সারাদেশে ৪র্থ ধাপে বিভিন্ন ইউনিয়নে ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া, গোলা-গুলি, বোমাবাজি, সংঘাত-সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে ব্যালট ডাকাতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সাবেক এমপি ০৭ মে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ৪র্থ ধাপে আজ ৭০৩টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে ব্যাপক সংঘাত-সংঘর্ষ, গোলাগুলি, ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া, বোমাবাজি ও ভোট ডাকাতির ঘটনার দ্বারা আবারও প্রমাণিত হলো যে, বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকার ও সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোন নির্বাচনই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হওয়া সম্ভব নয়।
আজ অনুষ্ঠিত ৪র্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও সংঘাত-সংঘর্ষ, গোলাগুলি, ভোটকেন্দ্র দখল করে টেবিলের ওপর ফেলে নৌকা মার্কায় সিল মারা হয়েছে এবং নির্বাচনের পূর্বেই ৬ মে দিবাগত রাতে নৌকা মার্কায় সিল মেরে ভোটের বাক্সে ঢুকানো হয়েছে। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের ভোট কেন্দ্র দখল, জোর করে ব্যালটে সিল মারা, জাল ভোট প্রদান ইত্যাদি বেআইনী কাজে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করেছে নির্বাচনী কর্মকর্তা এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। যেভাবে ভোট ডাকাতি করা হয়েছে তাকে কোনভাবেই নির্বাচন বলা যায় না। নির্বাচনের নামে প্রহসন করা হচ্ছে।
গত ৬ মে দিবাগত রাতে কুস্টিয়া সদর উপজেলার আবদালপুর ইউনিয়নের আবদালপুর উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে ১৩২৮টি ব্যালট পেপারে সিল মারা হয়েছে। শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতি উপজেলায় আ: বারী নামের একজন প্রিজাইডিং অফিসার ঘুষ খেয়ে হাতে নাতে জনতার কাছে ধরা পড়েছে। কুমিল্লা জেলার চান্দিনায় নৌকা মার্কার সমর্থক সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের মুখে এক হাজার ব্যালট পেপার ছিনতাই করে সিল মেরে বাক্সে ঢুকিয়েছে। ফেনী জেলার ৪টি ইউনিয়নে ভোট কেন্দ্র দখল করে নৌকা প্রতীকে সিল মেরে বাক্সে ঢুকানো হয়েছে। কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ারচর উপজেলার রামদী ইউনিয়নের কোনাপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ব্যালট পেপার ছিনতাই করা হয়েছে। সংঘাত-সংঘর্ষ, গোলাগুলি, বোমাবাজির ফলে ভোটকেন্দ্রগুলো ভোটার শূন্য হয়ে যায়।
জামালপুরের বক্শীগঞ্জ উপজেলায় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করে ব্যালটে সিল মেরেছে। ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নে ভোট শুরুর পূর্বেই ভোটকেন্দ্র দখল করে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা নৌকা মার্কায় সিল মেরে বাক্সে ঢুকিয়েছে। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মুন্সীরহাট ইউনিয়নের জুগিরহাট হোসাইনিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে গতরাতে ব্যালটে সিল মারার সময় সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও যুবলীগের নেতাসহ ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। নির্বাচনী সংঘর্ষে কুমিল্লায় একজন, নরসিংদীতে একজন, ঠাকুরগাঁও জেলায় একজনসহ মোট তিন জন নিহত ও গুলিবিদ্ধ হওয়াসহ প্রায় দুই শত লোক আহত হয়েছে।উদাহরণ আর না বাড়িয়ে বিনা দ্বিধায় বলা যায় যে, সর্বত্রই নির্বাচনের নামে ব্যালট ডাকাতি হয়েছে। সরকার ইউনিয়ন পরিষদগুলো দখলের জন্য নির্বাচন ব্যবস্থাকেই ধ্বংস করে দিচ্ছে।
৪র্থ ধাপের নির্বাচনে যে সব ভোটকেন্দ্রে সংঘাত-সংঘর্ষ, গোলাগুলি, বোমাবাজি, ভোট ডাকাতি, ব্যালট বাক্স ছিনতাই ও জাল ভোটসহ নানা অনিয়ম হয়েছে সে সব ভোটকেন্দ্রে নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় নির্বাচন দেয়ার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
পাঠকের মতামত: