ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

বন ও পরিবেশ উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার

 বঙ্গবন্ধু সাফারি পারআরো আধুনিক ও উন্নতমানের হবে

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :: বন পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রানালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার এমপি গতকাল সোমবার দুপুরে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক পরিদর্শন করেছেন। এসময় তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। প্রশ্নের জবাবে উপমন্ত্রী বলেন, দেশে ২৫ ভাগ বনভূমি থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে নেই। আছে মাত্র ৯ ভাগ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে ২২ শতাংশে উন্নীত হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই পার্কটি দেশের প্রথম। বর্তমানে চলমান উন্নয়ন কর্মকান্ড শেষ হলে পার্কে দেশ-বিদেশী প্রাণীর কোন সংকট থাকবে না। এব্যাপারে আমরা প্রয়োহনীয় পদক্ষেপ নেব। যাতে পার্কে প্রাণীর সংখ্যা বাড়ানো যায়। তখন দর্শনার্থীদের মন কেড়ে নিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। তিনি বলেন, সুন্দরবনের মুক্ত বাঘ দেখেছি, আজকে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে খাচা বন্ধি বাঘ-সিংহ দেখেছি, গর্জনও শুনেছি, খুব ভাল লেগেছে।

সাফারি পার্ক পরিদর্শনকালে উপমন্ত্রী আরও বলেন, সারাদেশে অতীতসময়ে বনবিভাগের বেসুমার বনভূমি জবরদখল হয়েছে। দেখা গেছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বনভুমি দখলে জড়িত আছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। আবার তাদেরকে এই কাজে সহযোগিতা দিয়েছেন বনবিভাগের কতিপয় কর্মকর্তা ও কর্মচারী। সেইকারণে সংরক্ষিত বনভূমি দিন দিন বেহাত হয়ে যাচ্ছে। তিনি এসময় অবৈধ বনভূমি দখলকারী ও সহযোগিতাকারীদের তালিকা প্রণয়নে সমীক্ষা করা দরকার বলেও মন্তব্য করেন।

গাজীপুর বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক প্রসঙ্গে উপমন্ত্রী বলেন, ওই পার্কটি বনায়ন সমৃদ্ধ নয়। এটি কৃত্রিমভাবে তৈরী করা হয়েছে। তাঁর বিপরীতে ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক প্রাকৃতিক বনায়নে সমৃদ্ধ একটি দৃষ্টিনন্দন পর্যটন জোন। ভবিষ্যতেও এই পার্ক থাকবে এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে আরো আধুনিক ও উন্নতমানের হবে।

সাফারি পার্ক পরিদর্শনকালে এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান বনসংরক্ষক আমির হোসাইন চৌধুরী, চট্টগ্রাম অঞ্চলের বনসংরক্ষক বিপুল কৃষ্ণ দাস, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতির সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রামের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) রফিকুল ইসলাম চৌধুরী, কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ডিএফও আনোয়ার হোসেন সরকার, কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আবু সুফিয়ান, চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ ফজলুল করিম সাঈদী, চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান, চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো.মাজহারুল ইসলাম, হারবাং ইউপি চেয়ারম্যান মেহেরাজ উদ্দিন মিরাজ, ডুলাহাজারা ইউপি চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম আদর, আওয়ামীলীগ নেতা কলিম উল্লাহ কলি প্রমুখ।

অপরদিকে সোমবার সকালে উপজেলার খুটাখালী ও ফাঁসিয়াখালীসহ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের সাথে মতবিনিময় করেন উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন্নাহার এমপি। সভায় সভাপতিত্ব করেন, প্রধান বনসংরক্ষক মোঃ আমির হোসাইন চৌধুরী।

এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার এমপি। সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার-১ (চকরিয়া পেকুয়া) সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ জাফর আলম। তিনি বলেন, সংরক্ষিত বনএলাকা থেকে বালু উত্তোলনের জন্য সরকারি ভাবে ইজারা দেয়া হচ্ছে। সরকার যে পরিমাণ রাজস্ব পাচ্ছে তার বেশি বনবিভাগের ক্ষতি হচ্ছে। বালু তুলে একজন, মামলার আসামী হয় আরেকজন। এছাড়া তিনি সংরক্ষিত বনের অবৈধভাবে স্থাপিত ইটভাটা চালু থাকলে পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র্যের ক্ষতি হবে বলেও মন্তব্য করেন।

সভায় উপস্থিত থেকে আরও বক্তব্য দেন নেচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্ট (নেকম) এর সিনিয়র ডিরেক্টর রাশিদুজ্জামান আহমদ, চট্টগ্রামের আঞ্চলিক বন সংরক্ষক বিপুল কৃষ্ণ দাশ, কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা মেজিষ্ট্রেট আবু সুফিয়ান, চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম, খুটাখালী ইউপি চেয়ারম্যান মো.আবদুর রহমান, ফাসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন হেলালী, ডুলাহাজারার ইউপি চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম আদর প্রমুখ। এছাড়া সেখানে কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগ, ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের কর্মকর্তা-কর্মচারী, খুটাখালী ও ফাঁসিয়াখালীসহ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

 

 

পাঠকের মতামত: