ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪

তিতলির প্রভাবে শাহপরীর দ্বীপে অর্ধশতাধিক ঘর বিলীন

জসিম মাহমুদ, টেকনাফ ::
ঘুর্ণিঝড় তিতলির প্রভাবে জোয়ারে পানি বেড়ে যাওয়ায় টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপের মাঝার পাড়া ও দক্ষিন পাড়া এলাকায় তীব্র ভাঙন হয়েছে। গত দুইদিনে মসজিদসহ অর্ধশতাধিক বাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। হুমকিতে রয়েছে আরও কয়েকশতাধিক পরিবার।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বঙ্গোপসাগরে ভাঙনে সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপের মাঝার পাড়া ও দক্ষিন পাড়া অর্ধশতাধিক বসতবাড়ি বিলিন হয়ে যায়। এ ছাড়া ভাঙনের হুমকিতে আছে ইউনিয়নের ঘোলাপাড়া, পশ্চিমপাড়া, দক্ষিণপাড়া ও জালিয়াপাড়ার একাংশে ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, সমস্যা-সংকটে এভাবে প্রায় বিচ্ছিন্ন জনপদে পরিণত হতে যাচ্ছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর শাহপরীর দ্বীপ। টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপে প্রায় ৪০ হাজার লোকের বসবাস। পর্যটকদের জন্য অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান হয়ে উঠতে পারে শাহ পরীর দ্বীপ, সেটির সংকট সমাধানে যথাযথ নজর নেই কর্তৃপক্ষের।
গত কাল বৃহ¯পতিবার দুপুরে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, অর্ধশতাধিক বসতবাড়ি বিলিন হয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে পড়েছে। জোয়ারের আঘাতে ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে যাওয়ায় অনেকে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। এলাকার শতাধিক বাড়ি, রাস্তাঘাট ও ফসলি জমি সাগরে বিলীন হয়ে যাওয়ার শঙ্কার মধ্যে রয়েছে। খবর পেয়ে বিকাল ৪টার সময় ওই এলাকায় পরিদর্শনে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মো. রবিউল হাসান ও সহকারী কমিশনার ভূমি প্রণয় চাকমা।
মাঝরপাড়ার নুর বেগম বলেন, জোয়ারের আঘাতে তাঁর বসতবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কোথায় আশ্রয় নেবেন, তা বুঝে উঠতে পারছি না।
৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নুরুল আমিন বলেন, জোয়ারের পানি বেড়ে গত দুইদিনে প্রায় অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি সাগরে বিলীন হয়ে গেছে। সাগরে বিলীন হয়ে গেছে শাহপরীর দ্বীপের একাংশ। আরও কয়েকটি গ্রামের মানুষ ভাঙনের আতঙ্কে নিয়ে দিন কাটাচ্ছে। যে সব স্থান দিয়ে পানি ডুকছে সে সব স্থানে বালির জিও ব্যাগ ও বস্তা দিয়ে এলাকা রক্ষা করতে হবে।
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সবিবুর রহমান বলেন, ১০৬ কোটি টাকার বেড়িবাধ সংস্কারের কাজ চলছে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর তত্বাবধানে। শাহপরীর দ্বীপের প্রায় ৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। ইতিমধ্যে ৫৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজও দ্রুত সম্পন্ন করার লক্ষ্যে কাজ চলছে। এরমধ্যে গত কাল জোয়ারের প্রভাবে ওই এলাকার কিছু বসতঘর সাগরে বিলিন হয়েছে বলে শুনেছি। তবে যে খোলা বাধঁ থেকে সাগরের পানি ডুকছে সেখানে জিও ব্যাগ বসানো হয়ে ছিল। যে-স্থান দিয়ে পানি ডুকছে সেখানে আবারও বালির জিও ব্যাগ ও বস্তা বসানো হবে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল হাসান বলেন, শাহপরীর দ্বীপের জোয়ারের প্রভাবে ভেঙে যাওয়া সমজিদ ও ঘরবাড়ি পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে জনপ্রতিনিধিদের। হুমকিতে রয়েছে ওই এলাকার আরও কয়েকশতাধিক পরিবার।

পাঠকের মতামত: