ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

পেকুয়া ভূমি অফিসের কর্মচারীর শাস্তির দাবিতে কাপনের কাপড় পরে কৃষকের অবস্থান ধর্মঘট!

মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া
কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলা ভূমি অফিসের প্রধান সহকারী তপন কান্তি পাল কর্তৃক জমি সংক্রান্ত এক কৃষকের ফাইল আটকিয়ে ২লাখ টাকা ঘুস দাবি করায় তার শাস্তির দাবিতে কাপনের কাপড় পরে শহীদ মিনারে অবস্থান ধর্মঘট পালন করেছেন ভূক্তভোগী এক কৃষক। আজ বৃহস্পতিবার ১১ মে বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত পেকুয়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কাপনের কাপড় পরে অবস্থান ধর্মঘট পালন করেছেন পেকুয়া সদর ইউনিয়নের পূর্ব বাইম্যাখালী গ্রামের মৃত বরকত আলীর পুত্র কৃষক মুবিনুল হক (৫০)। কৃষক মুবিনুল হক গতকাল ১০মে সন্ধ্যায় পেকুয়ার স্থানীয় একটি প্রেস ক্লাবেও পেকুয়া উপজেলা ভূমি অফিসের প্রধান সহকারী তপনের অপসারণ দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছিল। সংবাদ সম্মলেন করার পরেও ভূমি অফিসের কর্মচারী তপনের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন ধরনের আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় আজ ১১মে পেকুয়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তিনি কাপনের কাপড় পরে অবস্থান ধর্মঘট পালন করেছেন।
ভূক্তভোগী কৃষক মুবিনুল হক জানান, তার চার বোন যথাক্রমে জুবাইদা বেগম, ছালেহা বেগম, লুৎফর নাহার ও খদিজাতুল কুবরা গত এক বছর পুর্বে পেকুয়া উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার বরাবরে পেকুয়া মৌজার ৭৮৩বিএস খতিয়ানের বিরুদ্ধে একটি আপত্তি অভিযোগ দায়ের করেন। ৭৮৩ খতিয়ানে ১০টি দাগ রয়েছে। ১০টি দাগে চার বোন ১৮শতক জমি পান। কিন্তু ৭৮৩ খতিয়ানের ২৪২৪দাগের ২৩শতক জমিতে বর্তমানে চার বোনের বসতবাড়ি, পুকুর ও গাছপালাসহ অন্যান্য স্থাপনা রয়েছে। চার বোনের দখলে ৫শতক জমি বেশি রয়েছে। তিনি আরো জানান, মা আনোয়ারা বেগম, ভাই আজিজুল হক ও তার নামে সৃজিত ৭১৯২নং খতিয়ানের ২৩৮৯দাগের ০.৬ শতক জমি রয়েছে। এই জমির নামজারি খতিয়ান চার বোন নিজেদের নামে সৃজন করার জন্য আপত্তি দিলেও সেটি বেশ কয়েকবার পেকুয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর দফতরে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে শুনানী হয়। সর্বশেষ শুনানীতে গত ১০/০৪/২০২৩ইংরেজী তারিখে মুবিনুল হকের চার বোনের আপত্তি খারিজ করে দেন পেকুয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি)। তাদের আপত্তির পক্ষে বৈধ কোন যুক্তি উপস্থাপন করতে পারেনি।
মুবিনুল হক আরো অভিযোগ করেছেন, তার চার বোনের আপত্তি এসিল্যান্ড খারিজ করে দিলেও সেটির আদেশের সার্টিফাই কপি নেওয়ার জন্য পেকুয়া ভূমি অফিসের প্রধান সহকারী তপন কান্তি পালের দারস্থ হন। কিন্তু তপন কোন মতেই তাকে সার্টিফাই কপি দিচ্ছেনা। আদেশের সার্টিফাই কপি নিতে হলে তার কাছ থেকে ২লাখ টাকা ঘুষ দাবি করে বসেন তপন কান্তি পাল। পেকুয়া ভূমি অফিসের এসিল্যান্ড শুনানিতে ওই চার বোনের আপত্তি খারিজ করে দিলেও ওই চার বোন স্থানীয় তারেক ও জালাল নামের দুই ব্যক্তির কুপরামর্শে ভূমি অফিসের প্রধান সহকারী তপনের সাথে গোপনে আঁতাত করেন। তপনের সাথে আঁতাত করায় মুবিনুল হককে আপত্তি খারিজের আদেশনামার সার্টিফাই কপি সরবরাহ করছেনা। গত ঈদের পর মুবিনুল হকের কাছ থেকে ২লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন ভূমি অফিসের প্রধান সহাকারী তপন। তার দাবিকৃত ঘুষের টাকা না দিলে চার বোনের পক্ষে খতিয়ান সৃজন করে দিবে বলে হুংকার দিচ্ছেন।

পাঠকের মতামত: