ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৪

মে দিবস ও ইতিকথা

্র্র্র্র্র্র্র্রমোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি ঃ

১লা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস যা সচরাচর মে দিবস নামে পরিচিত। প্রতি বছর ১লা মে তারিখে বিশ্বব্যাপী দিবসটি উদযাপিত হয়। এটি আন্তর্জাতিক শ্রমিক আন্দোলন ও বামপন্থী আন্দোলনের উদযাপন দিবস। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শ্রমজীবী মানুষ এবং শ্রমিক সংগঠন সমূহ রাজপথে সংগঠিতভাবে মিছিল ও শোভাযাত্রার মাধ্যমে দিবসটি পালন করে থাকে। বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশে ১লা মে জাতীয় ছুটির দিন। আরো অনেক দেশে এটি বেসরকারি ভাবে পালিত হয়।

১৮৮৬ সালে আমোরিকার শিকাগো শহরের ‘হে মার্কেটের’ ম্যাসাকার শহীদদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করে দিবসটি পালিত হয়। সেদিন দৈনিক আটঘন্টার কাজের দাবীতে শ্রমিকরা ‘হে মার্কেটে’ জমায়েত হয়েছিল। তাদেরকে ঘিরে থাকা পুলিশ শ্রমিকদের ওপর গুলীবর্ষণ শুরু করে। ফলে প্রায় ১০-১২জন শ্রমিক ও পুলিশ নিহত হয়। ১৮৮৯ সালে ফরাসী বিপ্লবের শতবার্র্ষিকীতে প্যারিসে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক-এর প্রথম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ১৮৯০ সাল থেকে শিকাগো প্রতিবাদের বার্ষিকী আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন দেশে পালনের প্রস্তাব করেন রেমন্ড লাভিনে। ১৮৯১ সালের আন্তর্জাতিকের দ্বিতীয় কংগ্রেসে এই প্রস্তাব আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হয়। এর পরপরই ১৮৯৪ সালের মে দিবসের দাঙ্গার ঘটনা ঘটে। পরে ১৯০৪ সালে আমস্টারডাম শহরে অনুষ্ঠিত সমাজতন্ত্রীদের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এই উপলক্ষে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়। প্রস্তাবে দৈনিক ৮ঘন্টা কাজের সময় নির্ধারণের দাবী আদায়ের জন্য এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বিশ্বজুড়ে পয়লা মে তারিখে মিছিল ও শোভাযাত্রা আয়োজনের সকল সমাজবাদী গণতান্ত্রিক দল এবং শ্রমিক সংঘের (ট্রেড ইউনিয়ন) প্রতি আহবান জানানো হয়। সেই সম্মেলনে শ্রমিকদের হতাহতের সম্ভাবনা না থাকলে বিশ্বজুড়ে সকল শ্রমিক সংগঠন মে’র ১তারিখে বাধ্যতামূলকভাবে কাজ না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। অনেক দেশে শ্রমজীবী জনতা মে মাসের ১ তারিখকে সরকারি ছুটির দিন হিসাবে পালনের দাবী জানায় এবং অনেক দেশেই এটা কার্যকরী হয়। দীর্ঘদিন ধরে সমাজতান্ত্রিক, কমিউনিষ্ট এবং কিছু কট্টর সংগঠন তাদের দাবী জানানোর জন্য মে দিবসকে মূখ্য দিন হিসাবে বেছে নেয়। কোন কোন স্থানে শিকাগোর হে মার্কেটের আত্মত্যাগী শ্রমিকদের স্মরণে আগুনও জ্বালানো হয়ে থাকে। পূর্বতন সোভিয়েত রাষ্ট্র, চীন, কিউবাসহ বিশ্বের অনেক দেশেই মে দিবস একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন। সে সব দেশে এমনকি এ উপলক্ষে সামরিক কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়। আমেরিকা ও কানাডাতে অবশ্য সেপ্টেম্বর মাসে শ্রম দিবস পালিত হয়।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমাদের বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি সরকারী ছুটিসহ পালিত হয়। রাজধানীসহ সারা দেশের বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন/ফেডারেশন ও সামাজিক রাজনৈতিক সংগঠন মে দিবস পালন করে থাকে। শ্রমিকে ন্যায্য দাবী, তাদের অধীকার ও মর্যাদাকে সম্মান ও মানকে সমুন্নত রাখতে প্রতি বছর ১লা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস বা মহান মে দিবসে র‌্যালি, শোভাযাত্রা, মিছিল-সমাবেশসহ শ্রমিক গণজমায়েত করে তাদের অধীকার ও দাবী-দাওয়া তুলে ধরা হয়। ভারতে প্রথম মে দিবস পালিত হয় ১৯২৩ সালে।

পাঠকের মতামত: