ইমাম খাইর, কক্সবাজার ::
মহেশখালী গভীর সমুদ্র বন্দর সংযোগ সড়কটি চকরিয়া উপজেলার বদরখালী মৌজার সর্বদক্ষিণে পানি উন্নয়নবোর্ডের বেড়িবাঁধের উপর করার প্রস্তাব এলাকাবাসীর। অন্যথায় সংযোগ সড়কের কারণে বদরখালী এলাকায় বেশ কয়েকটি সরকারী অফিস ক্ষতির সম্মুখিন হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বর্তমান জরিপের আলোকে ৩০০ ফুট বিশিষ্ট সড়ক নির্মিত হলে পানি উন্নয়নবোর্ড ও সরকারী খাদ্য গোদামের অন্তত ৫০ কোটি টাকার মূল্যবান স্থাপনা ক্ষয়ক্ষতি হবে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, জনবসতি ও ফসলি জমি।
অভিযোগ পেয়ে চকরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)কে প্রধান করে ৩ সদস্যের কমিটি করে দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন। কমিটিকে দ্রুত প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ইবনে আদম জাহান, আকতার কামাল, নজির আহমদ, দিদারুল ইসলাম মুজিব, আবদুল মান্নানসহ অনেকে জানিয়েছেন, পানি উন্নয়নবোর্ডের বেড়িবাঁধের উপর সংযোগ সড়কটি করা হলে সরকারী কোন স্থাপনার ক্ষতি হবেনা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বসতবাড়ী, ফসলি ও আবাদি জমিসহ অনেক ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পাবে এলাকাবাসী। সড়কের দূরত্ব প্রায় ৭ কিলোমিটার কমে আসবে। এলাইনমেন্টে ব্যক্তি মালিকানার জমি না থাকায় সরকারের ক্ষতি পূরণের টাকাও বাঁচবে।
ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জানান, মহেশখালী গভীর সমুদ্র বন্দর সংযোগ সড়কটি বদরখালী বাজারের দক্ষিণ পার্শ্বে নির্মাণের জন্য জরিপ করা হয়েছিল। স্থানীয়দের আপত্তির মুখে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বাজারের সর্বদক্ষিণে অথবা ৬০০ ফুট উত্তরে প্রস্তাবিত এলাইনমেন্টে জরিপ না করে বাজার থেকে মাত্র ১০০ ফুট উত্তরে করার উদ্যোগ নেয়া হয়। তাতে সরকারী খাদ্য গোদাম, পাউবোর উপবিভাগীয় প্রকৌশলীর কার্যালয়, কেন্দ্রীয় কবরস্থান, হেফজখানা, এতিমখানাসহ অনেক প্রতিষ্ঠান ও বসবাড়ী ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
বদরখালী সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোছাইন জানান, একাধিক বিকল্প থাকা সত্ত্বেও অসংখ্য সমবায়ীর ত্যাগে গড়া উপ-শহরটি সম্প্রতি মহেশখালী গভীর সমুদ্রবন্দর সংযোগ সড়কের নিশানার শিকার। উদ্বিগ্ন সমবায়ী এবং এই সমিতির কর্মকর্তারা বদরখালীর দক্ষিণ কিংবা উত্তরে অপেক্ষাকৃত কম মূল্যের জমির ওপর দিয়ে প্রস্তাবিত সংযোগ সড়কটি নির্মাণের অনুরোধ করেছেন। তবে সংশ্লিষ্ট ‘জাইকার’ লোকজন তা মানতে রাজি নন।
বদরখালী সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতির সাবেক সভাপতি রশিদ আহমদ জানান, জনগণের প্রয়োজনে সরকার। জনস্বার্থ ক্ষুণœ করে কোন উন্নয়ন নয়। বদরখালী সমিতির সমবায়ীদের জীবনের চেয়ে মূল্যবান জমি। স্থানীয়দের সহায় সম্পদের ক্ষতি করে উন্নয়নের নামে ক্ষতি করা হোক-তা কাম্য নয়। প্রস্তাবিত মহেশখালী গভীর সমুদ্র বন্দর সংযোগ সড়কের কারণে ক্ষতির সম্মুখিন ভূমিহীনরা ধরনা দিয়েছেন সরকারি কর্মকর্তা থেকে রাজনৈতিক নেতৃত্বের দুয়ারে দুয়ারে। বৃহত্তর বদরখালীর অর্ধলাখ জনগোষ্টি আতংকিত।
এদিকে, বদরখালীবাসীকে বৃহৎ ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে প্রস্তাবিত এলাইনমেন্ট পরিবর্তন করে বরদখালী মৌজার দক্ষিণ পার্শ্বে পুণঃনির্ধারণের আবেদন জানিয়েছে স্থানীয়রা। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (১নভেম্বর) কক্সবাজার জেলা প্রশাসককে এলাকাবাসীর পক্ষে স্মারকলিপি দিয়েছেন ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী, বদরখালী সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতির সাবেক সভাপতি রশিদ আহমদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোছাইন, সমিতির সদস্য ইবনে আদম জাহান, আকতার কামাল, নজির আহমদ, দিদারুল ইসলাম মুজিব ও আবদুল মান্নান।
স্মারকলিপি প্রদানকালে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তারা এলাকার উপর দিয়ে সড়ক নির্মাণ হলে কি পরিমাণ ক্ষতি হতে পারে, তা জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেনকে অবহিত করেন। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে চকরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)এর নেতৃত্বে ৩ সদস্যের কমিটি করে দেন। সেই কমিটিকে সরেজমিন তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।
কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলায় তদানীন্তন সামন্ত-প্রভুদের রক্ষচক্ষুকে উপেক্ষা করে ব্রিটিশ আমলে ১৯২৯ সালে ভূমিহীনের সন্তানরা গড়ে তুলেছিলেন দেশের বৃহত্তম কৃষি সমিতি ‘বদরখালী সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতি’। এর সুনাম ও পরিচিতি দেশের গ-ি পেরিয়ে ছড়িয়ে যায়। চার হাজার একরের মতো জমি নিয়ে দুই-তিন হাজার ভূমিহীনের পরিবারের সে যাত্রার ফল হচ্ছে, কালের পরিক্রমায় ৪৫-৪৬ হাজার মানুষের ঘন বসতিপূর্ণ জনপদ বদরখালী। ২৬২ জন অংশীদার প্রতি ১২ একর জমির ভোগ-দখল নিয়ে একপ্রকার সচ্ছলতার সাথে পরিবার-পরিজনসহ সভ্যতার সোপান তৈরি ও নিজেদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নির্মাণে পার্শ্ববর্তী অন্যান্য জনপদের চেয়ে তারা অনেক এগিয়ে গেছেন। আধুনিক জীবনযাত্রায় পৌঁছানোর লক্ষ্যে ১০০ বছরের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ভূমিহীনের সন্তানেরা শতভাগ সফল বলা যায়।
১৯২৯ থেকে ২০১৮; ৮৯ বছরের দীর্ঘ ব্যবধানে ৪৫ হাজার মানুষের ভারে জর্জরিত বদরখালী জনপদ। জীবনযুদ্ধের লড়াকু সৈনিক হিসেবে নিজেদের পরবর্তী প্রজন্মকে গড়ে তোলার জন্য ভূমিহীনের সন্তানরা এলাকায় স্থাপন করেছেন একটি ডিগ্রি কলেজ, একটি ফাজিল মাদরাসা, দু‘টি উচ্চবিদ্যালয়, ১১টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪০টি জামে মসজিদ ও মক্তব, দু‘টি কওমি মাদরাসা ও চারটি কেজি স্কুল, ১ টি সরকারি হাসপাতাল, ১০টি কবরস্থান, ১০টি সাইক্লোন শেল্টারসহ মুজিবকেল্লা। বাংলাদেশ সচিবালয়ের আদলে অতি সম্প্রতি তৈরি করা, সমিতির দৃষ্টিনন্দন কার্যালয়কে ঘিরে ভূমিহীনের সন্তানেরা গড়ে তুলেছেন উপ-শহর।
- মেরিন ড্রাইভ সড়কে অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক নিহত
- চকরিয়ায় সাবেক এমপি জাফর সাঈদি সহ আওয়ামী লীগের ২৮৭ জনের বিরুদ্ধে থানায় নতুন মামলা
- চকরিয়ায় যাত্রীবাহী বাস থেকে ৪০ কেজি গাঁজা উদ্ধার, বিক্রেতা গ্রেফতার
- দুর্নীতির আখড়ায় কক্সবাজার সিটি কলেজ
- চকরিয়ায় ব্যবসায়ীকে ডেকে নিয়ে হত্যার ভয় দেখিয়ে দুই লাখ টাকা ছিনতাই
- বদরখালী সমিতির ১১টি মৎস্য প্রকল্পের নিলাম নিয়ে বিরোধ
- রামুতে আপন ভাতিজিকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি
- রামুতে ল্যাপটপ পেলেন ৮০ নারী ফ্রিল্যান্সার
- চকরিয়ায় আওয়ামিললীগ ক্যাডার নজরুল সিণ্ডিকেটের দখলে ৩০ একর বনভুমি:
- চকরিয়ায় শিক্ষা ক্যাডার মনিরুল আলমকে ঘুষের বদলেগণপিটুনি
- চকরিয়ার বিষফোঁড়া সিএনজি-টমটম স্টেশন
- চকরিয়া সদরের বক্স রোড সম্প্রসারণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ
- বহিরাগতদের নিয়ে কলেজে গেলেন পদত্যাগ করা বিতর্কিত অধ্যক্ষ মুজিবুল আলম
- চকরয়ার ঠিকাদার মিজান গ্রেফতার, কোটি টাকার ঋণের জেল-জরিমানার দায়ে
- কক্সবাজার আবাসিক হোটেলে ৭০ ইউপি সদস্যের ‘গোপন বৈঠক’, আটক ১৯
- চকরিয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান, ২টি ডাম্পার ও স্কেভেটর জব্দ
- চকরিয়ার রশিদ আহমদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় : কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে
- ঈদগাঁও’র নবাগত ইউএনও বিমল চাকমা
- চকরিয়ার সাবেক এমপি জাফর আলম, সালাহউদ্দিনসহ আওয়ামী লীগের ৭৩৬ জন আসামী
- চকরিয়ায় ব্যবসায়ীকে ডেকে নিয়ে হত্যার ভয় দেখিয়ে দুই লাখ টাকা ছিনতাই
- উত্তপ্ত রামু সরকারি কলেজ: অধ্যক্ষ মুজিবের অপসারনের দাবিতে কার্যালয় ও প্রশাসনিক ভবনে তালা
- কুতুবদিয়ায় গর্তে ১০ লক্ষ মণ পুরাতন লবন,লোকসানের শংকা চাষীরা
পাঠকের মতামত: