ঢাকা,শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

পানিতে ডুবে কেন এত শিশুমৃত্যু

কক্সবাজার প্রতিনিধি ::  কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায় প্রতিবছর পানিতে ডুবে অর্ধশতাধিক শিশুর মৃত্যু হয়। এ নিয়ে চলতি বছরে ২২ শিশু এবং ২০২০-২১ সালে অন্তত ১৩৮ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। কুতুবদিয়ায় পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর সর্বশেষ উদাহরণ গতকাল মঙ্গলবার সকালে উপজেলার কৈয়ারবিল ইউনিয়নে হাসান তামিম নামের ১৬ মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যুর ঘটনা। কিন্তু কেন এই একটি উপজেলায় প্রতিবছর পানিতে ডুবে এত শিশু মারা যায়?

সাগরের লবণাক্ত জলরাশি বেষ্টিত দ্বীপ কুতুবদিয়া। এ দ্বীপের অধিকাংশ কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, মানুষের স্বাদু পানির বড় উৎস বাড়ির উঠানের পুকুর। আর এগুলোই হয়ে ওঠেছে শিশুদের জন্য মৃত্যুকুপ।

এখানে প্রতিবছর এত শিশুর মৃত্যুরোধে তারা কী করছেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে শিশুর অভিভাবকদের মাঝে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। যাদের বাড়িতে পুকুর আছে, তা যেন যথাযথভাবে ঘেরাও দিয়ে রাখা হয়; যাতে শিশুরা পাড়ে গেলেও পুকুরে পড়ে না যায়।
কক্সবাজার শহর থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার উত্তরে দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ার অবস্থান। মৎস্য ও লবণ উৎপাদনের জন্য এ দ্বীপটি বিখ্যাত। আর এ দ্বীপের এত শিশু মৃত্যুর কারণকে ‘অভিভাবকদের অসাবধানতা ও অসচেতনা’কে দায়ী করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।

সুত্র জানায়, কুতুবদিয়ায় পানিতে ডুবে ২০২০ সালে ৮১ শিশু, ২০২১ সালে ৫৭ শিশু এবং চলতি বছরে তিনমাসে  এ পর্যন্ত ২২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

স্থানীয় নারী সমাজকর্মী ইয়াসিন আকতারের মতে, বাবারা থাকেন কর্মস্থলে, আর মায়েরাও সাংসারিক কাজে এতই ব্যস্ত থাকেন যে, সবসময় ছেলেমেয়েদের খোঁজ রাখা সম্ভব হয় না। এ কারণে সাতার না জানা পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুরাই বেশি পানিতে ডুবে মারা যায়। এসব শিশুমৃত্যুর ঘটনায় উদ্বিগ্ন অনেক বাসিন্দা বাড়ির পুকুরগুলো ভরাট করে ফেলছেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বনবিদ্যা ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, লবণাক্ত জলরাশি বেষ্ঠিত কুতুবদিয়ায় সুপেয় পানির অন্যতম প্রধান উৎস পুকুরের মতো সাধু পানির জলাধারগুলো। তাই শিশু মৃত্যুর কারণে পুকুর ভরাট না করে পুকুরকেই শিশুদের নাগালে রাখা উচিৎ।

পাঠকের মতামত: