ঢাকা,রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

পেকুয়ায় খুঁটি ও তার আছে, বিদ্যুত নেই দুটি গ্রামে

পেকুয়া অফিস ::  কক্সবাজারের পেকুয়ায় খুঁটি ও তার আছে কিন্তু নেই বিদ্যুত সংযোগ। এতে করে দুটি গ্রামে অন্তত দেড় শতাধিক পরিবার বিদ্যুতবিহীন অন্ধকারের মধ্যে রয়েছে। এক শ্রেনীর মধ্যস্বত্বভোগী দালালচক্র বিদ্যুত সঞ্চালন লাইন স্থাপন করিয়ে দেয়ার কথা বলে গ্রাহকের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা। তারা প্রতি বাড়ি থেকে বিদ্যুত সঞ্চালন লাইন পাইয়ে দেয়ার কথা বলে সর্বনিন্ম ৩ হাজার টাকা থেকে ৫ হাজার টাকারও বেশী অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্টান ও বিদ্যুত বিভাগের মাঠ পর্যায়ে কিছু অসাধু কর্মকর্তা এ সব টাকা ভাগাভাগি করে পকেট ভরেছেন। এদের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন ইলেকট্রেশিয়ানদের একটি চক্রও। ত্রিমুখী দালাল চক্রের উৎপাতে বিদ্যুতের লাইন স্থাপনের কথা বলে সাধারন গ্রাহকের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন মোটা অংকের অর্থ। এ দিকে উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম প্রান্তের গ্রাম বুধামাঝিরঘোনায় বিদ্যুত সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছে বিপুল জনগোষ্টী। বুধামাঝিরঘোনা গ্রামটির তিন ভাগে বিভক্ত। উত্তর প্রান্তে রাজাখালীর সীমান্ত ভোলাখাল বহমান। পশ্চিম প্রান্তে মগনামা অংশেও কাটাফাঁড়ি নদী ও দক্ষিন অংশেও ভোলাখালের প্রশাখা নদী বহমান। এ সব নদীর কুলঘেষে এ গ্রামটি স্থিত। গ্রামে বিপুল পরিমাণ মানুষের বসবাস। স্থানীয়রা জানিয়েছেন গত ১ বছর আগে বারবাকিয়া ইউনিয়নের বুধামাঝিরঘোনা গ্রামে বিদ্যুতায়নের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছিল। পল্লী বিদ্যুত সমিতি ওই গ্রামে বিদ্যুত সঞ্চালন লাইন স্থাপন কাজ আরম্ভ করে। ঠিকাদারী প্রতিষ্টান ওই গ্রামে বিদ্যুত সংযোগ দিতে খুঁটি পুতে বিদ্যুত তার স্থাপন করে। তবে গ্রামবাসীরা জানায়, প্রতিটি বাড়ি থেকে লাইন স্থাপনের জন্য অর্থ নেওয়া হয়েছে। শতাধিক পরিবার নতুন বিদ্যুতের আওতায় আসছিলেন। এ সব পরিবার থেকে সর্বনিন্ম ৩ হাজার টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছে একটি চক্র। স্থানীয় পেঁচু মিয়ার ছেলে জিয়াবুল হক, আক্তার আহমদের ছেলে জয়নাল আবদীনকে আমরা টাকা দিয়েছি। তারা ছিল ইলেট্রেশিয়ান মোজাম্মেল ও বিদ্যুত অফিসের ওয়ারিং ইন্সপেক্টর জাফরের সোর্স। তারা আমাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে মোজাম্মেল ও জাফরকে দিয়ে দিয়েছে। কথা ছিল খুটি ও তার টানার সময় এক দফা টাকা দেয়া হবে। দ্বিতীয় দফায় মিটারের জন্য অবশিষ্ট টাকা দেয়া হবে। এ ভাবে আমরা প্রতিটি পরিবার বিদ্যুত পাওয়ার জন্য তিন থেকে ৫ হাজার টাকা দিয়েছি। তারা টাকাও ফেরত দিচ্ছে না। এমনকি মিটারও সরবরাহ দিচ্ছেন না। আমরা উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো এমন বললে মামলা মোকাদ্দমার হুমকি দিচ্ছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বুধামাঝিরঘোনা থেকে ওই চক্র বিপুল টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আবু তাহের, আবুল হাসেম, নাজিম উদ্দিন, আবু ছৈয়দ, মোহাম্মদ রশিদ, মোহাম্মদ নবী, জীবন আরা, আরিফুল ইসলাম, জালাল, আজগর, রাশেদা বেগম, রোকেয়া বেগম, নাছির উদ্দিনের পরিবারসহ বুধামাঝিরঘোনার শতাধিক পরিবার থেকে দালালচক্র টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তারা জানায়, মিটারের জন্যও আমরা টাকা দিয়েছি। আজ দিবে কাল দিবে এ ভাবে কালক্ষেপন করছে। আমরা জানি সরকার ঘুষ ছাড়াই জনগনকে বিদ্যুত সুবিধা দিচ্ছে। অথচ আমরা টাকা দেওয়ার পরও বিদ্যুত থেকে বঞ্চিত রয়েছি। বিদ্যুত সঞ্চালন লাইন স্থাপনকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্টানের উজ্জল নামক ব্যক্তি জানায়, আমরা কারও কাছ থেকে টাকা নিই নাই। কেউ যদি বলে থাকে সেটি অবশ্যই মিথ্যা। পল্লী বিদ্যুত সমিতি চকরিয়া জোনাল অফিসের ডিজিএম শাখাওয়াত হোসাইন জানিয়েছেন এ ধরনের একটি অভিযোগ আমরা পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটিও করেছি। নিশ্চিত বলছি আমি নিজেই এর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

পাঠকের মতামত: