শাহীন মাহমুদ রাসেল :: কক্সবাজার শহরের প্রবেশমুখ লিংকরোড থেকে উপজেলা গেইট ও বাস টার্মিনাল এলাকায় প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তীব্র যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টিতে ভাঙাচোরা সড়কে কার্পেটিং উঠে বড় বড় গর্তে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা ও এসব এলাকায় রাস্তার চার লাইন নির্মাণকাজে রাস্তা সরু হয়ে যাওয়ায় এ যানজট তৈরি হয়।
মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) সকালে লিংকরোড থেকে মেডিকেল কলেজ গেইট, পাওয়ার হাউস, উপজেলা গেইট, বাস টার্মিনাল পর্যন্ত সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে জনদুর্ভোগের এ ভয়াবহ চিত্র। এমনিতেই টানা বৃষ্টিতে পানি জমে সড়কের অবস্থা নাজুক এর মধ্যে সড়কে চারলাইন নির্মাণকাজে অনেক জায়গায় রাস্তা খুঁড়ে করা হয়েছে। তাই এই এলাকায় যানজট ও জলজট নিত্যদিনের চিত্র।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লিংকরোড থেকে বাস টার্মিনাল পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকায় মহাসড়কের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। সেই গর্তে ভরাট হয়ে রয়েছে পানি। চলাচলকারী বাস, ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন গর্তে পড়ে বেঁকে যাচ্ছে। উপজেলা গেইট ও লিংকরোডের চারপাশ কাঁদায় ভরা। যাতায়াতকারীরা দাঁড়ানোর জায়গা টুকুও পাচ্ছেন না। অনেকে পায়ে হেঁটে রাস্তা পার হওয়ার সময় কাঁদা এসে লাগছে শরীর কিংবা কাপড়ে। পড়ছেন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে। মহাসড়কে গর্তের কারণে যানবাহনগুলো অত্যন্ত ধীরগতিতে চলাচল করছে। ফলে এইসব এলাকায় সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। গত বছর সড়ক ও জনপথ বিভাগের শ্রমিকরা ইট দিয়ে গর্ত মেরামত করার চেষ্টা করছিলেন। এবছর সেই ইট হঠাৎ বৃষ্টি কিংবা গাড়ির চাকার চাপে সেগুলো মিনিষেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
এই দৃশ্যটা আরো ভয়াবহ হয়ে উঠেছে উপজেলা গেইটে এসে। পাওয়ার হাউস থেকে টার্মিনাল পর্যন্ত সড়ক খানা খন্দে এতই বেহাল যে গাড়ি চলে হেলেদুলে।
এছাড়া সড়কের বিভিন্ন স্থানে ইটের ব্লক, কংক্রিটসহ বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী পড়ে থাকায় সড়কটি খুবই সংকীর্ণ হয়ে গেছে। যার ফলে সংকীর্ণ ভাঙ্গাচোরা সড়কে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। এ যানজটে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং অফিসগামী যাত্রীদের দুর্ভোগ লক্ষ্য করা যায়। অনেককেই গাড়ী থেকে নেমে হেঁটে গন্তব্যে রওনা দিতে দেখা গেছে।
মাহিউদ্দিন সোহেল নামে এক অফিসগামী যাত্রী বলেন, যতটুকু সময় লাগার কথা তার তিন-চারগুণ সময় বেশি লেগে যায় অফিসে যেতে। এভাবে দেরি হতে থাকলে তো চাকরি থাকবে না।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের বাস চালক নুরুল ইসলাম জানান, লিংকরোডে কাঁদা ও গতের্র জন্য গাড়ি থামানোর জায়গা টুকু নেই। একাধিক যাত্রী সাংবাদিক দেখে এগিয়ে এসে বলেন, চেয়ে দেখেন এখানে দাঁড়ানোর কোন পরিবেশ আছে কিনা? এগুলো কর্তৃপক্ষের চোখে পড়ে না?।
লিংকরোডের একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, বৃষ্টিতে কাঁদা আর শুষ্ক মৌসুমে ধুলায় আমাদের জীবন আর ব্যবসা শোচনীয়। দুই দিন পরপর ইট দিয়ে লোক দেখানো কাজ করে, সেটা কয়েকদিন পরেই নষ্ট হয়ে যায়। আর ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ।স্থানীয়রা আরো জানায়,অল্প টুকু জায়গার জন্য আমাদের প্রতিনিয়তই ভোগান্তির শিকার হতে হয়। এই জোড়াতালির কাজ না করে স্থায়ী মেরামত করার দাবি জানান তারা।
এবিষয়ে সড়ক ও জনপদ বিভাগরে নির্বাহী কর্মকর্তা পিন্টু চাকমার সাথে কথা হলে তিনি বলেন- আপনারা ইতিমধ্যে দেখেছেন সড়কের কাজ চলমান রয়েছে, বৃষ্টির কারণে কাজ করা সম্ভব হচ্ছেনা। তাই একটু ভোগান্তি হচ্ছে। কয়েকদিন রোদ পেলেই সব সমস্যার সমাধান হবে বলে মন্তব্য করেন এই কর্মকর্তা।
পাঠকের মতামত: