জাপানের রাজধানী টোকিওর প্রথম নারী গভর্নর নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস গড়লেন ইরিকো কোকে। ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)-এর সমর্থক ইরিকো কোকে প্রথম জীবনে ছিলেন টিভি উপস্থাপিকা। ২০০৭ সালের সংসদের উচ্চকক্ষের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর কোকে শিনজো আবে সরকারের পরিবেশমন্ত্রী হিসেবে জাপানের সংসদে প্রথম নারী মন্ত্রী হন। আর এবার গর্ভনরের ক্ষমতায় এসে তিনি আরও একবার তার জনপ্রিয়তা প্রমাণ করলেন।
রবিবার সারাদিন ১১ লাখ ভোটারের ভোট গ্রহণ শেষে স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৮ টায় ফল ঘোষণা করা হয়েছে।
রবিবার নির্বাচনে ইরিকো কোকে ছাড়াও আরও ২০ জন প্রার্থী প্রতিযোগিতা করেছেন। ক্ষমতাসীন জোটের পক্ষ থেকে প্রতিযোগিতায় ছিলেন সাবেক অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী হিরোয়া মাসুদা। এছাড়া, ইরিকোর কোকের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বর্ষীয়ান সাংবাদিক সুনতারো তরিগো, যিনি প্রধান বিরোধীদল ডেমোক্রেটিক পার্টির পক্ষে নির্বাচনে লড়েন।
নির্বাচন কমিশন জানায়, টোকিও গভর্নর নির্বাচনে এবারই ব্যাপক সংখ্যক প্রার্থী অংশগ্রহণ করেছেন। নির্বাচন অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৭ দিন প্রচারণায় প্রার্থীদের ভোটার আকর্ষণের লক্ষ্য ছিল ২০২০ সালে টোকিও অলিম্পিক শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার অঙ্গীকার। এছাড়া, বয়স্কদের আরও বেশি সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা।
কায়রো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক করা ৬৪ ইরিকো কোকে ১৯৫২ সালে দেশটির জাপানের কোবে প্রদেশে জন্ম গ্রহণ করেন।
নির্বাচিত হওয়ার পর কোকে টোকিওতে সাংবাদিকদের বলেন, এটি সত্যিই আনন্দের দিন। নারী নেতৃত্বকে টোকিওবাসী যে এভাবে গ্রহণ করবে তা আমি ভাবতে পারিনি। আমাকে নির্বাচিত করায় সবাইকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা।
জনগণের প্রতি দায়িত্ব যাতে সঠিকভাবে পালন করতে পারেন সেজন্য সবার সহযোগিতাও কামনা করেন তিনি।
তার এ বিজয়কে প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে তার নেতৃত্বে নারীর অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি এবং দলকে আরো শক্তিশালী করার নিয়ামক হিসেবে দেখছেন।
গত ১৫ জুন টোকিওর গভর্নর ইয়চি মাসুজুই বিদেশ ভ্রমণে বিধি বহিঃর্ভূতভাবে অর্থব্যয়ের অভিযোগ মাথায় নিয়ে পদত্যাগ করেন। ২০১৪ সালে টোকিও গভর্নর (মেয়র) হওয়ার পর ইয়চি মাসুজুই সরকারি কোষাগার থেকে ২০০ মিলিয়ন ইয়েন ব্যয় করে ৯ বার বিদেশ ভ্রমণ করেন।
আর এ নিয়ে গত এপ্রিলে তিনি সংসদ সদস্যদের তোপের মুখে পড়েন। সোমবার সংসদে এ নিয়ে অনাস্থা জ্ঞাপন করেন সাত সংসদ সদস্য। যেখানে বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা তার পদত্যাগের জোরালো দাবি তোলার পর তিনি পদত্যাগ করেন। আর ওই পদত্যাগের পরই কার্যত টোকিও শহরের প্রশাসনের শীর্ষ পদটি শূন্য হয়।
সূত্র: এএফপি।
পাঠকের মতামত: