ডেস্ক নিউজ ::
মহেশখালীর মাতারবাড়িতে বাণিজ্যিক বন্দর নির্মাণের উপযোগী বলে চূড়ান্ত সমীক্ষা রিপোর্ট দিয়েছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো অপারেশন এজেন্সী-জাইকা। চট্টগ্রাম বন্দরের কাছে গত সপ্তাহে জমা দেয়া ড্রাফট ফাইনাল রিপোর্টে বলা হয়েছে এখানে অন্তত ১৬ দশমিক ৩ মিটার গভীরের জাহাজ অনায়াসে প্রবেশ করতে পারবে। এ অবস্থায় বন্দরের ডিটেইল ডিজাইনের জন্য জাপান সরকারের সাথে ৩শ কোটি টাকার একটি ঋণ চুক্তিও সম্পন্ন হয়েছে। তবে ব্যাকআপ সাপোর্ট নিশ্চিতের পরেই বন্দর নির্মাণের উপর গুরুত্ব দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
কক্সবাজার জেলার মহেশখালীতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য আনা কয়লাবাহী জাহাজ ভেড়ানো জেটিকে সম্প্রসারণ করে পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্যিক বন্দর করা যায় কি না এনিয়ে দু’বছরের বেশি সময় ধরেই জল্পনা-কল্পনা চলছিলো।
২০১৭ সালের জানুয়ারিতে প্রাথমিক সমীক্ষা রিপোর্টে এ ব্যাপারে ইতিবাচক প্রতিবেদন দেয় জাইকা। সবশেষ গত সপ্তাহে দেয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনে তারা নিশ্চিত করেছে আধুনিকায়নের মাধ্যমে বাণিজ্যিক বন্দরের কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব।
ডিটেইল ডিজাইন তৈরির জন্য পরামর্শক নিয়োগে ইতোমধ্যে জাপান সরকারের সাথে ঋণ চুক্তিও সম্পন্ন করেছে সংস্থাটি।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সদস্য (পরিকল্পনা ও প্রশাসন) মোহাম্মদ জাফর আলম বলেন, ‘ঋণ চুক্তিতে চট্টগ্রাম বন্দর জাপান থেকে ২ হাজার ৬শ’ ৫৫ মিলিয়ন ইয়েন লোন নিচ্ছে।’
চট্টগ্রাম বন্দরের প্রধান জেটিগুলোতে মাত্র সাড়ে আট মিটারের জাহাজ প্রবেশ করতে পারে। এসব জাহাজের কন্টেইনার ধারণ ক্ষমতা ১২শ থেকে ১৫শ। আর নিউ মুরিং কন্টেইনার টার্মিনালে সাড়ে নয় মিটার গভীর জাহাজ প্রবেশের সুযোগ পায়।
আর জাহাজের তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার পর্যন্ত কন্টেইনার আনার সক্ষমতা রয়েছে। তবে প্রস্তাবিত মাতারবাড়ি বন্দরের গভীরতা ১৬ দশমিক ৩ মিটার হওয়ায় প্রতিটি জাহাজ ৮ হাজারের বেশি কন্টেইনার আনতে পারবে।
শিপিং এজেন্ট এসোসিয়েশন বাংলাদেশ সভাপতি আহসানুল হক চৌধুরী বলেন, ‘প্রতিটি জাহাজ ৮ হাজারের বেশি কন্টেইনার আনতে পারলে আমাদের ব্যয় কমে যাবে।’
মাতারবাড়ি বন্দর স্থাপনের কাজে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি চ্যানেল তৈরি করবে জাইকা। সে সাথে বন্দরের অর্থায়নে নির্মাণ করা হবে ১০০ মিটার দীর্ঘ জেটি। তবে বন্দরের কার্যক্রম শুরুর আগে পর্যাপ্ত ব্যাকআপ সাপোর্ট রাখার কথা বলছেন ব্যবসায়ীরা।
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স সভাপতি মাহবুল আলম বলেন , ‘বন্দরের ক্যাপাসিটি বাড়াতে হবে। তা না হলে মালগুলো এসে কোথায় যাবে।’
২০২৩ সালের মার্চ মাসের মধ্যে মাতারবাড়ি বন্দরের মাল্টি পারপাস টার্মিনালের কার্যক্রম শুরু এবং একই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে কন্টেইনার টার্মিনালকে অপারেশনে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।
পাঠকের মতামত: