ঢাকা,শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের বর্ণাঢ্য উদ্বোধন

ট্রাইব্রেকারে রামুর কাছে ৪-৩ গোলে হেরে ফেভারিট চকরিয়ার বিদায়

এম.এ আজিজ রাসেল ::  মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে কক্সবাজার পৌরসভা আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট—২০২১ এর বর্ণাঢ্য উদ্বোধন হয়েছে। শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) বিকাল ৩টার দিকে কক্সবাজার বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে বেলুন উড়িয়ে টুর্নামেন্টের আনুষ্ঠানিক শুভ উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যের শুরুতে নিজেকে ওই মাঠের সাবেক খেলোয়াড় উল্লেখ করে গৌরবের সাথে তিনি বলেন, খেলাধুলায় সারাদেশের মধ্যে কক্সবাজার অনেক এগিয়ে গেছে। এখানকার ছেলেরা ফুটবল—ক্রিকেটসহ বিভিন্ন ইভেন্টে জাতীয় পর্যায়ে ভাল খেলে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্রীড়া বান্ধব সরকার। সে জন্য প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতায় ইতোমধ্যে এখানে আন্তর্জাতিক মানের একটি ফুটবল স্টেডিয়াম নির্মাণের উদ্যোগও গ্রহণ করা হয়েছে। কাজ চলছে বিকেএসপির।
তিনি আরও বলেন, কক্সবাজার স্টেডিয়াম ঘিরে আমার অনেক স্মৃতি রয়েছে। এখানে আমি নিয়মিত ফুটবল খেলতাম। এই স্টেডিয়াম থেকে অনেক কৃতি ও গুণী খেলোয়াড় জন্ম হয়েছে। দেশি—বিদেশি তারকা খেলোয়াড়েরা এই স্টেডিয়ামে খেলেছেন। তাই কক্সবাজার স্টেডিয়ামের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে ইনশাআল্লাহ। পাশাপাশি ক্রীড়ার এই উর্বর ভূমির উন্নয়নে সরকার সবধরণের সহযোগিতা করে যাবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের মূল উদ্যোক্তা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এমন একজন নেতা, যাঁর সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিহাসের সম্পর্ক গভীর। ঘাতকের বুলেট তাঁকে হত্যা করলেও সে সম্পর্ক মোটেই ছিন্ন করতে পারেনি। যত দিন যাচ্ছে, ততই ইতিহাসে তাঁর নাম সমুজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। এই টুর্নামেন্টের মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে আরও বিশদভাবে জানতে পারবে। এছাড়া তরুণ প্রজন্মকে মাদক থেকে দুরে রাখতে এই আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, ফুটবল বাঙালির ঐতিহ্যের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বাঙালি ফুটবল ভালোবাসে এটা নতুন কিছু নয়। এক সময় বাঙালির কাছে তুমুল জনপ্রিয় ছিল এই খেলা। পাড়া—মহল্লা, গ্রাম, স্কুল—কলেজসহ প্রায় সব স্থানেই বিভিন্ন সময় এ খেলার আসর জমত। কালের বিবর্তনে এ খেলার প্রতি একটুও কমেনি বাঙালির ফুটবল—প্রেম।
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের আহবায়ক কক্সবাজার পৌরসভার প্যানেল মেয়র—২ হেলাল উদ্দিন কবিরের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, কক্সবাজার—২ আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাজাহান আলি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আমিন আল পারভেজ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জাহিদ ইকবাল, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরী, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নজিবুল ইসলাম, মহেশখালী পৌর মেয়র মকছুদ মিয়া, কক্সবাজার পৌরসভার প্যানেল মেয়র—১ মাহবুবুর রহমান চৌধুরী, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) নির্বাহী সদস্য বিজন বড়ুয়া, জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সভাপতি ফজলুল করিম সাঈদীসহ পৌর কাউন্সিলরবৃন্দ ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তারা।
উদ্বোধনী খেলায় মুখোমুখি হয় হট ফেভারিট চকরিয়া বনাম শক্তিশালী রামু উপজেলা। ৮০ মিনিটের খেলায় আক্রমণ পাল্টা আক্রমণ হলেও কোন দলই গোলের দেখা পায়নি। রেফারির শেষ বাঁশিতে খেলা গড়ায় ট্রাইব্রেকারে। ফলে গোল শূণ্য ড্রতে হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়ে উভয় দলের খেলোয়াড়েরা। ৫টি করে ট্রাইব্রেকার শটে চকরিয়া ৩টি গোল করলেও বাকি ২টি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। অপরদিকে রামু উপজেলা ৫টি শটে ৪টি গোলের দেখা পায়। এতে বিজয় উচ্ছ্বাসে মেতে উঠে রামু শিবির। ৪—৩ গোলে হার নিয়ে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়ে শক্তিশালী চকরিয়া। অন্যদিকে নকআউট পদ্ধতি হওয়ায় সরাসরি সেমি—ফাইনালে উত্তীর্ণ হয় রামু। অলরাউন্টার নৈপূণ্যে ম্যাচ সেরার মুকুট ছিনিয়ে নেয় রামু উপজেলার সোহেল বড়ুয়া।
রামুঃ শামীম (গোলকিপার), ডিসাকো, সেবিয়ালা, দিদারুল আলম, মনজরুল ইসলাম পারভেজ, সুমন্ত বড়ুয়া (অধিনায়ক), জাহাঙ্গীর রিদুয়ান, ইমন, আবদুল্লাহ, দুর্জয়, সোহেল বড়ুয়া, দিদার—২, সাইফুল ইসলাম। টিম ম্যানেজার গিয়াস উদ্দিন ও কোচ শিপন বড়ুয়া।
চকরিয়াঃ জহির, জিয়া, রফিক, রিমন, ওবাহদু, নানা, শেখ কামারা, ভুট্টো, বিজয়, পলাশ, আরিফ, ইকবাল, আইয়ুব সালাহ উদ্দিন, ম্যানেজার জিয়াউল হক ও কোচ নুরুল আবছার।
টুর্নামেন্টের সার্বিক সহযোগিতায় রয়েছে শ্রিম্প হ্যাচারী এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (সেব) ও জেলা ক্রীড়া সংস্থা।
শনিবার (১৬ জানুয়ারি) টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় খেলায় মুখোমুখি হবে টেকনাফ বনাম মহেশখালী উপজেলা।

পাঠকের মতামত: