ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

পেকুয়ায় সরকারি জমিতে বাজার সমিতির অবৈধ দ্বিতল ভবন!

মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া ::
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার বৃহত্তম বানিজ্যিক কেন্দ্র আলহাজ্ব কবির আহমদ চৌধুরী বাজারের তোহা মার্কেটের মাঝখানে সরকারি খাস জমি দখল করে অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়েছে পেকুয়া বাজার ব্যবসায়ী কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন (ব্যবসায়ী সমিতির) দ্বিতল ভবন! সরকারি জমিতে ভবন নির্মাণ করে বছরের পর পর কার্যক্রম চালাচ্ছে পেকুয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতি! বিগত কয়েক বছর পূর্বে স্থানীয় প্রশাসন ভবনটি উচ্ছেদের জন্য বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নিলেও পরে রহস্যজনক কারণে কোন কাজ হয়নি।

পেকুয়া বাজারের ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সরকারি খাস জমিতে বিগত ২০০২ ইংরেজী পেকুয়া বাজার ব্যবসায়ী কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়নের দোতলা কার্যালয়টি তৈরী করা হয়েছিল। সেসময় ব্যবসায়ী সমিতির দেখাদেখি আরও একাধিত প্রভাবশালী তৈরী করেছিল পাকা দোকানসহ বিভিন্ন স্থাপনা। কিন্তু বিগত ২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার মঈনুদ্দিন-ফখরউদ্দিনের আমলে পেকুয়া বাজারের সরকারি খাস জায়গা উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করেছিলে পেকুয়া উপজেলা প্রশাসন। তখনকার সময়ে পেকুয়া বাজারের প্রায় দুই শতাধিক পাকা দোকান উচ্ছেদ করে সরকারি জায়গা জবর দখলমুক্ত করে। ২০০৭ সালে পেকুয়া বাজারে চলমান উচ্ছেদ অভিযানের সময় ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা প্রশাসনের কঠোর নির্দেশনায় ব্যবসায়ী সমিতির দ্বিতলা ভবনের নিচের তলার দেয়াল ভেঙে শুধু ওপরের তলা রাখেন। পেকুয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা প্রশাসনের কাছে মৌখিক অঙ্গীকার করেন, অল্প সময়ের মধ্যে সরকারি জমি ছেড়ে দিয়ে অন্যত্র কার্যালয় করবেন। পরে সরকার ক্ষমতা আসে আর যায়। দীর্ঘ সময়েও পেকুয়া বাজারে খাস জমিতে গড়ে উঠা ব্যবসায়ী সমিতির ভবনটি সরানো হয়নি।

পেকুয়া বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, আলহাজ্ব কবির আহমদ চৌধুরী বাজারের পানবাজার সড়কের সামান্য পশ্চিম পাশের সরকারি খাস জায়গায় পেকুয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির দ্বিতল ভবনটির অবস্থান। ভবনটির নিচতলায় পাকা দেয়াল দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় তলায় পেকুয়া বাজার সমিতির কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানার জন্য যোগাযোগ করা হলে পেকুয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদার জানান, ‘পেকুয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির ভবনটি অবৈধ। এটি সরকারি খাস জায়গা নির্মাণ করা হয়েছে। বাজার সমিতিকে জায়গাটি সরকারিভাবে বরাদ্দ কিংবা ইজারা দেওয়া হয়নি। এ কার্যালয়টি ২০০৭ সালে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার কথা থাকলেও সমিতির নেতারা সরায়নি। তিনি এ বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করবেন।’

গত কয়েক বছর পূর্বে পেকুয়া উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা সাঈকা সাহাদাতের সাথে এক মতবিনিয়ম সভা অনুষ্টিত হয়েছিল। ওই সভায় স্থানীয় সংবাদকর্মীরা পেকুয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতি কর্তৃক খাস জায়গায় তৈরী ভবনের বিষয়ে ইউএনকে অবহিত করেন। এসময় ইউএনও সাঈকা সাহাদাত ভবনটি উচ্ছেদের উদ্যোগ নিলেও পরে আর সেটি বাস্তবায়ন হয়নি।

পাঠকের মতামত: