নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::৷ এশিয়া মহাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমবায়ী ‘বদরখালী সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতি’র কার্যনির্বাহী কমিটির সভার রেজুলেশন গোপন করে, সমিতির মালিকানাধীন আড়াইশ একরের একটি মৎস্য প্রকল্প ও লবণ মাঠ পছন্দের ব্যক্তিকে ইজারা দিতে সভাপতিসহ একটি পক্ষের বিরুদ্ধে কারসাজির অভিযোগ উঠেছে।
সমিতির সভাপতি দেলোয়ার হোছাইন ও সহসভাপতি কামাল উদ্দিন বাবুলের নেতৃত্বে পরিচালকদের একটি পক্ষ ওই মৎস্য প্রকল্পটি ১ কোটি ৪০ লাখ টাকায় পূর্বের ইজারাদার মনজুর আলমকে আগামী চার বছরের জন্য পুনরায় ইজারা পাইয়ে দিতে জোর প্রচেষ্ঠা চালাচ্ছেন। এরই অংশ হিসেবে সমিতির সভাপতি দেলোয়ার হোছাইন কক্সবাজার জেলা সমবায় অফিসারের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।
ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে ৩০ নভেম্বর কক্সবাজার জেলা সমবায় অফিসার জহির আব্বাস চিংড়ি প্রকল্পটি পূর্বের ইজারাদার মনজুর আলমকে ইজারা মুল্যের ৭৫ শতাংশ টাকা আদায় পুর্বক সাতডালিযা নতুনঘোনা চিংড়ি প্রকল্পটি পুনরায় ইজারা দিযে দ্বিপাক্ষিক চুক্তিপত্র সম্পাদনের জন্য সমিতির ব্যবস্থাপনা কমিটিকে নির্দেশনা দেন।
সমিতির সাবেক পরিচালক শহিদুল ইসলাম জানান, সমিতির মালিকানাধীন মৎস্য প্রকল্পের উম্মুক্ত নিলাম প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতে সভাপতিসহ একটি পক্ষ মরিয়া হওয়ায়, অনেকের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও আজকের (রবিবার) নিলাম প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করেনি। এতে সমিতি বিশাল পরিমানে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হতে হবে বলে জানান তিনি।
সমিতির সম্পাদক মঈন উদ্দিন বলেন, গত ২১ নভেম্বর কার্যনির্বাহী কমিটির সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক বদরখালী সমিতির মালিকানাধীন ১১টি চিংড়ি প্রকল্প ১ ডিসেম্বর (রবিবার) উম্মুক্ত ভাবে নিলাম প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। উন্মুক্ত ভাবে নিলাম প্রক্রিয়ার সিদ্ধান্তকে পাশ কাটিয়ে সমিতির সভাপতি দেলোয়ার হোছাইন ও সহসভাপতি কামাল উদ্দিন বাবুলের নেতৃত্বে কয়েকজন পরিচালক ইতোমধ্যে ইজারাদারের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে সমিতির মালিকানাধীন সাতডালিয়া নতুনঘোনা চিংড়ি প্রকল্পটি আগের ইজারাদার মনজুর আলমকে গোপনে নিলাম পাইয়ে দিতে জেলা সমবায় দপ্তরসহ বিভিন্ন যায়গায় দৌড়ঝাপ শুরু করে দিয়েছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ব্যবস্থাপনা কমিটির সভার সিদ্ধান্ত এবং সমবায় আইনের নীতিমালা অনুযায়ী নিলাম প্রক্রিয়া উন্মুক্ত ভাবে করার সিদ্ধান্ত থাকলেও নিলাম অনুষ্ঠানের ঠিক একদিন আগে সমিতির সভাপতি কর্তৃক তাদের পছন্দের ইজারাদার মনজুর আলমকে চিংড়ি প্রকল্পটি পুনরায় ইজারা দেয়ার অপচেষ্টার ঘটনায় সমিতি প্রায় ৪০ লাখ টাকা রাজস্ব হারানোর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সমিতির সভার রেজুলেশন কারচুপি করে সভাপতি দেলোয়ার হোছাইন নিজেই নির্বাহী আদেশমুলে তাদের পছন্দের ইজারাদারকে চিংড়ি ও মৎস্য প্রকল্প ইজারা দিতে মরিয়া হয়েছেন। এই মৎস্য প্রকল্পটি উন্মুক্ত ভাবে প্রতিযোগিতামুলক ইজারা দেওয়া গেলে, এর ইজারা মুল্য ২ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। এতে সমিতির কমপক্ষে আরও ৫০ লাখ টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
এমন প্রেক্ষাপটে বদরখালী সমিতির বড়ধরণের আর্থিক ক্ষতিসাধন ঠেকাতে সম্পাদক মঈন উদ্দিন সমিতির ৪০ হাজার সভ্য পোষ্য এবং প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বদরখালী সমিতির সভাপতি দেলোয়ার হোছাইন বলেন, কার্যনির্বাহী কমিটির ৬ পরিচালক, সহসভাপতি ও আমি সভাপতি মিলে কোরাম পূর্ণ হওয়ায়, সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক আগের ইজারদার মনজুর আলমকে চিংড়ি ঘেরটি ইজারা দিতে একমত হয়েছি। সভার রেজুলেশন গোপন করার বিষয়টি সঠিক নয় বলে জানান তিনি।
পাঠকের মতামত: