চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনের মামলায় শোকজের জবাব না দেওয়া পাঁচলাইশ থানার সেই ওসি ও এসআই নিরুদ্দেশ রয়েছেন। এক মাসের বেশি সময় ধরে ওসি ছাড়াই চলছে থানার কার্যক্রম, বলছে সিআইডি রিপোর্ট। এদিকে আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে আদালতে আবেদন করেছে বাদীপক্ষ।
সোমবার চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ বেগম জেবুন্নেছার আদালতে শুনানি চলাকালে মুনতাকিমের পক্ষের আইনজীবী এসব বিষয় বিচারকের নজরে আনেন।
বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের (বিএইচআরএফ) মহাসচিব অ্যাড. জিয়া হাবীব আহসান বলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিসের বর্ধিত ফি-বিরোধী বিক্ষোভ থেকে সৈয়দ মোহাম্মদ মুনতাকিন প্রকাশ মোস্তাকিমকে গ্রেপ্তার করে হেফাজতে রেখে নির্যাতনের অভিযোগে পাঁচলাইশ থানার ওসিসহ দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়। সেই মামলায় আসামিদের শোকজ করার পরেও তারা কোনো জবাব দেননি। সিআইডির তদন্ত রিপোর্ট সূত্রে জানতে পারি, পাঁচলাইশ মডেল থানার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ থানায় চারদিনের ছুটিতে গিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করছেন না ওসি। আদালতের আদেশ অমান্য করায় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেছি।
তিনি বলেন, এদিকে মুনতাকিমের ছেঁড়া কাপড়-চোপড় জব্দ করা হয়নি। এছাড়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা বালামসহ অন্য আলামত জব্দ করা হয়নি। এসব জব্দ করার জন্য আদালত বরাবর অনুরোধ জানিয়েছি। বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে আদেশ দিবেন আদালত। এ বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী জিয়া হাবীব আহসান।
সিআইডি বিশেষ পুলিশ সুপার (চট্টগ্রাম জেলা ও মেট্রো) মু. শাহনেওয়াজ খালেদ আদালতের নির্দেশে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনের মামলায় তদন্ত করেন। তদন্ত রিপোর্টে তিনি উল্লেখ করেন, ২২ ফেব্রুয়ারি মামলার বিবাদী পাঁচলাইশ থানার ওসি মো. নাজিম উদ্দিন ও এসআই আব্দুল আজিজকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়। গত ৬ মার্চ নোটিশের বিপরীতে ফিরতি বার্তা আসে।
এতে জানানো হয়, ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ছুটিতে থাকা অবস্থায় অসুস্থতার কারণে ওসি মো. নাজিম উদ্দিন এখনো কর্মস্থলে আসেননি। অন্যদিকে এসআই আব্দুল আজিজ ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে শারীরিকভাবে অসুস্থতার কারণে বিশ্রামে গিয়ে কর্মস্থলে গরহাজির আছেন।
যোগাযোগ করা হলে পাঁচলাইশ মডেল থানার ডিউটি অফিসার এসআই মুনিরা বলেন, অনেকদিন ধরে শারীরিকভাবে অসুস্থতার কারণে তিনি ছুটিতে রয়েছেন।
এর আগে ১০ জানুয়ারি সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রধান গেটে কিডনি ডায়ালাইসিসের বর্ধিত ফি কমানোর দাবিতে মানববন্ধনের একপর্যায়ে ওসি নাজিম উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সেখানে গিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হন। এসময় মোস্তাকিমকে আটক করে একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ঢুকিয়ে মারধর করেন ওসি নাজিম। পরে থানায় নিয়ে তাকে আবারও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি পাঁচলাইশ থানার ওসি মো. নাজিম উদ্দিন ও এসআই আব্দুল আজিজকে বিবাদী করে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে আদালতে মামলা দায়ের করেন মুনতাকিম।
পাঠকের মতামত: