নিউজ ডেস্ক :: দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও বর্ষা মৌসুমকে সামনে রেখে আগামী ২ এপিল থেকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে জাহাজ চলালচল বন্ধ ঘোষণা করেছে জাহাজ মালিক সমিতি ও স্থানীয় প্রশাসন। আগামী অক্টোবর পর্যন্ত টানা সাত মাস এ দ্বীপে পর্যটকের যাতায়াত বন্ধ থাকবে।
সোমবার (২৮ মার্চ) জাহাজ মালিকদের সংগঠন সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কুয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, চলতি পর্যটন মৌসুমে সরকারিভাবে সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে জাহাজ চলাচলের অনুমতি আছে ৩০ মার্চ পর্যন্ত। তবে কিছু পর্যটক রাত্রিযাপন করবেন বলে তাদের আনার জন্য ২ এপ্রিল পর্যন্ত জাহাজ চলাচলের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া ২ এপ্রিল সেন্টমার্টিন থেকে ফেরার সময় প্রতিটি জাহাজে দ্বীপের আবর্জনা বোঝাই করে টেকনাফে আনা হবে। এরপর এসব আবর্জনা টেকনাফের বিভিন্ন এলাকায় মাটিতে পুঁতে ফেলা হবে। আর প্লাস্টিক বর্জ্য লোকজনের কাছে বিক্রি করা হবে।
সেন্টমার্টিনের ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, “আগে সেন্টমার্টিন দ্বীপের ৯০% মানুষ সাগরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করলেও এখন অধিকাংশ মানুষ পর্যটকদের ওপর নির্ভরশীল। পর্যটন ব্যবসায় করে তাদের জীবন জীবিকা চলে। কিন্তু আগামী ২ দিনের মধ্যে দ্বীপে পর্যটকের আগমন বন্ধ হয়ে যাবে জেনে ইতিমধ্যে ৩০টির ও বেশি হোটেল-রেস্তোরাঁ ও শতাধিক দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেছে। এ নিষেধাজ্ঞায় সেন্টমার্টিনের ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। সেন্টমার্টিনের মানুষ কষ্ট পাবে।”
স্কুয়াবের সভাপতি তোফায়েল আহমদ বলেন, “সেন্টমার্টিনে চলাচলকারী ১০টি জাহাজের ধারণক্ষমতা ৩ হাজার ২০০ জন। এ হিসেবে গত পাঁচ মাসে দ্বীপ ভ্রমণে গেছেন ৪ লাখ ৮০ হাজার পর্যটক। মৌসুমের পাঁচ মাসে জাহাজগুলোতে টিকিট বিক্রি হয়েছে ২ লাখ ৯৩ হাজার। কিন্তু কাঠের ট্রলার ও স্পিডবোটে কতজন পর্যটক সেন্টমার্টিনে গেছেন, এ তথ্য জাহাজ মালিকদের কাছে নেই।”
বিষয়টি নিশ্চিত করে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. পারভেজ চৌধুরী বলেন, “দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকে বলে সাধারণত মার্চের ৩০ তারিখের মধ্যে সেন্টমার্টিন রুটে যাত্রীবাহী জাহাজকে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। কিন্তু এবার কিছু পর্যটক সেন্টমার্টিনে ২ এপ্রিল পর্যন্ত অবস্থান করবেন বলে দুদিন বাড়ানো হয়েছে।”
উল্লেখ্য, প্রতিবছর পর্যটন মৌসুম শুরু হলে সেন্টমার্টিনে পর্যটক পারাপারে এ নৌপথে চলাচল করে ১০টি জাহাজ। বর্ষা মৌসুম ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকে বলে এসব জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখে স্থানীয় প্রশাসন।
পাঠকের মতামত: