আব্বাস সিদ্দিকী, কুতুবদিয়া ::
কুতুবদিয়াকে জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত করতে বিদ্যুতিক খুঁটিসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিয়ে দরবার জেটি ঘাটে পৌছছে এম.ভি.জেরিন ফামি নামক জাহাজ। শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১ টায় কুতুবদিয়ায় এ জাহাজটি পৌছল। তবে, এর আগে গত ২৭ আগষ্ট (শুক্রবার) ক্রেনসহ অন্যান্য সরঞ্জাম কুতুবদিয়ায় পৌছলে স্বচক্ষে দেখতে ভীড় জমান দরবার জেটি ঘাটে কয়েকশো মানুষ। এ পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগের সরঞ্জাম নিয়ে দুটি জাহাজ পৌছল কুতুবদিয়ায়।
পেকুয়া উপজেলা মগনামা থেকে সাগরের তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে কুতুবদিয়ায় বিদ্যুত সংযুক্ত হবে। দ্বীপের বড়ঘোপ ইউনিয়নের বিদ্যুৎ কেন্দ্রে থাকবে বিদ্যুতের এ সাব স্টেশন। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সাগরের তলদেশে সাবমেরিন ক্যাবল সংযুক্ত হবে। শিগগিরই বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজ শুরু হবে। দীর্ঘদিন করোনা পরিস্থিতির কারণে এই অগ্রাধিকার প্রকল্পটির কাজ পিছিয়ে পড়ে। প্রকল্পের কাজ শুরু করতে সকল আনুষ্ঠানিকতা ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৮০ কোটি টাকা। গুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে কুতুবদিয়া উপকূলে বিদ্যুতের খুঁটিসহ অন্যান্য সরঞ্জাম পৌছে গেছে বলে জানান আবাসিক অফিসার আবুল হাসনাত।
এব্যাপারে কক্সবাজার জেলা আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এড ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, দেশের মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন কক্সবাজারের কুতুবদিয়ার মানুষ ভাবতেও পারে নি বিদ্যুতিক সুবিধার কথা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের এ উন্নয়নের দৃশ্য কুতুবদিয়াবাসীর জন্য স্বপ্নের মতো। এ বিদ্যুতের ছোঁয়ায় তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে। পাশাপাশি দ্বীপের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জীবন মানের পরিবর্তন আসবে। যা কুতুবদিয়ার সামগ্রিক উন্নয়নের ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
দুপুর ২টার দিকে উপজেলার দরবার জেটি ঘাটে এম.ভি.জেরিন ফামি নামক জাহাজ থেকে বিদ্যুৎ সংযোগের সরঞ্জাম ক্রেনের সাহায্য উঠানামা কার্যক্রম পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরের জামান চৌধুরী, আবাসিক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) আবুল হাসনাত, বড়ঘোপ ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান টিটু, উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক আবু জাফর সিদ্দিকী, যুগ্ম আহবায়ক সেলিম উদ্দিন লিটন ও তৌহিদুল ইসলাম আরফাত। এসময় তারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মাননীয় সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক ও জেলা আ’লীগের (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি ও কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এড ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীসহ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এদিকে, গত ২৮ আগষ্ট (শনিবার) বিদ্যুতায়নের সংবাদটি প্রকাশের পরেই দ্বীপবাসী নানান কল্পনা জল্পনা শুরু করেছে। তাদের মতে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এলে লবণ পরিশোধন শিল্প, মৎস চিংড়ি ও শুটকি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প, গভীর সমুদ্রগামী জাহাজ নির্মাণ শিল্প, শিপ বেকিং ইয়ার্ডে ও বরফ কলসহ আরও বিভিন্ন শিল্প কারখানা গড়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও পর্যটন শিল্প বিকাশের সম্ভাবনা রয়েছে।
পাঠকের মতামত: