পেকুয়া প্রতিনিধি :: কক্সবাজারের পেকুয়ায় ৮৭বছর পূর্বের একটি কবরস্থান দখল করে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমন অভিযোগে গত শুক্রবার-শনিবার টইটং ইউনিয়নের হিরাবুনিয়া পাড়ারর স্থানীয় বাসিন্দা ও দিলকুশা জামে মসজিদের মুসল্লীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে।
সরেজমিনে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার টইটং ইউনিয়নের হিরাবুনিয়া দিলকুশা জামে মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানটি ১৯২২ সালের দিকে প্রতিষ্ঠিত হয়। সাথে সাথে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই বৃহত্তর এলাকার মৃত মানুষ গুলোকে এই কবর স্থানে দাফন করা হচ্ছে । কিন্তু আজ থেকে বিগত ৪ বছরে পূর্বে একই এলাকার নাপিতখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান ওসমান গণি ও তার ভাই একই স্কুলের সহকারি শিক্ষক মো: ইউনুছের নেতৃত্বে ডা. আব্দুল গফুর, ফকির মোহাম্মদ ও ফরিদুল আলমসহ আরো কয়েকজন প্রভাশলী ব্যক্তিরা ৮৭ বছর ধরে কবর স্থানে থাকা প্রায় ৫শ মানুষের কবরসহ কেটে চাষের জমি করে পেলে। যার কারণে স্থানীয় বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে।
কবরস্থান দখল চক্রান্তের বিরুদ্ধে গতকালের বিক্ষোভ শেষে স্থানীয় বাসিন্দা মিয়াজান, নুরুল অাবছার, ওবাইদুল হোসেন বলেন, দিলকুশা মাদ্রাসা সংলগ্ন কবরস্থানটি ৯০বছর অাগের। অামাদের পূর্ব পুরুষ এ কবরস্থানটিতে শুয়ে অাছে। পবিত্র এ কবরস্থানটি এখনো দৃশ্যমান থাকলেও স্থানীয় প্রভাবশালী নাপিতখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওসসাণ গণি, একই স্কুলের সহকারী শিক্ষক মোঃ ইউনুছ, ডাক্তার অাবদুল গফুর, ফকির মুহাম্মদ ও ফরিদুল অালম কবরস্থানটি দখল করে নেয়। একপর্যায়ে অনেক জনের কবর কেটে নিয়ে নাল জমিতে পরিণত করার মত জঘন্য কাজ করেছে। অামরা প্রতিবাদ করতে গেলে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে অামাদের উপর হামলার চেষ্টা চালায় ওই প্রভাবশালীরা।
ওই এলাকার বাসিন্দা প্রবীণ অা’লীগ নেতা মাষ্টার ছাবের অাহমেদ বলেন, এই মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানটি ১৯৯২২ থেকে ১৯২৪ সালের দিকে আমাদের পূর্ব পুরুষরা করে গেছেন। এই সমাজে আমার দেখায় যত মানুষ মৃত্যু বরণ করেছেন তাদেরকে এই কবর স্থানেই দাফন করা হয়েছে। এই কবর স্থানে প্রায় ৫শ মানুষের খবর রয়েছে। কবরস্থানে রয়েছে আমার ছেলে মো: আব্দুল্লাহ এবং মহামারি কলেরায় মৃত্যু বরণ কারী একই পরিবারের সাতজন ছরফু উদ্দিন, বশির অাহমদ, উমরা খাতুন, সিরাজ খাতুন ও মোঃ কালু। এমন অনেক পরিবারের প্রিয়জন আছে এই কবরে। এই কবর গুলো কেটে বিলীন করে ফেলছে স্থানীয় দুই শিক্ষকসহ প্রভাবশালী চক্রটি। যা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রভাবশালী পক্ষে সংঘর্ষের অাশঙ্কা করছি অামি। বিষয়টি দ্রুত সমাধা করার জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের প্রতি অাবেদন জানাচ্ছি।
কবর খননের কাজ করা অাশরফ অালী বলেন, আমি দীর্ঘ বছর ধরে এই কবর স্থানে কবর খনন করে আসছি। এই পর্যন্ত নিজ হাতে প্রায় ১শর অধিক কবর খনন করেছি। এখানে আমার অনেক আত্মীয় স্বজনের কবর রয়েছে। সেই কবরস্থানটি দখল করে নিয়েছে একটি পক্ষ। অামরা খুব মর্মাহত। পবিত্র কবরস্থানটি দ্রুত উম্মুক্ত করে দেয়ার দাবী জানাচ্ছি।
এবিষযে জানতে চাইলে নাপিতখালী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওসমাণ গণি বলেন, অাগে কবর ছিল বলে অামরা শুনেছি। ওই জমিগুলো অামরা ক্রয় করেছি। বর্তমানে ওই কবরস্থানটি সাধারণ জনগণের নয়। অামরা পারিবারিক হিসাবে কবরস্থানটি ব্যবহার করব।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, কবরস্থানের বিষযে স্থানীয়রা অামাকে জানিয়েছে। দুই পক্ষকে অামি সংঘর্ষে না জড়ানোর অনুরোধ করেছি। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে বসে সমাধা করা হবে।
পাঠকের মতামত: