সম্মানীয় মানুষকে কখনোই অপমান করবো না স্যারের এটা বোঝা উচিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু আমি কোনো ভুল করিনি তাই ক্ষমা চাওয়ারও কোনো কারণ নেই। ড.মাহফুজুর রহমান স্যারের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে বলে প্রত্যাশা করছি। তার মতো প্রতিষ্ঠিত মানুষের উচিত নারীদের ব্যাপরে আরও শ্রদ্ধাশীল থাকা।’
ঘাঁটাঘাঁটি করে ব্যাপারটা দাঁড়ালো, একজন চ্যানেল মালিক (বাংলাদেশে স্যাটেলাইট চ্যানেলের পথিকৃৎ ) ও চলচ্চিত্র প্রযোজকের স্নেহমাখা সাদামাটা একটা আগ্রহ ট্রল আর বিতর্কের হাত ধরে বিব্রতকর পরিস্থিতির জন্ম দিলো। যেখানে ভুল বুঝে অপমানিত হয়ে ড. মাহফুজুর রহমান ক্ষেপে আছেন নায়িকা পপির উপর। আর নায়িকা পপি বিব্রত হয়ে আছেন মাহফুজুর রহমানের আগ্রহ এবং অতি উৎসাহীদের রঙমাখা উপস্থাপনে।
পাঠকের মতামত: