নয়া দিল্লি: অভিযুক্ত নিরাপত্তা কর্মী রাজ কুমারকে জেরা করে সুগন্ধি বিশেষজ্ঞ মনিকা ঘুর্দে হত্যাকাণ্ডের আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে।
জেরায় রাজ কুমার পুলিশকে জানিয়েছে, মনিকার প্রতি তার আসক্তি ছিল। অনেক দিন ধরেই তাকে অনুসরণ করত সে। সানগোলদায় যে ফ্ল্যাটটি মনিকা কিনেছিলেন সেখানে আগে থেকেই লুকিয়ে ছিল রাজ কুমার। ঘটনার দিন সন্ধেবেলায় মনিকা ফ্ল্যাটে ঢোকার পরই রাজ কুমার দরজায় এসে খটখটায়। নিজেকে সিকিউরিটি সুপারভাইজার বলে পরিচয় দেয়। মনিকা দরজা খুলতেই রাজ কুমার জোর করে ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়ে। তার পর তার গলায় ছুরি ধরে জবরদস্তি করার চেষ্টা করে রাজ কুমার। মনিকা বাধা দেয়ার চেষ্টা করেন, কিন্তু তার সঙ্গে এঁটে উঠতে পারেননি। ধস্তাধস্তির মধ্যে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন মনিকা। তখন তাকে বিছানায় শুইয়ে হাত-পা কষে বেঁধে দেয় রাজ কুমার।
এখানেই শেষ নয়। আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে রাজ কুমার। ধর্ষণের আগে মনিকাকে পর্ন ক্লিপিং দেখায়। তার পর বেশ কয়েক বার ধর্ষণ করে তাকে। এর পর মনিকাকে গলা টিপে, বালিশ চাপা দিয়ে খুন করে রাজ কুমার। পুরো ঘটনাটা খুব ঠাণ্ডা মাথায় করেছে বলে দাবি পুলিশের।
গত ৬ অক্টোবর সানগোলদার ওই ফ্ল্যাটের ভিতর থেকে মনিকার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, মনিকা রাজ কুমারকে তার টাকা, গয়না সব কিছু দিয়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তাতে রাজি হয়নি সে। এর পর মনিকার এটিএম কার্ড, পিন নম্বর এমনকী মোবাইলও নিয়ে নেয় রাজকুমার। তার পর সেই মোবাইল থেকেই মনিকাকে পর্ন ক্লিপিং দেখায়। এর পর তার পায়ের বাঁধন খুলে ধর্ষণ করে।
মনিকার দেহ উদ্ধারের পর পুলিশ তদন্তে নেমে অভিযুক্তের হদিস পায়। মনিকার এটিএম কার্ড ব্যবহার করে বেশ কিছু জিনিস কেনে রাজ কুমার। সেই সূত্র ধরেই রাজ কুমারের সন্ধান পায় পুলিশ। তাকে সেখান থেকে গ্রেফতার করা হয়।
কেন এমন করল রাজ কুমার?
গোয়া পুলিশ জানিয়েছে, প্রতিহিংসা এবং লালসার বশেই এই কাজ করেছে সে। রাজ কুমারকে আগে থেকেই চিনত মনিকা। হরিয়ানা থেকে বি কম প্রথম বর্ষ শেষ করার পর এপ্রিলে গোয়ায় চলে আসে রাজ কুমার। সেখানে একটা নিরাপত্তা সংস্থার অধীনে কাজ নেয়। যে আবাসনে রাজ কুমার নিরাপত্তা কর্মীর কাজ করত সেই আবাসনেই এক দিন ফ্ল্যাটের খোঁজ করতে আসেন মনিকা। আবাসনের গেটে রাজ কুমারের সঙ্গে তার সাক্ষাত্ হয়। কোন কোন ফ্ল্যাট ফাঁকা আছে সেই খবরও মনিকাকে দেয় রাজ কুমার। কিছু দিন পর থেকেই সেখানে একটি ফ্ল্যাটে থাকতে শুরু করেন মনিকা। পুলিশের কাছে রাজ কুমার স্বীকার করেছে, প্রথম দিন দেখার পরেই মনিকার প্রতি তার আসক্তি তৈরি হয়। তার উপর নজর রাখা শুরু করে সে। মনিকা যে একাই ওই ফ্ল্যাটে থাকতেন সেটা জানতে পারে রাজু। গত ২২ জুলাই মনিকা-সহ আবাসনের কয়েক জন বাসিন্দার অভিযোগের ভিত্তিতে কাজ খোয়ায় রাজু। অভিযোগ তুলে নেয়ার জন্য মনিকার উপর চাপ দেয় রাজ কুমার। কাজ হারিয়ে ক্ষোভে এবং হতাশায় প্রতিশোধ নেয়ার পরিকল্পনা করে রাজ কুমার। সহজ শিকার বানায় মনিকাকে।- আনন্দ
পাঠকের মতামত: