নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলা সদরের আনোয়ারুল উলুম ইসলামিয়া আলিম মাদ্রসার মালিকানাধীন ৬০ শতক জমি নিয়ে বিরোধ প্রকট আকার ধারণ করেছে। মাদ্রাসার নামে দানকৃত দীর্ঘ ৪০ বছরের ভোগ দখলীয় জমিতে বাধা প্রদান করা হচ্ছে ফসল রোপণে। স্থানীয় একটি চক্র চলতি বছরে বুরো ফসল রোপণে বাধা প্রয়োগ করার গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ দিকে প্রতিষ্ঠানের নামে কবলা সম্পাদিত জমিতে বল প্রয়োগ করার এ ধৃষ্টতা পেকুয়ায় চলমান রয়েছে। ৬০ শতক জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় অপর একটি পক্ষের দ্বন্ধের জের ধরে আইন শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার উপক্রমও দেখা দিয়েছে। উপজেলার সদর ইউনিয়নের সরকারীঘোনা এলাকায় জমি জবর দখলের এ অপচেষ্টা চলছে।
মাদরাসা কমিটির লোকজন জানান, পেকুয়া মৌজার বিএস খতিয়ান নং ৯৫ এর বিএস দাগ ৭৭৫,৭৭৬, ৮৪৪ দাগের আন্দরে ৬০ শতক জমি প্রকৃত মালিক পেকুয়া আনোয়ারুল উলুম ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা। পেকুয়ার পুরাতন জমিদার বাড়ির মরহুম নুরুল হক চৌধুরীর স্ত্রী মনজুরা বেগম, ছেলেদের মধ্যে রিদুয়ান আল নেওয়াজ চৌধুরী, একই বাড়ির মৃত ছৈয়দুল হক চৌধুরীর পুত্র নাজমুল হক চৌধুরী পুতু মিয়া ও সাজেদুল করিম চৌধুরী গং ২০০২ সালের ১৩ এপ্রিল পেকুয়া আনোয়ারুল উলুম মাদ্রাসার নামে ৬০ শতক জায়গা রেজিষ্ট্রি দেন। জায়গাটির স্থিতি সদর ইউনিয়নের সরকারীঘোনায়। ৬০ শতক জমিতে দুই ফসলী ধান চাষ হয়। বর্ষার সময় আমন চাষ ও শুষ্ক মৌসুমে হয় জমিতে বুরো চাষ।
জানা গেছে, গত কয়েকদিন আগে থেকে মাদ্রাসার পক্ষে নিযুক্ত চাষীরা জমিতে ধান চাষের জন্য সেঁচ ও প্রস্তুতি কাজ শেষ করছিল। চারা রোপণের ঠিক আগ মুহুর্তে ওই জমি নিয়ে দ্বন্ধ দেখা দেয়। জমিতে ধানের চারা রোপণ করা হয়। অভিযোগ উঠেছে, সদর ইউনিয়নের সরকারীঘোনায় মৃত তজু মিয়ার পুত্র মোক্তার আহমদ ও তার ৩ পুত্র জাহাঙ্গীর, নাছির উদ্দিন, জসিম উদ্দিনসহ তার স্ত্রী সন্তানরা জমিতে গিয়ে অনুপ্রবেশ করে জমিতে সদ্য রোপিত ধানের চারায় ব্যাপক তান্ডব চালায়। এমনকি রোপিত ধানের চারাগুলি তারা নষ্ট করে ফেলে। তারা লাঠি সোটা নিয়ে জমি দখলের কুমানসে ফসলে হানা দিয়েছে।
মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক দেলোয়ার হোসাইন জানান, ৬০ শতক জমি প্রতিষ্ঠানকে দান করেছে। জমিদার বাড়ীর কৃতি সন্তান মরহুম নুরুল হক চৌধুরী স্ত্রী ও ১ পুত্র, নাজমুল হক চৌধুরী পুতু মিয়া গং যৌথ কবলায় জায়গাটি অত্র প্রতিষ্ঠানকে কবলা দেন। কিন্তু জমির উপর খারাপ মানুষের কুদৃষ্টি পড়েছে। তারা এসে জমিতে দখল প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখে। প্রতিষ্ঠান থেকে আমিসহ কয়েকজন শিক্ষক সরেজমিনে গিয়েছিলাম। কিন্তু তারা কিছুতেই মানতে নারাজ। উল্টো বিবাদীগণ চকরিয়া সহকারী জজ আদালতে মামলা রুজু করে। যার নং ৪৫/২৩। এখন ফসল রোপণ মৌসুমে তারা সংঘবদ্ধ অবস্থায় এসে জমিতে রাজত্ব কায়েম করতে চান।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুহাম্মদ আমিনুর রশিদ অভিযোগ করে জানান, আমাদের চাষারা জমিতে দু’বার ফসল রোপণ করেছে। জবর দখল চেষ্টাকারীরা একবার জমিতে অনুপ্রবেশ করে। ফসলে তান্ডব চালায়। এরপর বিষয়টি পুলিশসহ প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে অবহিত করেছি। বর্তমানে মাদ্রাসার জায়গা আমাদের দখলে রয়েছে। সুন্দর ও শান্তিপূর্ণভাবে ফসল রোপণ করা হয়েছে।
পাঠকের মতামত: