অনলাইন ডেস্ক ::
ভারতকে জব্দ করতে প্রতিবেশি দেশগুলিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে চীন। দিল্লির আপত্তি অগ্রাহ্য করে ইতিমধ্যে পাকিস্তানের গ্বাদরে বন্দর গড়েছে তারা। এবার মিয়ানমারকে নিজেদের ছত্রছায়ায় আনতে উদ্যোগী হয়েছে চীন। কয়াকপিউ-তে বঙ্গোপসাগর উপকূল বরাবর গভীর সমুদ্রে বন্দর গড়তে যাচ্ছে তারা।
বন্দর গড়া নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে কথা চলছিল দু’দেশের মধ্যে। নানা কারণে এতদিন প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়নি। তবে বৃহস্পতিবার তাতে সিলমোহর পড়েছে। আং সান সু’চি সরকারের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে বেইজিংয়ের। চুক্তি অনুযায়ী বন্দর তৈরির ৭০ শতাংশ খরচ বহন করবে বেইজিং। বাকি ৩০ শতাংশ দেবে মিয়ানমার সরকার।
মিয়ানমারে বন্দর গড়ে উঠলে বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পের আওতায় দু’দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক করিডর গড়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। পাইপলাইনের মাধ্যমে চীনের ইউনান প্রদেশ এবং মায়ানমারের কয়াকপিউ ও কুনমিংয়ের মধ্যে ইতিমধ্যেই প্রাকৃতিক গ্যাস ও তৈল সরবরাহ জারি রয়েছে।
চীনা রাষ্ট্রীয় সংবাদপত্র ‘দ্য গ্লোবাল টাইমস’-এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘‘২০১৫ সাল থেকে বন্দর তৈরি নিয়ে কথা চলছিল। এতদিন পর চুক্তি স্বাক্ষরিত হল। বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্প নিয়ে এতদিন কম সমালোচনা হয়নি। এতে অন্য রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব নষ্ট হচ্ছে বলে দাবি করা হয়। তা সত্ত্বেও এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হল। যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’’
মধ্যযুগের সিল্ক রুটের অনুকরণে বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্প গ্রহণ করেছে চীন। যাতে সড়ক ও সমুদ্রপথে এশিয়া, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের সঙ্গে বাণিজ্যে সুবিধা হয়। শুরু থেকেই এই প্রকল্পের বিরোধিতা করে এসেছে ভারত। চতুর্দিক দিয়ে ভারতকে ঘিরে ফেলতেই চীন এমন প্রকল্প গড়ছে বলে অভিযোগ দিল্লির।
কারণ ইতিমধ্যেই পাকিস্তানের গ্বাদরে বন্দর গড়েছে বেইজিং। অধিকৃত কাশ্মীরের উপর দিয়ে অর্থনৈতিক করিডর নিয়ে গিয়েছে। সেই পথে বাস পরিষেবাও চালু করেছে। শ্রীলঙ্কার দক্ষিণ প্রান্তে হামবানতোতা বন্দর তৈরির কাজও চলছে। এ ছাড়া বাংলাদেশের চট্টগ্রামে একটি বন্দর তৈরিতেও আর্থিক সাহায্য দিচ্ছে তারা। তাই মিয়ানমারে চীনের বন্দর গড়ার খবরে নড়েচড়ে বসেছে নয়াদিল্লি। রোহিঙ্গা ইস্যুতে সম্প্রতি প্রতিবেশি দেশের সঙ্গে তিক্ততা বেড়েছে ভারতের। যে কারণে চীনের সঙ্গে তাদের বন্ধুত্বে উদ্বিগ্ন ভারতীয় কূটনীতিকরা। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
পাঠকের মতামত: