এইডস প্রাণঘাতি রোগ, এটা থেকে মুক্তি লাভ শুধু কঠিন নয়, অসম্ভব। তবে এটিকে ভুল প্রমাণ করতে যাচ্ছেন একদল চিকিৎসক এবং গবেষক। এইডস থেকে আরোগ্য লাভের পদ্ধতি আবিষ্কারে ক্যামব্রিজের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি, ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডন, ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন, কিংস কলেজ লন্ডনের চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীরা সম্মিলিতভাবে নতুন একটি পদ্ধতিটির ক্লিনিক্যাল নিরীক্ষা চালাচ্ছেন। তাদের প্রত্যাশা, নতুন এ পদ্ধতিতে এইডস আক্রান্ত ব্যক্তিকে পুরোপুরিভাবে সারিয়ে তোলা সম্ভব হতে পারে।
তারা জানিয়েছেন, ওই পদ্ধতিতে চিকিৎসা করানোর ফলে ৪৪ বছর বয়সী এক ব্রিটিশ নাগরিকের স্বাস্থ্যের বেশ উন্নতি হয়েছে। তাই ইতিবাচক কিছুই আশা করছেন তারা। এ পদ্ধতিতে ওই ব্রিটিশ নাগরিক যদি সম্পূর্ণরূপে সেরে ওঠেন, তবে তা চিকিৎসা বিজ্ঞানে এক বিশাল বিপ্লব নিয়ে আসবে। এইচআইভি পজিটিভ ওই ব্রিটিশ নাগরিকের রক্তে এইচআইভি ভাইরাসের উপস্থিতি বিদ্যমান চিকিৎসাব্যবস্থায় ধরাই পড়েনি। পরে তাকে নতুন থেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা দেয়া হয়।
গবেষকরা বলছেন, এই চিকিৎসা ব্যবস্থার সফলতা সম্পর্কে এখনই কোনো মন্তব্য করাটা ঠিক হবে না। তবে ব্রিটিশ নাগরিকের বেশ উন্নতি হওয়ায় ভালো কিছুরই আশা করছেন তারা।
নতুন ওই থেরাপিটি ওই ব্রিটিশ নাগরিকসহ মোট ৫০ জন মানুষের ওপর প্রয়োগ করা হচ্ছে। এই থেরাপি দুটো ধাপে কাজ করে। এক. ভাইরাসটিতে আঘাত করা, দুই. ভাইরাসটিকে পুরোপুরিভাবে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া। এইচআইভি ভাইরাস নির্মূলে এতদিন পর্যন্ত যতসব পদ্ধতি আলোচনায় এসেছে তার মধ্যে এটি সবচেয়ে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কারণ এটি ভাইরাসটির অবস্থান শনাক্ত করার পর সেটাকে ধ্বংস করে দেয়। পাশাপাশি এটি সেই সব সেলকেও মেরে ফেলে যেটা এইচআইভি ভাইরাস নির্মূলে বিদ্যমান চিকিৎসা পদ্ধতিতে বাধার সৃষ্টি করে।
ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের মার্ক স্যামুয়েলস এইচআইভি ভাইরাস থেকে পুরোপুরি আরোগ্য লাভে এ পদ্ধতিকে প্রথম কোনো ‘গুরুতরধর্মী প্রচেষ্টা’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। আর এই প্রজেক্টে অর্থায়ন দিতে ব্রিটেনের স্থাস্থ্য গবেষণা ইন্সটিটিউটকে আদেশ দিয়েছে দেশটির উচ্চ আদালত।
পাঠকের মতামত: