হারুনর রশিদ,মহেশখালী:
মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের কেরুণতলী পূর্বদিকের গভীর পাহাড়ে অস্ত্রকারিগর ও পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে খুইল্যা নামে এক অস্ত্রকারিগর নিহত হয়েছে। সে উপজেলার বড় মহেশখালী ইউনিয়নের মাঝেরডেইল এলাকার মৃত আজম উল্লাহ’র ছেলে। ৩মার্চ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। ১৩টি বন্দুক ও ৩২ রাউন্ড তাজা কাতুর্জ উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযানে আহত হয়েছে ৬ পুলিশ সদস্য।
মহেশখালী থানা সূত্রে জানা যায়; হোয়ানক ইউনিয়নের গভীর পাহাড়ে অস্ত্রকারীগর ও সন্ত্রাসীরা একত্রিত হয়ে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে। গোপনে এমন সংবাদ পেয়ে ওই এলাকায় কক্সবাজারের পুলিশ সুপার ড.একেএম ইকবাল হোসেন এর নেতৃত্বে- কক্সবাজার জেলা পুলিশের একটি ইউনিট এবং মহেশখালী থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ এর নেতৃত্বে যৌথ অভিযান চালান। এসময় অস্ত্রকারিগররা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ব্যাপক গুলি ছোঁড়ে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছোঁেড়। অন্যান্য সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও অস্ত্রকারিগর খুইল্যা গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়। তাকে মহেশখালী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেয়া হলে কর্তব্যরত মৃত ঘোষনা করেন।
এসময় ওই অস্ত্রকারীগরের আস্তানায় ব্যাপক তল্লাশী চালিয়ে দেশীয় তৈরী বিভিন্ন রকমের ১৩টি বন্দুক ও ৩২ রাউন্ড তাজা কাতুর্জ উদ্ধার করে। এঘটনায় আহত হয় মহেশখালী থানার এসআই হারুনর রশিদ, এসআই মিনহাজ, এএসআই মানিক, এএসআই সনজিত, কনষ্টেবল মিঠুন, কনষ্টেবল রুবেল। আহত পুলিশ সদস্যদের মহেশখালী হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
অভিযান শেষে পুলিশ সুপার ড.একেএম ইকবাল হোসেন বিকাল ২টার সময় এক প্রেসব্রিফিংয়ে জানান, অস্ত্রকারিগররা ও সন্ত্রাসীরা পাহাড়ের গভীর অরণ্যে’র আস্তানায় ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল- নিজস্ব সোর্স এর মাধ্যমে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পেয়ে অভিযান চালানো হয়। এধরনের অস্ত্রকারিগর ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পুলিশ জিরো-টলারেন্স ভূমিকায় থাকবে।
মহেশখালী থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ জানান, নিহত খুইল্যা একজন পেশাদার অস্ত্র তৈরীর কারীগর। তার বিরুদ্ধে একটি অস্ত্র মামলায় ৩০ বছরের সাজাসহ ডজনখানেক বিভিন্ন ধারায় মামলা রয়েছে। সে আন্ত: জেলার শীর্ষ অস্ত্রকারিগরের সর্দার। সে দীর্ঘ ৩৫বছর যাবৎ অস্ত্র তৈরী করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাচার করে আসছে।
মহেশখালী থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, মহেশখালীকে একটি আধুনিক উপজেলা উপহার দিতে কাজ করে যাচ্ছেন মহেশখালী থানার পুলিশ। পাহাড় সমতল যেখানেই হোক; সন্ত্রাসীরা কেউ পার পাবে না। অত্র এলাকার জনসাধারণকে সঙ্গে নিয়ে একটি মাদক ও সন্ত্রাস মুক্ত মহেশখালী উপহার দেওয়াই হবে মহেশখালী থানা পুলিশের কাজ।
পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত খুল্যার মৃতে্যুর সংবাদ মহেশখালীর বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়লে অনেক জায়গায় মিষ্টি বিতরণ করা হয় বলে জানা যায়।
পাঠকের মতামত: