কক্সবাজার প্রতিনিধি :;
রোহিঙ্গাদের আগমনে বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পে। পর্যটন মৌসুম শুরুর এক মাস পার হলেও পর্যটক শূন্য সমুদ্র সৈকত। মৌসুমের শুরুতে কাঙ্ক্ষিত পর্যটক না আসায় ক্ষতির শঙ্কিত ব্যবসায়ীরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রোহিঙ্গাদের কারণে নিরাপত্তা আতংকে পর্যটকরা কক্সবাজারমুখী হচ্ছে না। তবে পর্যটকদের নিরাপত্তায় সব ধরণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে দাবি ট্যুরিস্ট পুলিশের।
সাগরপাড়ে শান্ত ঢেউয়ের সাথে হিমেল হাওয়া জানান দিচ্ছে শীত আসছে। অন্যান্য বছর হাল্কা শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশ ও দেশের বাইরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজারো পর্যটক বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে ছুটে আসলেও এবারের চিত্র ভিন্ন। পর্যটন মৌসুম শুরুর একমাস পার হলেও আশানুরূপ পর্যটকের দেখা নেই পর্যটন শহরে। অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়কে পর্যটন মৌসুম ধরে আশায় বুক বাঁধেন সাগর পাড়ের ব্যবসায়ীরা। কিন্তু সৈকত পর্যটক শূন্য থাকায় ছাতা, বিচ বাইক, ফটোগ্রাফার, বার্মিজ মার্কেটের ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে রেস্তোরা ও হোটেল মোটেলের ব্যবসায়ীরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘প্রতি বছর এই সময়ে ২০ হাজার টাকা আয় হলেও, এ বছর দিনে একশ আয় করতে কষ্ট হচ্ছে। রোহিঙ্গারা আসার কারণে এখানে পর্যটক নাই, আমরা মাথায় হাত দিয়ে বসে আছি।’
বার্মিজ মার্কেটের ব্যবসায়ীরা জানান, পর্যটকরা কখন আসবে, এই আসায় আমরা বসে আছি। পর্যটকরা না আসায়, আমাদের বেচা-বিক্রি কম। তাই একটু চলতে কষ্ট হচ্ছে।
অন্যদিকে কক্সবাজার হোটেলের এক কর্মকর্তা জানান, সাধারণত সেপ্টমবর-অক্টোবরের দিকে হোটেলগুলোতে পর্যটকদের বেশ চাপ থাকে। রোহিঙ্গা ইস্যুর কারণে আমাদের এই বছর ২০ পার্সেটও বুকিং নাই।
মূলত রোহিঙ্গা সমস্যার কারণে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় থাকায় পাশাপাশি সৃষ্ট নানা কারণেই বর্তমানে পর্যটকরা কক্সবাজারমুখী হচ্ছে না বলে মনে করছেন মোটেল মালিক সমিতি এ নেতা।
কক্সবাজারের মোটেল মালিক সমিতির প্রচার সম্পাদক আবু তালেব শাহ বলেন, টুরিস্ট পুলিশ ও জেলা পুলিশ আরেকটু বাড়িয়ে দেন তাদের তৎপরতা। তাহলে আমাদের পর্যটকরা নিরাপত্তা অনুভব করলে; পর্যটন ব্যবসায় আমরা আরো লাভবান হতে পারবো।
কোন রোহিঙ্গাকে সৈকতসহ পর্যটন এলাকায় প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না উল্লেখ করে পর্যটকদের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।
কক্সবাজারে ট্যুরিস্ট পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার হোসাইন মো. রায়হান কাজেমী বলেন, ‘যারা ট্যুরিস্ট আসবে, তাদের নিরাপত্তায় আমরা সচেষ্ট আছি। আর সমুদ্র সৈকতে যাতে কোন রোহিঙ্গা প্রবেশ করতে না পারে। সে ব্যাপারে আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি।
হোটেল মালিকদের দেয়া তথ্য মতে, গত বছর অক্টোবরে কক্সবাজারে ভ্রমণে এসেছিলেন দুই লাখের বেশি পর্যটক। যা এবছর নেমে এসেছে ১০ হাজারে। এছাড়া প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকাও পর্যটক কমার বড় কারণ বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
পাঠকের মতামত: