কক্সবাজারের পেকুয়ায় উপজেলার মগনামা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এলাকার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। প্রতিনিয়তই মগনামার প্রতিটি গ্রামের সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা ঘটছে। গত কিছু দিন পর্বে লঞ্চঘাট এলাকায় চেয়ারম্যানের অনুগত ক্যাডার ফারুকের হামলায় ছাগল ব্যবসায়ী বাইন্যাঘোনা গ্রামের ইদ্রিছ গুরুতর আহত হয়। পরে এ ঘটনা চেয়ারম্যান পরিষদেই সমাধা করে দেন। মগনামা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি খাইরুল এনাম বিএকে হত্যার জন্য চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহর লেলিয়ে দেওয়া সন্ত্রাসীরা দফা দফায় হামলা চালিয়েছে। এছাড়াও ওয়াসিম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও অপরাধীদের সমন্বয়ে নানান ধরনের অপরাধ সংগঠিত করছে। বিভিন্ন ফেরারী আসামীরাও পুলিশের গ্রেফতার এড়াতে ওয়াসিমের বাড়ীতেই অবস্থান করে। ওয়াসিমের সাথে স্থানীয় প্রশাসনের বিশেষ দহরম-মহরম সম্পর্ক থাকায় চেয়ারম্যানের অনুগত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে এলাকার কেউ প্রতিবদ করতে সাহস পায়না। সম্প্রতি মগনামা শরতঘোনা এলাকায় লিয়াকত আলী বসতঘরে হামলা ও ভাংচুর চালিয়েছে চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে একদল দৃর্বূত্ত। এ ঘটনায় লিয়াকত আলী চেয়ারম্যানসহ কেয়কজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলাও করেছে। এছাড়াও গত শনিবার রাতে মগনামা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক দুই নেতাকে রাতের আধারে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে দূর্বূত্তরা। এলাকাবাসীরা গুরুতর আহত অবস্থায় দুইজনকে উদ্ধার করে চকরিয়া জমজম হাসপাতালে ভর্তি করে। আহতরা হলেন, ওই ইউনিয়নের আফজলিয়াপাড়া এলাকার মৃত.রোস্তম আলীর ছেলে আলী আকবর (৩৫) ও একই এলাকার মৃত নুরুন্নবীর ছেলে জয়নাল আবেদীন (৩৫)। জয়নাল আবেদীন ছাত্রদল মগনামা ইউনিয়ন শাখার সাবেক সভাপতি ও আলী আকবর একই ইউনিয়ন ছাত্রদল সাবেক নেতা বলে জানা গেছে। গত শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের মুহুরী পাড়া গ্রামে। আহতদের পরিবার সুত্রে জানা গেছে, ওইদিন রাতে জয়নাল ও আলী আকবর মগনামা ইউনিয়নের সিকদারপাড়া এলাকায় মাষ্টার আহমদ হোসেনের ছেলে যুবলীগ নেতা ইসমাইলের বাড়িতে দাওয়াত খেতে যান। দাওয়াত শেষে বাড়ি ফেরার পথে ফুলতলা- মুহুরী পাড়া সড়কের মুহুলী পাড়া টেক নামক স্থানে পৌছলে পুর্ব থেকে ওতপেতে থাকা দুর্বৃত্তরা তাদেরকে অতর্কিত হামলা চালিয়ে আহত করে।
নির্ভরযোগ্য সুত্রে জানা গেছে, কয়েক মাস আগে ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি সোলতান মুহাম্মদ রিপনকে রাতে কুপিয়ে জখম করে সন্ত্রাসীরা। এনিয়ে রিপন বাদি হয়ে আলী আকবর, জয়নালসহ আরো কয়েকজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
স্থানীয়রা জানান গত ইউপি নির্বাচনের পর থেকে মগনামার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়েছে। বিএনপির ব্যানারে শরাফত উল্লাহ ওয়াসিম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এলাকায় দাগি ও ফেরারি আসামিদের নিয়ে পেশি শক্তির বলয় তৈরি করে এলাকায় রাজত্ব কায়েম করেছে। কিছু দিন পূর্বেও চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে মগনামা শরত ঘোনা গ্রামের লিয়াকত আলীর স্ত্রীকে পিঠিয়ে আহতসহ শ্লীলতাহানি করেছিল। এ ঘটনায় লিয়াকত আলীর স্ত্রী বাদী হয়ে আদালতে বিতর্কিত চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা ওয়াসিমসহ আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে ধর্ষন চেষ্টা মামলা দায়ের করে। এদিকে ওয়াসিমের অনুগত স্বসস্ত্র সন্ত্রাসীরা পুরো মগনামা জুড়ে দখল বেদখলে লিপ্ত রয়েছে বলে স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
মগনামায় আইন শৃঙ্খলা অবনতির বিষয়ে জানার ওই ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা শরাফত উল্লাহ ওয়াসিমের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করে বক্তব্য নেওয়ার জন্য চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় সংবাদে বক্তব্য সংযোজন করা সম্ভব হয়নি।
আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি রোধে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে জানিয়ে পেকুয়া থানার ওসি জিয়া মোহাম্মদ মোস্তাফিজ ভূঁইয়া গতকাল রোববার থানায় ওপেন হাউস ডে অনুষ্টানে তার বক্তব্যে বলেন, পেকুয়ার সাত ইউনিয়নের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ কাজ করছে।
Gu/pc/28-8-16
পাঠকের মতামত: