ঢাকা,রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় কোরআন রাখা যুবক অক্ষত, বাকি সবাই হতাহত!

মোঃ নিজাম উদ্দিন, চকরিয়া: মহাসড়কে ঘটছে দুর্ঘটনা হতাহত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। অনেকে আবার মারাত্মক দুর্ঘটনায়ও বেঁচে যাচ্ছে অলৌকিক ভাবে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়া উপজেলার খুটাখালীতে গত ১৪ জানুয়ারীর সড়ক দুর্ঘটনায় ঘটেছে এমনই এক ঘটনা।
ওইদিন ভোরে ঘন কুয়াশায় মহাসড়ক কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা কাভার্ড ভ্যানের পেছনে প্রাইভেট নোহার ধাক্কায় এক আওয়ামিলীগ নেতা ঘটনাস্থলে ও একদিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরো একজন মৃত্যু হয়। নোহা গাড়িতে থাকা চালকসহ অন্যান্য সবাই ছিল গুরুতর আহত। কিন্তু ওই নোহা থেকে পুলিশ এক যুবককে উদ্ধার করেন সম্পূর্ণ অক্ষত অবস্থায়। যার বুকে ঝুলানো ছিল একটি পবিত্র কোরআন শরিফ।
উদ্ধারকারী মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) আবু নাঈম জিহাদ বলেন, খুটাখালীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নোহা গাড়ির ভেতর থেকে মোঃ সামির বিন আবদুল আমিন (২৩) নামের এক যুবককে অক্ষত অবস্থায় বুকে কোরআন শরিফসহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাকেও আহতদের সাথে হাসপাতালে পাঠানো হয়। দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলে একজন এবং পরদিন হাসপাতালে আরো একজনের মৃত্যু হয়েছে। অপর সকল যাত্রী আহত ছিলেন বলেও তিনি জানান।
সরেজমিনে মালুমঘাট মেমোরিয়াল খ্রিষ্টান হাসপাতালে গিয়ে যুবক মোঃ সামির সাথে কথা বলে জানা গেছে, তার পৈত্রিক বসতবাড়ী কক্সবাজার জেলার টেকনাফে। সে জন্মগ্রহণ করেন সৌদিআরবে। দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে পিতা আবদুল আমিন ও মা জুবাইদা বেগম সৌদিআরবে বসবাস করছেন। ওইদিন সামির ও তার মা বেড়াতে বাংলাদেশে আসে। চট্টগ্রাম শাহ্ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রাইভেট নোহা গাড়ি নিয়ে টেকনাফের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় বিমানবন্দর থেকে রিসিভ করতে আাসা তার চাচা টেকনাফ পৌরসভা আওয়ামিলীগ নেতা সৈয়দ হোসেন ঘটনাস্থলে নিহত হয়, একই গাড়িতে থাকা নুরুল আমিন একদিন পর মালুমঘাট মেমোরিয়াল খ্রিষ্টান হাসপাতালে মারা যায়। তার মা জুবাইদা বেগম, চাঁচি রাজিয়া বেগম, নোহা চালকসহ সকলে গুরুতর আহত হয়েছে।
বুকে কোরআন শরিফ রাখার কারণ জানতে চাইলে সামির আরো জানায়, কোরআন শরিফ আল্লাহ প্রদত্ত জীবন বিধান। আমাদের সৃষ্টি করেছেন মহান আল্লাহ এবং মৃত্যু হবেও তার হুকুমে। এখানে যে লিখাগুলো আছে সব আমার সৃষ্টিকর্তার কথা। তাই যেকোনো জরুরী ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজে পবিত্র অবস্থায় আমার পোশাকের ভেতর বুকে কোরআন শরিফ রাখি। এবারও সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে আসার পথে আমার বুকে কোরআন শরিফ ছিল। প্রকৃতির নিয়মের কাজ সেরে ওজু করে এটি আবারও বুকে ঝুলিয়ে রাখি।
অপরদিকে এ ঘটনা প্রত্যক্ষদর্শীদের মাধ্যমে মানুষের কাছে জানাজানি হলে এটি স্থানীয়দের মাঝে আলোচনার বিষয় হিসেবে দাঁড়ায়।

পাঠকের মতামত: