মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া :: কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউপি’র বিতর্কিত চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম ও পেকুয়া থানার এএসআই শাহ আলমের পিছনে মাথার উপরে লাল কালি চিহ্নিত যুবকটির নাম মো: জিয়াবুল (৩৫)। সে উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের পশ্চিমকূল গ্রামের নুরুল আফছারের পুত্র। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ওয়াসিমের অন্যতম ‘ডানহাত’ হিসেবে পরিচিত জিয়াবুল! গত ৪ বছর ধরে মগনামা ইউনিয়নের সংগঠিত সকল অপরাধ কর্মকান্ডে নেতৃত্ব দিয়েছেন ওই দূর্ধর্ষ সন্ত্রাসী জিয়াবুল!
স্থানীয়দের অভিযোগ মতে, মগনামার প্রভাবশালী ক্ষমতাশালী বিতর্কিত ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিমের ‘বিশ্বস্থ সহযোগী’ হওয়ায় এলাকার কেউ সন্ত্রাসী জিয়াবুলের অপরাধ কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে মুখ খোলে প্রতিবাদ করার সাহস পায়না। কেউ প্রতিবাদ করলে তার উপর নেমে আসে নির্যাতনের খড়গ।
অভিযোগ রয়েছে, দুইটি ফৌজদারি মামলার আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকলেও মগনামা ইউপি চেয়ারম্যানের আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে অবস্থান করে সন্ত্রাসী জিয়াবুল মগনামা ইউনিয়নের আনাচে-কানাচে বেশ দাপটের সাথেই দাপিয়ে বেড়াচ্ছে! মগনামা সাব মেরিন নৌ ঘাঁটি থেকে বিভিন্ন ঠিকাদারী প্রতিষ্টান থেকে জ্বালানী তেলসহ বিভিন্ন উপকরণ চুরির সাথেও জড়িত রয়েছে জিয়াবুল।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ১৭ অক্টোবর দুপুরে মগনামা ইউনিয়নের কোদাইল্লা দিয়া গ্রামের সমাজ কমিটির নির্বাচন চলাকালে খোদ পেকুয়া থানার এএসআই শাহ আলম ও ইউপি চেয়ারম্যান ওয়াসিমের পিছনে দাঁড়ানো অবস্থায় ওই পলাতক আসামী জিয়াবুলকে দেখা গেছে! কোদাইল্লা দিয়া সমাজ কমিটির নির্বাচন চলাকালে মগনামা ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিমের সাথে ঘুরাফেরা করায় এসময় পুলিশ জিয়াবুলকে গ্রেফতার করেনি বলে একটি সূত্র এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন। দূর্র্ধষ ওই সন্ত্রাসী জিয়াবুলকে আসন্ন ইউপি নির্বাচনের পূর্বেই গ্রেফতার করার জন্য পুলিশের প্রতি স্থানীয়রা জোর দাবি জানিয়েছেন।
এলাকাবাসীরা আরো জানায়, মগনামার দূর্ধর্ষ সন্ত্রাসী জিয়াবুলকে পেকুয়া থানা পুলিশ গ্রেফতারে উদ্যোগ নেয়নি। স্থানীয় প্রভাবশালী ইউপি চেয়ারম্যান ওয়াসিমের আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে থাকায় সন্ত্রাসী জিয়াবুলকে গ্রেফতারে সাহস পাচ্ছেনা পুলিশ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মগনামা ইউপি চেয়ারম্যানের সহযোগী ও বহু অপরাধ কর্মকান্ডের হোতা জিয়াবুলের বিরুদ্ধে মগনামার সাবেক চেয়ারম্যান ইউনুচ চৌধুরীকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে পেকুয়া থানায় দায়েরকৃত জিআর মামলা নং ৭/১৮ ইং ও ইউনুচ চৌধুরীর বাড়িতে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে পেকুয়া থানায় দায়েরকৃত জিআর ৯/১৮ ইং মামলায় আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। এই দুইটি মামলার বাদি ইউনুচ চৌধুরীর ছোট ভাই সরওয়ার চৌধুরী।
মামলার বাদী অভিযোগ করে এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে পেকুয়া থানায় এই দুই মামলায় মগনামার দূর্র্ধষ সন্ত্রাসী জিয়াবুলের বিরুদ্ধে পেকুয়া থানায় গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকলেও রহস্যজনক কারনে গ্রেফতার করছেনা পুলিশ। আদৌ জিয়াবুলকে গ্রেফতার করা হবে কিনা সেটি নিয়ে তিনি চরম সংশয়ে রয়েছে।
অপরদিকে মগনামার সচেতন মহল,আসন্ন ইউপি নির্বাচনের পূর্বেই মগনামার শীর্ষ সন্ত্রাসী জিয়াবুলকে অবিলম্বে গ্রেফতারপূর্বক আইনের কাছে সোপর্দ্দ করার জন্য পেকুয়া থানা পুলিশের কাছে জোর দাবি জানান।
পলাতক আসামীকে আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে দেওয়ার বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য একাধিক মগনামা ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন ধরনের মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে পেকুয়া থানার ওসি (তদন্ত) কানন সরকার বলেন, কোন অপরাধীর সাথে পুলিশের সখ্যতা নাই। মগনামার জিয়াবুলের বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেফতারী থাকলে অবশ্যই গ্রেফতার করা হবে।
পাঠকের মতামত: