পেকুয়া প্রতিনিধি :: কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের চৈরভাঙ্গা গ্রামের নিরীহ ১০ কৃষকের ৯ একর ফসলি জমির মাটি জোরপূর্বক কেটে অন্যত্র বিক্রি করে দিয়েছেন স্থানীয় প্রভাবশালী সিন্ডিকেট! এ নিয়ে ভূক্তভোগী কৃষকগণের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
অভিযোগ রয়েছে, নিরীহ কৃষকের ফসলি জমি থেকে না জানিয়ে বা জবরদখল করে গত এক সপ্তাহে ৯ একর ফসলি জমির মাটি কেটে নিয়েছে। প্রভাবশালী ভূমিদস্যুরা ফসলি জমির মাটি বিক্রি করে কৃষি জমি নষ্ট করছে।
স্থানীয় প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে পেকুয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অবাধে ফসলি জমির মাটি ও পাহাড় কাটার মহোৎসব চলছে। এতে জমি ফসল উৎপাদনের উপযোগিতা হারানোর পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে রাস্তাঘাটও। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ থাকলেও কতিপয় প্রভাবশালীদের সংশ্লিষ্টতা থাকায় কেউ মুখ খুলছে না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের চৈরভাঙ্গা গ্রাম সংলগ্ন কৃষি জমি থেকে গত এক সপ্তাহে স্থানীয় ১০ কৃষকের ৯ একর ফসলি জমির মাটি কেটে নিয়েছে ওই গ্রামের কাইছার উদ্দিন ও মঈন উদ্দিনের নেতৃত্বে প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। একটি খননযন্ত্র (স্ক্রেভেটার) দিয়ে কাটা মাটিগুলো একাধিক পিকআপ-ডাম্পার ভর্তি করে তারা অন্যত্র বিক্রিও করে দিয়েছে। পেকুয়া সদর ইউনিয়নের চৈরভাঙ্গা গ্রামের কৃষক আশরাফ আলী, আবুল কাসেম, ওসমান গণি, নাছির উদ্দিন, বিধবা রহিমা বেগম, লেদু মিয়া, নুরুল আমিন, বাদশা মিয়া, ফিরুজ আহমদ ও জহির আহমদের মালিকানাধীন প্রায় ৯ একর ফসলি জমিতে কাইছার ও মঈন উদ্দিন প্রভাব বিস্তার করে মাটি কেটে নিয়ে ফসলি জমির সর্বনাশ করেছে।
কৃষকরা অভিযোগ করেছেন, প্রভাবশালী কাইছার ও মঈন উদ্দিন অভৈধভাবে ফসলি জমি থেকে জোর পূর্বক মাটি কেটে নিয়েছে। তাদের বাধা দিলেও তারা কৃষক ও জমির মালিকদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়েছেন। তাই তারা ওই দুই প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে মুখ খোলে প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেনা।
স্থানীয়রা জানায়, কাইছার ও তার সহযোগীরা চৈরভাঙ্গা গ্রামে ফসলি জমির ১-২ ফুট গর্ত করে মাটি কেটে নেন। এতে করে পাশ্ববর্তী জমিও ফসল উৎপাদনে উপযোগিতা হারিয়ে ফেলবে। যে জমি থেকে মাটি কাটা হয় সেটি থেকে ৫-৬ বছর ধরে ফসল উৎপাদন সম্ভব হবে না।
এদিকে, পেকুয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বিভিন্ন ব্যক্তি মালিকানাধীন ও সরকারী খাস জমি থেকে এক শ্রেণির দুর্বূত্তরা অবৈধভাবে জোরপূর্বক ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রি করে দেওয়ায় কৃষক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ভুক্তভোগীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। মাটিদস্যুরা প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পাচ্ছেন না।
পেকুয়া সদর ইউনিয়নের চৈরভাঙ্গা গ্রামের সচেতন নাগরিক রিয়াজ উদ্দিন জমির বলেন, কৃষি জমি থেকে মাটি কাটা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও কাইছার ও মইন উদ্দিনের নেতৃত্বে একাধিক সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন এলাকা থেকে ফসলি জমির মাটি কেটে বিভিন্নস্থানে বিক্রি করে আসছে। যার ফলে সড়ক ও রাস্তাঘাট ভেঙে গেছে।
পাঠকের মতামত: