ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

পেকুয়ায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি: একদিনে পৃথক ঘটনায় সংঘর্ষে আহত ২২

পেকুয়া প্রতিনিধি :: কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। সম্প্রতি সময়ে উপজেলার সাত ইউনিয়নের চিহ্নিত অপরাধীরা মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। আদালতের পরোয়ানা নিয়ে শত শত অপরাধী প্রকাশ্যেই পেকুয়ার সর্বত্রে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। আদালতের পরোয়ানাভূক্ত শত শত আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় অপরাধ কর্মকান্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে সচেতন মহলের অভিমত। আজ ২৫ ফেব্রুয়ারী একদিনেই পেকুয়া উপজেলার পৃথক পৃথক স্থানে পৃথক ঘটনায় অন্তঃসত্বা মহিলাসহ অন্তত ২২ ব্যক্তি আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ফেব্রুয়ারী) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের বামুলাপাড়া এলাকায় দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে আশংকাজনক অবস্থায় মহিলাসহ তিন জনকে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেছে পেকুয়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গ্রাম পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন আহতদের উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, চরিপাড়া এলাকার ছৈয়দ আহমদের ছেলে জহিরুল আলম গং ও মৃত নুরুল আলমের ছেলে মুনির আলম গং এর মধ্যে ৩৪শতক জমি নিয়ে বিগত কয়েক মাস পূর্ব থেকে বিরোধ চলছে। এরই জের ধরে আজ দুপুরে উক্ত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

দুই পক্ষে সংঘর্ষে আহতরা হলেন, একই এলাকার মৃত নুরুল আলমের স্ত্রী রাশেদা বেগম(৫০) তাঁর ছেলে মুনির আলম (৩৮), তারেকুল ইসলাম(৩২), মোঃ ফারুক(১৯), মোঃ ইদ্রিস(৩০), মেয়ে মিলি আকতার(১৭), ৫ম শ্রেণীর স্কুল পড়ুয়া ছাত্রী মনিফা আকতার (১০) ও ছৈয়দনুরের অন্তঃসত্বা স্ত্রী সুখি ইয়াসমিন (৩৫)। অপর পক্ষের আহতরা হলেন মৃত ছৈয়দ আহমদের পুত্র জাফর আলম(৬৫), আবুল হোসেনের স্ত্রী দিলুয়ারা(৪০), রমজান আলীর স্ত্রী মুনিরা ইয়াছমিন(৩৫), মনছুর আলমের স্ত্রী গোল চেহের(৪০), মোছলেম উদ্দিনের স্ত্রী মোস্তাফা খাতুন(৫৫) ও জাফর আলমের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম(৪৫)। আহতদের মধ্যে নুরুল আলম গং এর মোঃ ফারুক(১৯), মুনির আলম(৩৮) ও তাদের মা রাশেদা(৫০)কে আশংকা জনক অবস্থায় চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়।

রাজাখালী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ছৈয়দনুর জানান, দীর্ঘদিন ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আজিজুর রহমান আজুকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে এটি বিচারাধীন রয়েছে। ঘটনারদিন জমি দখলে নিতে দু’পক্ষ মাঠে নামে। এর জের ধরে এ সংঘর্ষ হয়।

অপরদিকে ২৫ ফেব্রুয়ারী সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মগনামা লঞ্চঘাট এলাকায় এস আলম সার্ভিসের শ্রমিকের সাথে সিএনজি শ্রমিকের মারামারির ঘটনায় মগনামা-বানিয়ারছড়া ও একতা বাজার সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে পয়েন্টে গাড়ি ব্লক দিয়ে ৪ ঘন্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে শ্রমিকরা। এস আলম শ্রমিক আবু তালেব এর সাথে গাড়ি রাখা নিয়ে সিএনজি চালক সাইফুল ইসলামের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয়। আবু তালেব বেশি আহত হয়েছে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।

পেকুয়া-মগনামা বানিয়ার ছড়া সড়কে সাধারণ সম্পাদক আবু মুছা বলেন,এস আলম শ্রমিক আবু তালেবের উপর হামলা হয়েছে। এখন তার অবস্থা খুব খারাপ। এ ব্যাপারে আমরা প্রশাসনের হস্তকেপ কমানা করছি।

একই দিন সকাল ১০ টার দিকে পেকুয়া উপজেলার টইটং ইউনিয়নের আবাদী ঘোনা এলাকায় বনদস্যু ও হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভূক্ত আসামী জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে কৃষক আবদুর রহিমের বসতঘরে হামলা চালিয়েছে। হামলায় কৃষক আবদুর রহিম, তার স্ত্রী ও দুই মেয়ে গুরুতর আহত হয়েছে। আহত আবদুর রহিমকে চমেকে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, পেকুয়ার পাহাড়ি এলাকার কুখ্যাত সন্ত্রাসী একাধিক মামলার ওয়ারেন্টভূক্ত আসামী জাহাঙ্গীর আলম বাহিনীর অত্যাচারে সাধারান লোকজন অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। এই সন্ত্রাসী গ্রেফতার না হওয়ায় সাধারান লোকজনের মাঝে আতংক বিরাজ করছে।

পাঠকের মতামত: