ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

তামাক কোম্পানির অপতৎপরতা বন্ধে আইন সংশোধন চায় তামাকবিরোধীরা

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ::

চলমান কোভিড-১৯ মহামারীতে ব্যবসা অব্যাহত রাখতে তামাক কোম্পানিগুলো সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি (সিএসআর), লবিং, অনুদান ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রচারসহ বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করছে। আজ ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ শনিবার ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস এর সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত ‘কোভিড-১৯ ও তামাক কোম্পানি’ শীর্ষক ওয়েবিনারে প্রজ্ঞা’র পক্ষ থেকে তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক প্রকল্প প্রধান হাসান শাহরিয়ার এ বিষয়ে মূল উপস্থাপনা তুলে ধরেন। গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রগতির জন্য জ্ঞান- প্রজ্ঞা’র পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তামাককে করোনা সংক্রমণ সহায়কপণ্য হিসেবে চিহ্নিত করলেও দুইটি বহুজাতিক তামাক কোম্পানি করোনা মহামারীর মধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য হিসেবে সিগারেট উৎপাদন, বিপণন ও তামাক পাতা ক্রয় অব্যাহত রাখার জন্য অনুমতিপত্র আদায় করে নিতে সক্ষম হয়েছে। সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচির নামে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও মাঠ প্রশাসনকে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী প্রদান, ব্রান্ড ইমেজ প্রচারের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ফেসবুক পেইজে লাইভ টকশো এ অংশগ্রহণ, করোনায় ধূমপায়ীদের ক্ষতি কম এজাতীয় ভ্রান্ত তথ্য প্রচার ইত্যাদি অব্যাহত রেখেছে কোম্পানিগুলো।  তরুণ সমাজকে টার্গেট করে ভ্যাপিং ব্যবসায়ীরা মরিয়া হয়ে উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করে তরুণদের ভ্যাপিং পণ্যে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে।  ওয়েবিনারে অংশ নেয়া তামাকবিরোধী সংগঠনসমূহের নেতৃবৃন্দ জানান তামাক কোম্পানির সিএসআর কার্যক্রম বাস্তবায়ন করার সুযোগ থাকায় সরকারের নীতিপ্রণেতাদের সাথে অপ্রয়োজনীয় যোগাযোগ তৈরির সুযোগ সৃষ্টি হয়। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তামাক কোম্পানিগুলো তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক নীতি গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করে থাকে। অবিলম্বে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করে তামাক কোম্পানির সকল সিএসআর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবি জানান তারা।  একইসাথে ওয়েবিনারে ই-সিগারেটসহ সকল ভ্যাপিং এবং হিটেড তামাকপণ্যের উৎপাদন, আমদানি ও বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধের আহবান জানানো হয়।   এছাড়া সিগারেটের মতো বিষাক্তপণ্য অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের তালিকায় থাকাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকারের পরিপন্থী বলে উল্লেখ করেন বক্তারা।  তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে ১৯৫৬ সালের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করে তামাকপণ্যকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের তালিকা থেকে বাদ দেয়ার দাবি জানান।

ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ভাইটাল স্ট্রাটেজিস এর বাংলাদেশ কান্ট্রি এডভাইজার মো. শফিকুল ইসলাম, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস এর মুখ্য পরামর্শক ড. মো. শরিফুল আলম, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল (এনটিসিসি) এর সাবেক সমন্বয়কারী এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এর সাবেক অতিরিক্ত সচিব মুহাম্মদ রূহুল কুদ্দুস, বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটি এর প্রজেক্ট ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং আর্ক ফাউন্ডেশন এর নির্বাহী পরিচালক ড. রুমানা হক, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এর ইপিডেমিওলজি এন্ড রিসার্চ বিভাগের অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী, ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর নির্বাহী পরিচালক সাইফুদ্দিন আহমেদ, দি ইউনিয়ন এর কারিগরি পরামর্শক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম, তামাকবিরোধী নারী জোট (তাবিনাজ) এর আহবায়ক ফরিদা আক্তার, ঢাকা আহছানিয়া মিশন এর হেলথ ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ, জাতীয় যক্ষা নিরোধ সমিতি (নাটাব) এর নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মাদ কামাল উদ্দিন, বাংলাদেশ সেন্টার ফর কমিউনিকেশন প্রোগ্রাম (বিসিসিপি) এর টোব্যাকো কন্ট্রোল প্রোগ্রাম টিম লিডার মোহাম্মদ শামিমুল ইসলাম, ভয়েস এর নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদ, গ্রাম বাংলা উন্নয়ন কমিটি এর নির্বাহী পরিচালক একেএম মাকসুদ এবং প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের। এছাড়াও জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল (এনটিসিসি) এর প্রতিনিধিবৃন্দসহ ওয়েবিনারে অংশ নেন তামাকবিরোধী সংগঠন প্রত্যাশা, বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট, বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি (বিএনটিটিপি), এইড ফাউন্ডেশন, টোব্যাকো কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ সেল (টিসিআরসি), ডেভেলপমেন্ট অ্যাকটিভিটিজ অফ সোসাইটি (ডিএএস), ইপসা ও ইউনাইটেড ফোরাম এগেইনস্ট টোব্যাকো (উফাত)।

পাঠকের মতামত: